আন্তর্জাতিক অর্থনীতি : জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ২০৩০ সালের মধ্যে সবুজ জ্বালানিতে এক লাখেরও বেশি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে যুক্তরাজ্যকে। ন্যাশনাল গ্রিড সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ সতর্কবাণী উচ্চারণ করে। খবর গার্ডিয়ান।
ন্যাশনাল গ্রিডের প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমিয়ে শূন্যে নামিয়ে আনতে ২০৩০ সালের মধ্যে সবুজ জ্বালানি শিল্পে ১ লাখ ২০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ, গ্রিন হিটিং সিস্টেমস ও বৈদ্যুতিক গাড়িভিত্তিক নিরাপদ জ্বালানি ব্যবস্থা চালু হলে ২০৫০ সালের মধ্যে চার লাখ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি প্রয়োজনীয় হয়ে পড়বে।
পরবর্তী ১০ বছরে সবুজ জ্বালানি খাতে কর্মী স্বল্পতায় যুক্তরাজ্যের জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা পূরণে এ খাতে নতুন কর্মী নিয়োগ জরুরি হয়ে পড়েছে। প্রতিবেদনটিতে সতর্ক করে বলা হচ্ছে, জ্বালানি খাতে এক-পঞ্চমাংশ কর্মীই ২০৩০ সালের মধ্যে অবসরে যাচ্ছেন। অন্যান্য খাত থেকে তীব্র প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হচ্ছে যুক্তরাজ্যের জ্বালানি খাত। এছাড়া বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিতে দক্ষতাসম্পন্ন তরুণদের সরবরাহও কম।
ন্যাশনাল গ্রিডের নির্বাহী পরিচালক নিকোলা শ বলেন, চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করে এখনই এ খাতের ঘুরে দাঁড়ানোর সময়। যুক্তরাজ্যের উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দক্ষতাসম্পন্ন কর্মী নিয়োগ করে দীর্ঘদিনের সংকট মোকাবেলা করতে হবে।
নিঃসরণ একেবারে শূন্যের কোটায় নামানোর পাশাপাশি কার্বন আটকানোর মাধ্যমে দূষণ ঠেকানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অফশোর বায়ুবিদ্যুৎ প্রযুক্তি, নিরাপদ উষ্ণতা পরিকল্পনা, বৈদ্যুতিক যানবাহন ও কার্বন আটকানোর প্রযুক্তিতে বড় আকারের বিনিয়োগ আবশ্যক।
বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় সদ্য পাস স্নাতকদের এ খাতে উৎসাহিত করতে জ্বালানি শিল্পকে ভূমিকা পালন করতে হবে।
ইউগভের পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের সব অঞ্চলে সব বয়সের মানুষ এমন কর্মসংস্থান খুঁজছে, যার পরিবেশগত লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। প্রতি ১০ নারীর মধ্যে আটজন এবং প্রতি ১০ পুরুষের মধ্যে সাতজন বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় তারা ভূমিকা রাখতে চান। যুক্তরাজ্যের অর্ধেকেরও বেশি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ এমন প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে আগ্রহী, যা দেশটির জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সহায়তা করছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সবুজ জ্বালানিতে দেশটির সব অঞ্চলের ব্যবসায়ী, প্রকৌশলী ও অন্য বিশেষজ্ঞদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। ন্যাশনাল গ্রিড বলছে, সবুজ জ্বালানি খাতের এক-চতুর্থাংশ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে যুক্তরাজ্যের উত্তরাঞ্চলে। ব্লাইথ উপকূলে একটি অফশোর বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ জ্বালানি প্রকল্পগুলো নির্মাণে ২১ হাজারেরও বেশি নতুন কর্মী আবশ্যক।
এদিকে ইয়র্কশায়ার ও হাম্বার অঞ্চলে কার্বন আটকানো ও মজুদ প্রক্রিয়া চালু হলে ১৭ হাজার নতুন কর্মী প্রয়োজন পড়বে। পূর্ব ইংল্যান্ডের অন্যান্য অফশোর বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোয় আরো ২৮ হাজার কর্মী লাগবে।
স্কটল্যান্ডে ২০৫০ সালের মধ্যে সবুজ জ্বালানিতে ৪৮ হাজারেরও বেশি কর্মী লাগবে। ওয়ালেসে লাগবে ২৫ হাজারের মতো কর্মী।
যুক্তরাজ্যের ব্যবসা, জ্বালানি ও সবুজ প্রবৃদ্ধিবিষয়ক মন্ত্রী কেওয়াসি কেওয়ার্টেং বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় শুধু গ্রহটিই সুরক্ষিত হবে না, বরং তা আমাদের অর্থনীতিকে ব্যাপকভাবে চাঙ্গা করবে। আমরা যখন ২০৫০ সালের মধ্যে জিরো কার্বন লক্ষ্যমাত্রার দিকে এগোচ্ছি তখন যুক্তরাজ্যের সামনে বিশ্বমানের নবায়নযোগ্য খাত ও অন্যান্য শিল্পে নতুন ২০ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।