আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এক কথায় জাপান সরকার দেশটিতে জন্মহার বাড়াতে সব রকম চেষ্টাই করছে। কিন্তু তাতে লাভ যে হচ্ছে তেমটি কারো চোখে পড়ছে না। সরকারের দেয়া প্যাকেজ কেউ গ্রহণ করছে না। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা। তারা বিয়ে কিংবা সন্তান নিতে রাজি নয়। আর এতে দিন দিন উদ্বেগ বাড়ছে জাপান সরকারের। কারণ যে হারে জনসংখ্যা কমছে তাতে উদ্বিগ্ন হওয়াই কথা। শিক্ষার্থী সংকটে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে স্কুল। দেখা দিয়েছে জাপানে জনবল সংকট। অন্যদিকে বিদেশী শ্রমিকের উপর নির্ভরতা বাড়ছে ক্রমাগত।
এদিকে সন্তান জন্মদানে জনগণকে উৎসাহিত করতে নজীরবিহীন প্যাকেজ ঘোষণা করেছে জাপান সরকার। সন্তান জন্মদান এবং লালন-পালন বাবদ দেশটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ প্রণোদনা দিয়েছে ফুমিও কিশিদা প্রশাসন। খবর জাপান টাইমসের।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) শিশু বিষয়ক এই প্যাকেজের অনুমোদন দিয়েছে দেশটির মন্ত্রিসভা। যাতে সন্তান জন্ম থেকে শুরু করে নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত লেখাপড়ার একটা বড় ব্যয়ভার বহন করবে সরকার। ২০৩০ সাল নাগাদ এ প্রণোদনা দ্বিগুণ করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা।
২০২২ সালে জাপানে জন্ম নিয়েছে মাত্র ৭ লাখ ৭০ হাজার ৭৪৭ জন শিশু। জন্মহার অনুযায়ী যা দেশটির ইতিহাসে সর্বনিম্ন। অথচ ৫০ বছর আগে অর্থাৎ ৭০ এর দশকেও এ সংখ্যা ছিল ২০ লাখের বেশি।
মূলত জীবন যাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের কারণে বিয়ে ও সন্তান জন্মদানে ব্যাপকভাবে অনিহা তৈরি হয়েছে জাপানিদের মধ্যে। ফলে এরইমধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ জনসংখ্যার দেশে পরিণত হয়েছে জাপান। বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই উদ্বেগ জানিয়ে আসছে দেশটির নীতিনির্ধারকরা।
এদিকে, আগামী তিন বছরের জন্য শিশুর জন্ম ও পালনসংক্রান্ত বার্ষিক বাজেট সাড়ে তিন ট্রিলিয়ন ইয়েনে উত্তীর্ণ করা হয়েছে। সন্তান জন্মদান, লালন-পালন ও শিক্ষা খাতে নানা আর্থিক প্রনোদনা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এছাড়া চাইল্ড কেয়ার ছুটিতে থাকাকালে বাবা-মাদের দেয়া হবে বিশেষ ভাতা। রয়েছে সাপ্তাহিক ছুটি বাড়ানোর পরিকল্পনাও।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেন, নিম্নমুখী জন্মহার জাপানের সমাজব্যবস্থা ও অর্থনীতির জন্য বড় উদ্বেগের কারণ। বিষয়টি কোনোভাবেই অগ্রাহ্য করার সুযোগ নেই। ২০৩০ এর দশকের শুরুর দিকেই উল্লেখযোগ্য হারে কমতে শুরু করবে তরুণদের সংখ্য। তাই সন্তান জন্মদানের হার বাড়ানোর এটিই শেষ সুযোগ। ২০৩০ সালের শুরুর দিকে এই প্রনোদনা দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।
একদিকে নিম্ন জন্মহার, অপরদিকে উন্নত স্বাস্থ্যব্যবস্থার কারণে বেড়েছে গড় আয়ু। তাই তৃতীয় বৃহত্তর অর্থনীতির দেশটির আর্থ-সামাজিক অবস্থা হুমকির মুখে, এমন শঙ্কা বিশ্লেষকদের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।