আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউরোপের আর সব দেশের মতো জার্মানিতেও আছে অসংখ্য হ্রদ৷ সংখ্যাটা নেহাত কম নয়, ১৫ থেকে ৩০ হাজার হতে পারে৷ জার্মানির উত্তর থেকে দক্ষিণে মুগ্ধতা ছড়ানো কিছু হ্রদ হাতছানি দিয়ে ডাকে প্রকৃতিপ্রেমীদের৷ খবর ডয়েচে ভেলের।
জার্মানির উত্তরের এই হ্রদ দখল করে আছে ১১০ বর্গকিলোমিটার এলাকা৷ এটিই জার্মান মুলুকের সবচেয়ে বড় হ্রদ৷ দক্ষিণের কন্সট্যান্স হ্রদ অবশ্য আরো বড়, কিন্তু প্রতিবেশী অস্ট্রিয়া আর সুইজারল্যান্ডের সীমানা থাকায় ম্যুরিৎজকেই বড় বলে ধরা হয়৷ ছুটির দিনের তীর্থ হিসেবে পরিচিত মেকলেনবুর্গ অঞ্চলের একটি অংশ এই হ্রদ৷
গোটা বার্লিন মিলিয়ে বেশকিছু হ্রদ আছে৷ সবচেয়ে পরিচিত হলো ভানজি৷ হাজার মিটারেরও বেশি দৈর্ঘ্যের এই হ্রদ ভ্রমণপিয়াসীকে দেয় সমুদ্রতটের অনুভূতি৷ এই হ্রদে উপভোগ করতে পারবেন বালুকা বেলা৷ অনুভূতিটাও মিথ্যে হবে না, কারণ বাল্টিক সাগরের উপকূল থেকে এই বালু এসেছে৷ এই হ্রদপাড়ে একসঙ্গে হাজার পঞ্চাশেক মানুষ জলকেলি করতে পারেন৷ আর তাই গরমের সময় ভিড় লেগেই থাকে৷
হ্রদের কথা বলে নামের সঙ্গে মির দেখে অবাক হওয়ার কথা৷ জার্মান ভাষায় মির মানে সমুদ্র, হ্রদ নয়৷ এ কারণে অনেকে সংশয়ের মধ্য পড়েন৷ হ্যানোভার থেকে উত্তর-পশ্চিমে ৩০ কিলোমিটার দূরে এটির অবস্থান৷ দুটি সৈকত আছে এখানটায়৷ একটা উত্তরের দিকে, অপরটা দ্বীপে৷ ফলে এখানে মিলবে সমুদ্রের ছোঁয়া৷
হ্যানোভারে বাড়ি যাঁদের, তাঁদের কষ্ট করে দূরে যেতে হয় না৷ ঘরের কাছেই মুগ্ধতা ছড়িয়ে রেখেছে মাশচি৷ ১৯৩০ সালে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয় এই হ্রদ৷ এ পাড় থেকে দেখা যায় ওপারের নতুন টাউন হল৷ সঙ্গে আছে চারপাশের চোখ জুড়ানো প্রকৃতি৷
জার্মানির দক্ষিণে ব্ল্যাক ফরেস্ট পর্বতে টিটিজি হ্রদ যেন রোম্যান্টিক বাসা৷ গ্রীষ্মে সাঁতার কাটার সুযোগ তো আছেই৷ চাইলে ভাড়া করা যাবে প্যাডেল নৌকা৷ তবে শীতের সময়টা প্রতিকূল৷ ঠান্ডায় জমে যায় হ্রদের পানি৷
জার্মানির বৃহত্তম আর গভীরতম হ্রদ এটি৷ অস্ট্রিয়া এবং সুইজারল্যান্ডের ঘেঁষা এই হ্রদটির অবস্থান জার্মানির একেবারে দক্ষিণপ্রান্তে৷ এখানকার জলবায়ুতে আছে ভিন্নতা৷ আল্পসে বরফ জমে যখন আকাশ ছুঁয়ে ফেলে, তখনো খেজুর গাছ বেড়ে আপন গতিতে৷
এই হ্রদটিকে বলা হয় মিউনিখের বাথটাব৷ বাভারিয়ার রাজধানী থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে হ্রদটির অবস্থান৷ গ্রীষ্ম এলেই যেন এটি তীর্থভূমি৷ বালুকাময় সৈকতে গ্রীষ্মের জলকেলিতে মেতে ওঠে হাজারো মানুষ৷ নৌকা বাওয়া, সাইকেল চালানো, হাঁটা-সব মিলিয়ে দারুণ অনুভূতি দেবে এই হ্রদ৷
১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই হ্রদের ডাক নাম, বাভারিয়ান সাগর৷ রাজ্যটির বৃহত্তম হ্রদ এটি৷ এই হ্রদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রশংসাও করেছেন রূপকথার রাজা দ্বিতীয় লুডভিগ৷ হ্রদটির সবচেয়ে বড় দ্বীপে একটি ক্যাসেলও তৈরি করেছিলেন রাজা৷ যা এখন সবার জন্য উন্মুক্ত৷
আলপাইনের সবচেয়ে গভীর ও বড় হ্রদ এটি৷ সবুজ পাহাড় ঘেরা হ্রদটির পানি ফিরোজার মতো ঝকঝকে। পানিতে থাকা প্রচুর ক্যালসিয়াম কার্বনেটের স্ফটিকের কারণে রংটি এমন দেখা যায়৷ আর সূর্যের আলো এসে স্ফটিকে পড়লে চিক চিক করতে থাকে পানি৷
বের্শেজগাডেন ন্যাশনাল পার্কের রূপে মুগ্ধ হয়ে তা ক্যানভাসে বন্দি করতে চেয়েছেন অনেক আঁকিয়ে৷ হ্রদের পাশে, খাড়াভাবে উঠে যাওয়া পাহাড় দেখে মনে হয় যেন এটি কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড৷ পরিবেশবান্ধব ইলেক্ট্রিক নৌকা নিয়ে ঘুরে দেখেত পারেন আশপাশটা৷ যাওয়া যাবে সেন্ট বার্থলোমিউয়ের গির্জায়৷ এখানে এলে নৌভ্রমণে আনন্দিত হবেন যে কেউ৷
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।