জুমবাংলা ডেস্ক : চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলাকেই তাদের মূল লক্ষ্য বলে মনে করছেন নবনিযুক্ত মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা। তারা বলেছেন, এ জন্য তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন ও সহজলভ্য করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বেকারত্ব দূরীকরণের মাধ্যমে তরুণ সমাজকে স্মার্ট জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্যোক্তাও গড়ে তোলা হবে।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে জনগণের জীবনযাত্রায় স্বস্তি এনে দেওয়াকেও সরকারের লক্ষ্য জানিয়ে মন্ত্রিসভার সদস্যরা বলেন, বৈশ্বিক সংকট সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও ক্ষতিকর প্রভাব বয়ে এনেছে। সেটাকে মোকাবিলা করেই মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন করা হবে। সুশাসন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আগামী দিনে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশের পথে এগিয়ে নেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরা গত বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে শপথ নেন। ৩৭ সদস্যের নতুন এই মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও ২৫ জন পূর্ণ মন্ত্রী এবং ১১ জন প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন। শপথ গ্রহণের এক দিন পর গতকাল শুক্রবার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন তারা। আগামীকাল রবিবার মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের আনুষ্ঠানিকভাবে নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার কথা রয়েছে। তার আগে গণমাধ্যমকে দেওয়া পৃথক প্রতিক্রিয়ায় নিজেদের আগামী দিনের লক্ষ্য ও কর্মতৎপরতার বিষয়গুলো তুলে ধরেন তারা।
নতুন সরকারের বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে স্মার্ট বস্ত্র ও পাট খাত তৈরিতে দ্রুত পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের কাজ করব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ‘রূপকল্প-২০৪১’ সামনে রেখে এবং নতুন উদ্ভাবনকে কাজে লাগিয়ে এই খাতের আধুনিকায়নে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এসবের মাধ্যমে দেশের বিনিয়োগ সম্প্রসারণ, দক্ষ মানবসম্পদ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং রপ্তানি বৃদ্ধিতে নিরলসভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাব।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার প্রথম চ্যালেঞ্জ হবে নির্বাচনের আগে ঘোষিত ইশতেহার বাস্তবায়ন করা। যেখানে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলাকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
নবনিযুক্ত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশ দায়ী নয়। তার পরও বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর অন্যতম। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী জনমত গড়তে কাজ করব। নানাবিধ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত সমস্যা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ দেশের জনগণকে বাসযোগ্য পরিবেশ ও উন্নত জীবন দিতে সচেষ্ট থাকব।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণের জন্য তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের যে অঙ্গীকার পূরণে তিনি কাজ করছেন, সেটার বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীকে সহযোগিতা করে যাওয়াই হবে আমার কাজ।
যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন বলেন, যুব ও ক্রীড়ার উন্নয়নে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করব। বিশেষ করে যুবকদের সঠিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানে উদ্বুদ্ধ করার কাজে সচেষ্ট থাকব। বিসিবি সভাপতি হিসেবে এতদিন দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে কাজ করেছি। এখন ক্রীড়ামন্ত্রী হিসেবে ক্রিকেট ছাড়াও সব ধরনের খেলাধুলার উন্নয়নে সমানভাবে মনোযোগী থাকব।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ইশতেহারের বাস্তবায়নে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বেকারত্ব দূরীকরণের মাধ্যমে দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তোলা এবং নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরিকেই আমরা প্রাধান্য দেব। সেসঙ্গে স্মার্ট ও মানসম্মত ব্যবস্থাপনাও গড়ে তোলা হবে। আর বর্তমান যে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু অর্থাৎ দ্রবমূল্য নিয়ন্ত্রণেও আমরা কাজ করব।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা যে আমাকে তরুণ বয়সে তিন-তিনবার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি আস্থা, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে তাঁর মর্যাদা রাখতে চাই। আইসিটি সেক্টরে ১০ লাখ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হলেও কিছু লোক এর সুযোগ নিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে। যারা বিকৃত ও অসত্য তথ্যের উপস্থাপন এবং গুজব সৃষ্টির মাধ্যমে সমাজ ও রাজনীতিতে সমস্যা তৈরি করে। এটা নিয়ে আমি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছি। সেই কারণে আমার আলাদা একটা কমিটমেন্ট আছে। এখন এই ক্ষেত্রে আরও বড় পরিসরে কাজ করার চেষ্টা করব। মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নতুন কিছুও করার চেষ্টা করব।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।