স্পোর্টস ডেস্ক : টি-২০ দল নিয়ে নতুন করে ভাবছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড-বিসিবি। বোর্ডের কর্তারা অনেক দিন থেকেই টি-২০’র জন্য স্পেশালিষ্টদের নিয়ে একটি দল গঠনের কথা বলে আসছেন। এজন্য তরুণ ক্রিকেটারদের পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করে দিয়েছে তারা। এরই ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে আফগানিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজেও। সিরিজের চট্টগ্রাম পর্ব শুরু হওয়ার ঠিক আগে হঠাৎ পাঁচ ক্রিকেটারকে নেওয়া হয় বাংলাদেশ দলে। যেখানে একটি নাম সম্ভবত সবচেয়ে বেশি অবাক করেছে সবাইকে। তিনি হলেন আমিনুল ইসলাম বিপ্লব।
দেশের ক্রিকেটে নামটি একেবারেই আনকোরা। সাম্প্রতিক সময়ে চোখে পড়ার মতো কোনো ম্যাচও খেলেননি। এমনকি আলোচনাতেও ছিলেন না। তারপরেও তাকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের তৃতীয় ম্যাচের স্কোয়াডে রাখা হয়। শুধু স্কোয়াডেই নয়, একাদশেও সুযোগ পেয়ে যান বিপ্লব। মূলত, একজন লেগস্পিনারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেই বিপ্লবকে দলে নিয়েছেন নির্বাচকরা। কিন্তু অবাক করার মতো বিষয় হলো, আগে কোথাও তিনি বিশেষজ্ঞ লেগস্পিনার হিসেবে খেলেননি। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে খেলেছেন বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে। তবে জাতীয় দলে তিনি এসেছেন লেগস্পিনিং অলরাউন্ডার হিসেবে।
টি-২০ ক্রিকেটে বিপ্লব বাংলাদেশের ৬৫ নম্বর ক্রিকেটার। এখনো পর্যন্ত প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলা হয়নি তার। সাকুল্যে ১৯টি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলেছেন। এর বাইরে ঘরোয়া টি-২০তে মাত্র দুটি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে তার। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে টপ অর্ডারে ব্যাট করে মোটামুটি সফলতা পেয়েছেন। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ দলের সঙ্গে ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের (সিবিএ) সিরিজে ব্যাট হাতে দারুণ করেছিলেন বিপ্লব। সিরিজে তিনটি সেঞ্চুরি করার পাশাপাশি শেষ ম্যাচে ৯৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। এরপর অনূর্ধ্ব-১৮ ক্রিকেটে ৭ ম্যাচে ৫৫০ রানের পাশাপাশি ১৬টি উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড়ও হয়েছিলেন।
কিন্তু বয়সভিত্তিক ক্রিকেট পার করার পর বল করার তেমন সুযোগ মেলেনি বিপ্লবের। লিস্ট ‘এ’ তেও সুবিধা করতে পারেননি বল হাতে। এখানে ১৯ ম্যাচে তার উইকেট মাত্র তিনটি। তারপরেও তাকে জাতীয় দলে নেয়া হয়েছে বোলিংয়ের জন্যই। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই হন্যে হয়ে একজন লেগ স্পিনার খুঁজছিলেন জাতীয় দলের প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো। আর হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের কোচ সাইমন হেলমুট আগে থেকেই চোখে চোখে রেখেছিলেন বিপ্লবকে। জানা গেছে, হেলমুটের পরামর্শেই বিপ্লব এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে।
এ ব্যাপারে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু জানিয়েছেন, হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের সঙ্গে থেকে বিপ্লবের বোলিং বেশ ধারালো হয়েছে। কোচ এবং অধিনায়ক দলে একজন লেগস্পিনার চেয়েছিলেন। তাদের প্রত্যাশা পূরণের জন্যই বিপ্লবকে দেয়া হয়েছে। আর যেহেতু ব্যাটিংটাও ভালোই করেন বিপ্লব। তাই তাকে জাতীয় নেয়ার সমীকরণটা গোছালো হয়ে গেছে। বিপ্লবের বাড়ি শরিয়তপুরে। বাবা আব্দুল কুদ্দুস সিএনজি অটোরিকশা চালক। ছেলের বড় ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নে বাবারও সায় ছিলো। তাই তো ছোটবেলায় বিপ্লবকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন নামি কোচ ওয়াহিদুল গনির একাডেমিতে।
এই ওয়াহিদুল গণি মোহাম্মদ আশরাফুলেরও গুরু। কোচের তত্ত্বাবধানে ২০০৮ সালে পল্লীমা ক্রিকেট একাডেমিতে ক্রিকেট দীক্ষা শুরু হয় বিপ্লবের। ২০১২ সালে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিকেএসপিতে ভর্তি হন। এরপর বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে পা রাখেন, খেলেন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলে। ঘরোয়া ক্রিকেটে চোখে পড়ার মতো কিছু করে না আসলেও জাতীয় দলে তার অভিষেকটা হয়েছে দারুণ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নিজের কোটার চার ওভার বল করে দিয়েছেন ১৮ রান। তুলে নিয়েছেন ২টি উইকেট।
সূত্র: সময় নিউজ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।