জুমবাংলা ডেস্ক : চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলায় ‘জিনের’ হাত থেকে উদ্ধার সেই কিশোরী ফিরে গেল পরিবারের কাছে।
রোববার সকাল থেকে নিখোঁজ হয়ে পাশের ইউনিয়নে চলে যায় কোমলমতি ফুটফুটে কিশোরীটি। পরে ইউপি চেয়ারম্যান ও নির্বাহী কর্মকর্তা রোববার রাতে তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেন।
উপজেলার মায়ানী ইউপি চেয়ারম্যান কবির আহমদ নিজামী জানান, বিকাল ৪টায় আমার এলাকার ইউপি সদস্য জানে আলম ১৪ বছরের এক কিশোরীকে আমার কার্যালয়ে নিয়ে আসে। পশ্চিম মায়ানী গ্রামের শাহ আলম হুজুর তার বাড়ি থেকে উক্ত মেম্বারের কাছে কিশোরীকে হস্তান্তর করেন।
চেয়ারম্যান কবির নিজামী তার কার্যালয়ে গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে উক্ত কিশোরীর নাম-পরিচয় জানতে চাইলে কিশোরী তার নাম জান্নাতুল ফেরদাউস মরিয়ম বলে জানায়। সে ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদের পাশ্বর্বর্তী একটি বাসায় আন্টির সঙ্গে থাকে বলে জানায়।
কিশোরীটি জানায়, এখানে তাকে একটি জিনে নিয়ে আসছে। জিন তাকে একটি সিএনজিতে রেখে চলে গেছে। এই জিন তাকে আগেও নিয়ে আসছিল, আবার বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে।
কিশোরীটি তার বাবা-মা কিংবা নিকটাত্মীয় কারো মোবাইল নাম্বার বা ঠিকানাও বলতে পারছিল না। অবশেষে ইউপি চেয়ারম্যান কবির নিজামী উক্ত ফুটফুটে এবং কোমলমতি শিশুর বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিনের পরামর্শ চান।
নির্বাহী কর্মকর্তা কিশোরীকে জেলা সমাজসেবা অধিদফতরে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া করছিলেন। ইতিমধ্যে রাত ৮টার দিকে কিশোরীর পরিবারের হদিস পাওয়া যায়।
জানা গেছে, মেয়েটি মীরসরাই উপজেলার মঘাদিয়া ইউনিয়নের শেখটোলা গ্রামের রসুল আহমেদ ও সুরাইয়া বেগমের কন্যা সানজিদা আক্তার মিতু। বাবা প্রবাসে থাকেন। খবর পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই মা, চাচা, নানা, খালাসহ সবাই নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে পারিবারিক এ্যালবামের ছবি ইত্যাদি নিয়ে উপস্থিত হন।
মেয়েটির চাচা মহিউদ্দিন জানান, তাদের কন্যা মলিয়াইশ উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। সকালে উঠে ফজর নামাজ পড়ে, কোরআন তেলাওয়াত করে সবার অজান্তে সে নিখোঁজ হয়ে যায়। এরপর থেকে তাকে আর খুঁজে পাচ্ছিল না।
চাচা মহিউদ্দিন জানান, গত রমজানের পরে এমন সমস্যা হয়েছিল। এবার এভাবে পার্শ্বের ইউনিয়নে উধাও হয়ে যাওয়া এবং দুপুরে শাহ আলম হুজুরের বাড়িতে তার অস্বিত্ব পাওয়া যায়। কারো আপত্তিকর দৃষ্টিতে না পড়ার জন্য হুজুর বোরখা পরিয়ে রাখে, পরিবারের সঙ্গে তাকে দুপুরের আহার ও করান। ইতিমধ্যে সবাই আশপাশের গ্রাম তন্নতন্ন করে খুঁজেছেন।
তিনি জানান, অবশেষে নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি মেয়ে আনা হয়েছে খবর শুনে ছুটে আসেন তারা। অবশেষে রাত সাড়ে ৮টার দিকে কিশোরী সানজিদাকে পরিবারের হাতে হস্তান্তর করেন নির্বাহী কর্মকর্তা।
এ সময় অশ্রসিক্ত সানজিদার মা সুরাইয়া আক্তার আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, আমার এই ফুটফুটে কিশোরী কন্যা নিরাপদে কিছু ভালো মানুষের হাত ধরে পরিবারে ফিরে যাওয়ায় নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন ও ইউপি চেয়ারম্যান কবির নিজামীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। বখাটে বা কোনো আপত্তিকর মানুষের হাতে পড়লে অবুঝ কিশোরীর ক্ষতি হতে পারত।
তিনি উক্ত ঘটনায় সহযোগিতা প্রদানকারী সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
এদিকে এ ঘটনা নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, বিষয়টি কিশোরীর বয়সন্ধিকালীন কোনো মানসিক চাপের কারণেও ঘটতে পারে। জিনের বিষয় হোক আর অসুস্থতা হোক সবাইকে তাদের সন্তানদের প্রতি সব সময় খেয়াল রাখা উচিত বলে মন্তব্য করেন করেন তিনি। সূত্র : যুগান্তর।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।