জুমবাংলা ডেস্ক : যশোরে পাঁচ বছরের ছেলের মৃত্যুর কিছু সময় পর আরেক ছেলে সন্তান জন্ম দিলেন বাসন্তি বিশ্বাস। সোমবার রাতে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। তবে সদ্য ভূমিষ্ট ছেলে কোল জুড়ে থাকলেও হারানো ছেলের ব্যথায় চোখের জ্বলে বালিশ ভিজছে বাসন্তির।
বাসন্তি শার্শা উপজেলার লক্ষণপুর খালপাড়া এলাকার জুগল বিশ্বাসের স্ত্রী।
বাসন্তীর শ্বশুর গোসত বিশ্বাস জানান, রবিবার বেলা ১১টার দিকে বাড়ির পাশের আম গাছ থেকে পড়ে ডান হাত ভেঙে যায় সূর্য বিশ্বাসের (৫)। বাগআঁচড়ার একটি ক্লিনিক থেকে হাত ব্যান্ডেজ করে তাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। রবিবার বিকালে সূর্যের খেচুনি উঠলে রাত ১২টার দিকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আনা হয়। এসময় জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে ভর্তি করে চিকিৎসার জন্য শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেন। সেখানে চিকিৎসক ডায়রিয়ার লক্ষণ দেখে সূর্যকে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে স্থানান্তর করেন।
সোমবার সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সূর্যকে মৃত ঘোষণা করেন ইন্টার্ন চিকিৎসক মারুফা আক্তার।
স্বজনরা আরও জানান, সূর্যের মরদেহ নিয়ে তার মা বাসন্তি বিশ্বাসসহ অন্য স্বজনরা বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে ওয়ার্ডের নিচে আসেন। এসময় অন্তঃসত্ত্বা মা বাসন্তির প্রসব যন্ত্রনা শুরু হয়। অবস্থা গুরুতর দেখে তাকে নেয়া হয় জরুরি বিভাগে। চিকিৎসক তাকে ভর্তি করে পাঠিয়ে দেন প্রসূতি ওয়ার্ডে। রাত পৌনে ৮টার দিকে ছেলে সন্তান প্রসব করেন বাসন্তি বিশ্বাস।
প্রসূতি ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, চুপচাপ শুয়ে আছেন বাসন্তি। মুখে নেই হাসি। শুধু চোখের জলে বালিশ ভিজে যাচ্ছে। অনেক কষ্টের পর যখন নবজাতককে বের করে মায়ের বুকে দেয়া হয়, তখন মা সব ব্যথার কথা ভুলে যান। সন্তানকে দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে হাসি দেন। কিন্তু উল্টোটা হয়েছে বাসন্তির জীবনে। কেননা সন্তান প্রসবের কিছু সময় আগেই তিনি আরেক সন্তান সূর্যকে হারিয়েছে। দীর্ঘ পাঁচ বছর যাকে লালন পালন করেছেন। তাই সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানকে পেয়েও তার মুখে হাসি নেই। ভুলতে পারছেন না হারানো ছেলেকে ঘিরে জীবনের স্মৃতিগুলো।
বাসন্তি বিশ্বাস কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, উফ! মায়ের কাছে সন্তানের মৃত্যু যে কী কষ্টের তা বলে বোঝানো যায় না। কোন কিছুতে ভুলার নয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।