জুমবাংলা ডেস্ক : রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক ব্যক্তিকে মারধর করে ১৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) তিন শিক্ষার্থী। এ সময় ছিনতাইকারীদের একজন ভুক্তভোগীর বাবার নাম্বারে মিসড কল দেন। পরে ভুক্তভোগী জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) ফোন দিলে শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন আসেন।
গতকাল বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে শাহবাগ জাদুঘরের সামনে থেকে দুই শিক্ষার্থীকে পাঁচ হাজার টাকাসহ আটক করা হয়। পরে ভুক্তভোগীর মামলার প্রেক্ষিতে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। আরও একজন পালিয়ে যান। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় উদ্যানের স্মৃতিস্তম্ভের পাশে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তাররা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী নুর উদ্দীন আহমেদ এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মুনতাসীর। তারা দুজনই ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। নুর উদ্দীন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক এবং আবদুল্লাহ আল মুনতাসীর শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক ছাত্রলীগের সহসভাপতি। তারা ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে নিজেদের পরিচয় দেন।
অপরদিকে ভুক্তভোগীর নাম জুবায়ের আহমেদ। তিনি পল্টন সিটি হার্ট মার্কেটের রংধনু ফ্যাশন নামক একটি দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করেন। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, তিনি পরিচিত একজনের মাধ্যমে ব্যবহৃত এক মোটরসাইকেল কিনতে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে ঢাবি ক্যাম্পাসে এসেছিলেন। তবে মোটরসাইকেল নিয়ে আসতে দেরি হওয়ায় তিনি তিনি উদ্যানে ঘুরতে যান।
তিনি উল্লেখ করেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উদ্যানের গ্লাস টাওয়ারের (স্মৃতিস্তম্ভ) পশ্চিম পার্শ্বে যাওয়ামাত্র তিনজন ঘিরে ধরে এবং বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করে যা আছে সব দিয়ে দিতে বলে।
এজাহারে তিনি বলেন, আমি দিতে অস্বীকার করলে তারা আমার মাথায় ও মুখে কিলঘুষি দিয়ে আহত করে। আমার প্যান্টের পেছনের ডান পকেটে রাখা মানিব্যাগ থেকে ১৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় মুনতাসীর তার মোবাইল দিয়ে আমার ছবি তোলে এবং আমার বাবার মোবাইল নম্বর নিয়ে তার মোবাইল নম্বর থেকে আমার বাবাকে ফোন করে। কিন্তু আমার বাবার সঙ্গে কথা না বলে কেটে দেয়।
জোবায়ের এজাহারে উল্লেখ করেন, তারা আমাকে চড় থাপ্পড় মেরে চলে যাওয়ার সময় তাদের পা ধরে টাকা ফেরত চাইলে তারা পাঁচ হাজার টাকা আমাকে ফেরত দিয়ে দ্রুত চলে যায়। ৯৯৯-এ ফোন দিলে শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন এসে বিস্তারিত শুনেন।
শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ভুক্তভোগীদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তাকে আরও টাকা দেয়ার লোভ দেখানো হয়। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তারা শাহবাগ জাদুঘরের সামনে এলে তাদের আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। এ সময় তাদের দুইজনের প্যান্টের পকেট থেকে আড়াই হাজার টাকা করে মোট পাঁচ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর মোহাম্মদ জানান, ছিনতাইয়ের শিকার ওই ব্যক্তির লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে আটক দুই শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় রাজিব নামের আরও এক শিক্ষার্থী জড়িত। পালিয়ে যাওয়ায় তাকে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।