জুমবাংলা ডেস্ক: এবার নিজ দলের এক নেতাকে হুমকির পর মারধর করেছেন রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমি। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের নিজ হোস্টেলে এক ছাত্রকে রাতভর নির্যাতনের আলোচনার রেশ না কাটতেই এই ঘটনায় আবারো তিনি আলোচনায় উঠে এসেছেন।
মারধরের শিকার ছাত্রলীগ নেতার নাম সবুজ। তিনি বাগমারা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী এবং রাজশাহী মহানগরীর গ্যালাক্সি ম্যাট ইনস্টিটিউটের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
অবশ্যকে সবুজকে হুমকি ও মারধরের বিষয়টি স্বীকার করেছেন অমি।
সবুজকে মারধর এবং ফোনে গালিগালাজ দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেননি জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অমি। তিনি বলেন, সবুজ ফেসবুকে একটি উল্টাপাল্টা পোস্ট দিয়েছে। এ কারণে আমার মাথা ঠিক ছিল না। তাকে গালিগালাজ করে ফেলেছি। বিমান বন্দরে সবুজকে দেখার পর আমি ঠিক থাকতে পারিনি। তাকে কয়েকটি চড়-থাপ্পড় দিয়েছি। তাকে শাসন করেছি।
জেলা ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র জানায়, বাগমারার ছাত্রলীগ নেতা সবুজ সম্প্রতি ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। এ পোস্টটি জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অমির নজর আসে। এরপর অমি পোস্টের বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে ফোনে মোহনপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে আলোচনা করেন। অমি এ সময় রাজ্জাককে বলেন, সবুজ যেন তাকে ফোন দেয়। রাজ্জাক এরপর সবুজকে অমির কাছে ফোন দিতে বলেন। সবুজ রাত ১২টার দিকে অমিকে ফোন দেন।
এ বিষয়ে সবুজ বলেন, আমি ফোন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অমি ফোন ধরেন। এরপর তিনি আমাকে গালি দিতে থাকেন। জেলা ছাত্রলীগের একজন শীর্ষ নেতা যে ভাষায় কথা বলেছেন, এটি কল্পনাও করা যায় না। ফোনালাপের অধিকাংশ সময় তিনি আমার বাবা-মার নাম ধরে গালি দেন। ফোনে কথা বলার একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘তোর কলিজা টেনে বের করে ফেলব। ’
সবুজ আরো বলেন, এ ঘটনার পর শনিবার সকালে রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের এমপি প্রকৌশলী এনামুল হককে বিমান বন্দরে অর্ভ্যথনা জানানোর জন্য যাই। এ সময় সেখানে ছাত্রলীগের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী এমপির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। সেখানে আমাকে সামনে পেয়েই অমি আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। এ সময় তিনি আমার দুই কানে বেশ কয়েকটি থাপ্পড় মারেন। তার থাপ্পড়ের কারণে আমি এখন বাম কানে কিছু শুনতে পাচ্ছি না। বিষয়টি আমি ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের জানিয়েছি। আমাকে মারধর এবং বাবা-মাকে গালিগালাজের বিচার দাবি করছি। আমি বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতা এবং যেকোনো সময় হামলার আশঙ্কা করছি।
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিবুল ইসলাম রানা বলেন, মারধর ও গালিগালাজের বিষয়টি শুনেছি। ছাত্রলীগের দায়িত্বশীল পদে থেকে কোনো নেতাকর্মীর শরীরে হাত দেওয়া ঠিক না। আমরা কর্মীদের বুকে টেনে নিয়ে রাজনীতি করব। কেন তাদেরকে মারধর করব। সাধারণ সম্পাদক অমির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, প্রমাণিত হলে বিষয়টি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে অবগত করা হবে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।
গত ২৬ জুলাই জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমি রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের শহিদ মুক্তিযোদ্ধা কাজী নুরুন্নবী হোস্টেলে মিলন হোসেন (১৯) নামে এক এইচএসসি শিক্ষার্থীকে রাতভর নির্যাতন করেন। জেলার পুঠিয়া উপজেলার শিবপুরহাটের আলমগীর হোসেনের ছেলে আহত মিলন হাসপাতালে কয়েকদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর সুস্থ হন। মিলন ছাত্রলীগ নেতা অমির ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) হতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে তাকে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগে জানা গেছে। এ ছাড়া ছাত্রলীগ নেতা অমির বিরুদ্ধে কয়েকজনের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু টাকা নিয়ে চাকরি না দেওয়ার যথেষ্ট প্রমাণ থাকার পরেও ভুক্তভোগীরা ভয়ে অমির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।
সূত্র: কালের কন্ঠ
প্রবাসীদের জন্য সুখবর, বিনা পয়সায় শাহজালাল বিমানবন্দরে হেল্প ডেস্ক
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।