জুমবাংলা ডেস্ক : জিপিএ-৫ পেয়েছে সুগন্ধা নদীতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বাবা-মা ও ভাইকে হারানো সেই হাফসা। শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) তার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কী থেকে কী হয়ে গেলো! সব আনন্দ যেন ভেসে যাচ্ছে চোখের পানিতে।
বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের দক্ষিণ বড় লবনগোলা গ্রামের হাকিম শরীফ (৪৫) ও পাখি বেগম (৩৫) দম্পতি। দারিদ্র্যের কারণে চার সন্তানকে বাবা-মা ও শ্বশুর-শাশুড়ির কাছে রেখে আশ্রয় নেন ঢাকায়। সেখানে স্ত্রী একটি গার্মেন্টসে আর স্বামী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা কর্মীর চাকরি নেন। স্বামী-স্ত্রীর উপার্জনে কোনোমতে চলছিল তাদের সংসার। অভাবের সংসারে শুধু একটাই স্বপ্ন, সন্তানরা পড়াশোনা করে মানুষের মতো মানুষ হবে।
বড় মেয়ে হাফসা এ বছর বরগুনা সদর উপজেলার কালীরতবক দাখিল মাদরাসা থেকে দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। বেতাগীর সরিষামুড়ির বাসিন্দা রাজধানীর একটি বায়িং হাউজে কর্মরত এক পাত্রের সঙ্গে আজ শুক্রবার বিয়ের দিনক্ষণ নির্ধারণ করা ছিল হাফসার।
মেয়ের বিয়ের জন্য কেনাকাটা ও ব্যাংকে রাখা টাকা উত্তোলন করার পরিকল্পনা করে ২০ ডিসেম্বর আড়াই বছরের শিশুপুত্র নসিরুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকায় স্বামীর কাছে আসেন পাখি। টাকা উত্তোলন ও কেনাকাটা শেষে তারা বরগুনায় ফেরার উদ্দেশ্যে ২৩ ডিসেম্বর নসরুল্লাহকে নিয়ে অভিযান-১০ লঞ্চে ওঠেন। ওইদিন রাতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর থেকেই নসরুল্লাহসহ নিখোঁজ রয়েছেন আব্দুল হাকিম শরীফ ও তার স্ত্রী পাখি বেগম।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নিখোঁজ আব্দুল হাকিম শরীফ ও পাখি বেগম দম্পতির বাড়িতে গেলে দেখা হয় বাড়িতে থাকা তাদের তিন সন্তান সুমাইয়া (১৪), ফজলুল হক (১০) ও হাফছা বেগমের (১৮) সঙ্গে। তারা তিনজনই মাদরাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী।
কথা হলে হাফসার নানি ফরিদা বেগম বলেন, পরীক্ষার ফল জানার পর থেকে হাফসার কষ্টটা আরও বেড়ে গেছে। কিছুতেই কান্না থামানো যাচ্ছে না ওর। ভালো ফলাফল পেলেও হাফসার সামনে লেখাপড়া অনিশ্চিত। কারণ ভূমিহীন পরিবারে জন্ম হওয়া হাফসাকেই এখন ছোট দুই ভাই-বোনের দায়িত্ব নিতে হবে। হাফসার মামা নজরুল বলেন, গত ৭ দিনে নিকটাত্মীয় ছাড়া আর কেউই পাশে এসে দাঁড়ায়নি। কোনো সরকারি সহায়তায়ও দেওয়া হয়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।