আন্তর্জাতিক ডেস্ক: করোনা সংক্রমণের বর্তমান হার অব্যাহত থাকলে সেপ্টেম্বর থেকে জার্মানির পরিস্থিতির চরম অবনতির আশঙ্কা করছেন জার্মান স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্পান৷ এদিকে সরকার জাতীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে৷ খবর রয়টার্স ও ডিপিএ’র।
ইউরোপের বাকি অনেক অংশের তুলনায় বর্তমানে জার্মানিতে করোনা সংক্রমণের হার যথেষ্ট কম, যদিও গত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে সেই হার বেড়েই চলেছে৷ বদ্ধ জায়গায় মাস্ক পরার মতো নিয়মের ক্ষেত্রে কোনো বিরতি না হওয়ায় জার্মানির পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন৷
বর্তমান সাফল্য সত্ত্বেও অদূর ভবিষ্যতেই করোনা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতির আশঙ্কা করছেন জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান৷ তার মতে, প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে সংক্রমণের সাপ্তাহিক গড় হার বর্তমানে মাত্র ১১ থাকলেও অংকের নিয়মে সেপ্টেম্বর মাসে তা ৪০০ পেরিয়ে যেতে পারে এবং অক্টোবর মাসে ৮০০ ছুঁতে পারে৷ কারণ বর্তমানে প্রতি ১২ দিনে সংক্রমণের হার দ্বিগুণ হচ্ছে৷ স্পান জার্মানির মানুষের উদ্দেশ্যে মাস্ক পরা সহ অন্যান্য বিধিনিয়ম মেনে চলার আবেদন করেন এবং নিয়মিত করোনা পরীক্ষা করাতে বলেন৷ যারা এখনো করোনা টিকা নেন নি, তাদের উদ্দেশ্যে দ্রুত সেই সিদ্ধান্ত নেবার আবেদন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, সেপ্টেম্বরের পর থেকে জার্মানির পরিস্থিতি কেমন হবে, সাধারণ মানুষকে এখনই সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ তার উপর হাসপাতাল ও হাসপাতালের ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটের অবস্খা নির্ভর করবে৷
জার্মানির প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ করোনা টিকার প্রথম ডোজ এবং প্রায় ৪৭ শতাংশ প্রয়োজনীয় সব ডোজ পেয়ে গেলেও টিকাদান কর্মসূচির গতি কিছুটা কমে গেছে৷ চরম ছোঁয়াচে ডেল্টা সংস্করণের মোকাবিলা করতে কমপক্ষে ৮৫ শতাংশ মানুষের টিকা নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে জার্মানিতে প্রবেশ করলে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনের নিয়মের মেয়াদ ১০ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছে জার্মান মন্ত্রিসভা৷
ভবিষ্যতে মহামারির মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে জার্মানির সরকার এক দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও অনুমোদন করেছে৷ এর আওতায় ১০০ কোটি সার্জিকাল মাস্ক, ২৪ কোটি হেভি ডিউটি রেস্পিরেটর মাস্ক ও সুরক্ষার অন্যান্য সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা হবে৷ ভবিষ্যতে মহামারি বা যুদ্ধের মতো সম্ভাব্য সংকটের মোবাকিলা করতে এই জাতীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা পরিকল্পনা কার্যকর করা হবে৷ দেশের মধ্যেই টিকা উৎপাদনের ক্ষমতা আরও বাড়ানোর লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে৷
গোটা বিশ্বে সরবরাহের শৃঙ্খলে বিঘ্ন ঘটলেও জার্মানি যাতে আবার অসহায় না হয়ে পড়ে, তা নিশ্চিত করতে দীর্ঘমেয়াদী প্রস্তুতির পথে এগোচ্ছে জার্মানি৷ করোনা সংকটের সূচনা পর্ব থেকে শিক্ষা নিয়ে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান৷ তার মতে, এমন প্রস্তুতির কারণে সরকারের ব্যয়ভার বাড়লেও চরম পরিস্থিতিতে অভাব মেটাতে যে ব্যয় হয়, তার তুলনায় সেই ধাক্কা অনেক কম৷
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।