জুমবাংলা ডেস্ক : অবৈধ খোঁয়াড় মালিকের দাবিকৃত অন্যায্য অর্থ পরিশোধ করতে পারেননি মাগুরা সদর উপজেলার ধর্মদাহ গ্রামের কৃষক মোসলেম শেখ। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রভাবশালী খোঁয়াড় মালিক গলাধাক্কা দেয়ার পাশাপাশি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন তাকে। আর এ অপমানে ষাটোর্ধ বৃদ্ধ মোসলেম শেখ বাড়ি ফিরে ফাঁস নিয়েছেন।
মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের নিচতলার বারান্দায় অসাড় হয়ে পড়ে আছেন মোসলেম শেখ (৬৫)। পাশে স্ত্রী আমেনা প্রহর গুনছেন। হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আমেন খাতুন অভিযোগ করেন, ক্ষেতের ফসল নষ্ট করার অভিযোগে তারই প্রতিবেশী নজরুল শেখ গত ১০ মার্চ দুপুরে দুটি বাচ্চাসহ তাদের একটি রামছাগল কালাম শেখের খোঁয়াড়ে দিয়ে আসেন। খবর পেয়ে তার স্বামী মোসলেম শেখ ছাগল ফিরিয়ে আনতে গেলে কালাম শেখ ১ হাজার টাকা দাবি করেন। বাধ্য হয়ে গ্রামের কয়েকজনের কাছ থেকে ৩শ টাকা ধার করে আবার সেখানে যান। কিন্তু পুরো টাকা নিয়ে যেতে না পারায় খোঁয়াড় মালিক তার স্বামীকে গলাধাক্কা দিয়ে মারধর করে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এ অপমানে সেখান থেকে ফিরে মোসলেম শেখ বাড়ির পেছনে বাগানের মধ্যে গলায় ফাঁস নেন।
প্রতিবেশীরা এ ঘটনা জানতে পেরে দ্রুত তাকে উদ্ধারের পর মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করেন। শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ওই দিনই তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে গেলে তারাও রেফার্ড করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠায়। কিন্তু আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় আমেনা খাতুন স্বামীকে নিয়ে ফিরে এসেছেন মাগুরায়। বর্তমানে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের বারান্দায় মৃত্যুর প্রহর গুনছেন।
এ বিষয়ে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সফিউর রহমান বলেন, তার শারীরিক অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। এখন মহান সৃষ্টিকর্তা যদি তাকে রক্ষা করেন।
এদিকে কালাম শেখের খোঁয়াড় কার্যক্রমের বিষয়ে খোঁজ নিতে স্থানীয় শত্রুজিতপুর ইউনিয়ন পরিষদে গেলে দায়িত্বরত সচিব আবদুস সালাম জানান, খোঁয়াড় নিয়ে অনেক বাদ-বিবাদের ঘটনা ঘটায় ওই গ্রামে কাউকে কোনো ইজারা দেয়া হয়নি। অথচ অবৈধভাবে কালাম শেখসহ একটি সংঘবদ্ধ চক্র অন্যের গবাদিপশু আটকে রেখে জোরপূর্বক ইচ্ছামাফিক অর্থ আদায় করে যাচ্ছে বলে গ্রামবাসী অভিযোগ করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে ধর্মদাহ গ্রামের তথাকথিত সরকারি অনুমোদনবিহীন খোঁয়াড় মালিক কালাম শেখের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোসলেম শেখকে লাঞ্ছিত ও মারধর করার বিষয়টি অস্বীকার করেন। আর সরকারি অনুমোদন না থাকলেও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বারদের সহযোগিতায় খোঁয়াড়ের কার্যক্রম চলছে বলে তিনি জানান।
তবে তার বক্তব্য অস্বীকার করেছেন শত্রুজিতপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সনজিত বিশ্বাস।
এদিকে সহায়-সম্বলহীন আমেনা খাতুন স্বামীর এমন পরিস্থিতির বিচার চেয়ে ১৭ মার্চ মাগুরা সদর থানায় একটি অভিযোগ দিলেও পুলিশি তৎপরতা না থাকায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
মাগুরা সদর থানার ওসি জয়নাল আবেদিন আমেনা খাতুনের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তবে এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।