আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুদ্ধ থেকে জীবন বাঁচাতে অথবা দারিদ্র্য পীড়িত দেশ থেকে উন্নত জীবন যাপনের আশায় গত কয়েক বছর ধরে লাখ লাখ মানুষ ইউরোপ পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছে। ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে অনেকে গ্রিস পৌঁছালেও, জার্মানি বা উত্তর ইউরোপের কোনো দেশে প্রবেশ করতে পারেনি তারা। এ অবস্থায় গ্রিসে আটকে পড়া অভিবাসীরা খরচ চালাতে বেছে নিচ্ছে বিভিন্ন ধরণের অবৈধ পথ। এমনি ভয়াবহ চিত্র ওঠে এসেছে বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইউরোপে যাবার আশায় গত কয়েক বছরে গ্রিসে পৌঁছেছে বহু অভিবাসী। আশা ছিল সেখানে গিয়ে গড়বে তাদের স্বপ্নের ভবিষ্যৎ। তবে বলকান রুট বন্ধের পর গ্রিসের এথেন্সের বিভিন্ন শিবিরে আটকা পড়ে প্রায় ৬০ হাজার অভিবাসী। স্বপ্ন ভঙ্গের পাশাপাশি তাদের জীবনে নেমে আসে বিপর্যয়। দৈনন্দিন প্রয়োজন পূরণ করতে তাদের প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়েই অনেকে বেছে নিচ্ছে পতিতাবৃত্তির মত নানা অবৈধ পথ।
এথেন্সের কেন্দ্রের এই পেডিয়োন টুয়ারেস পার্কে হেটে গেলে চোখে পড়বে মাদক ব্যবসায়ী ও পতিতাদের বিচরণ। কিছু ইউরো আয় করার জন্য তরুণ অভিবাসীরা এ পথ বেছে নিয়েছে।
এমনি একজন ইরানের নাগরিক ২৫ বছর বয়সী আজাদ। জানালেন তার জার্মানি যাওয়ার স্বপ্ন অনেক আগেই ভেঙ্গে গেছে। এখন ফিরে যেতে চায় নিজ দেশে, আর এ জন্য মানবপাচারকারীদের দিতে হবে ৪শ’ ইউরো। সে কারণে এই অবৈধ পথ বেছে নিয়েছে।
আজাদ বলেন, ‘আমার আর কোনো উপায় নেই। আমি জানি এটা ঠিক না। এর জন্য আমার অনেক মন খারাপও হয়।’
কেবল আজাদই নয় এ পার্কে গেলে নজরে পড়বে তার মত আরো অনেক তরুণ অভিবাসীর, যাদের অনেকে হয়তো এখনো পেড়োয়নি ২০-এর কোঠা।
এমনই এক অভিবাসী বলেন, ‘অনেক সময় ভয় হয়। তারপর আমার মায়ের কষ্টের কথা মনে হয়। এর মাধ্যমে অন্তত কিছু অর্থ উপার্জন করতে পারছি।’
এ প্রাচীরের পেছনে আটকা পড়ে আছে অনেক তরুণ অভিবাসী। অনেক সময় অপরিচিত স্থানীয় ও সমাজকর্মীরা তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসার আগ্রহ প্রকাশ করে।
এক সমাজকর্মী বলেন, ‘আমাদের কাছে অনেকে সাহায্য চায়। আমরা কয়েকজনকে হয়তো সাময়িকভাবে অর্থ দিয়ে সহায়তা করতে পারি কিন্তু স্থায়ীভাবে তাদের কোনো সাহায্য করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’
গ্রিস হয়ে ইউরোপে গিয়ে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন থাকলেও ব্যর্থতা, হতাশা গ্রাস করে ফেলছে এখানকার তরুণ অভিবাসীদের। এ পরিস্থিতিতে আর কোনো উপায় না পেয়েই তরুণ প্রজন্ম বাধ্য হয়ে বিভিন্ন অবৈধ পথে অর্থ উপার্জন করছে। কাটাচ্ছে দুর্বিষহ জীবন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।