আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সৌদি আরবে জুমার খুতবায় তাবলিগ জামাতের সমালোচনার নির্দেশনা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, সৌদি আরবের ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স দপ্তরের মন্ত্রী ডা. আব্দুল লতিফ আল শাইখের জারি করা এক নির্দেশনায় জুমার খুতবায় তাবলিগ জামাতের বিরুদ্ধে কথা বলতে বলা হয়। তাবলিগ জামাত নিয়ে মানুষকে সতর্ক করতে মসজিদের ইমামদের নির্দেশনা দেওয়া হয় এতে।
সৌদির ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স দপ্তরের এক টুইটে মন্ত্রণালয় কর্তৃক লিখিত আরবি খুতবাতে তাবলিগ জামাতের কাজের নিন্দা করা হয়েছে। পাশাপাশি এ জামাতের ওপর দেওয়া হয়েছে কিছু অভিযোগ।
সৌদি সরকারের ওই ঘোষণায় বলা হয়, এটি (তাবলিগ জামাত) সন্ত্রাসবাদের একটি প্রবেশপথ। এদের বিপদ সম্পর্কে মানুষকে বোঝান। এদের ভুলগুলো তুলে ধরুন।
তাবলিগ জামাতের পাশাপাশি দাওয়া নামে আরেকটি সংগঠনের ব্যাপারে সতর্ক করা হয়। মন্ত্রী টুইটে জানিয়েছেন, মসজিদে ইমামদের তাদের ভাষণে উল্লেখ করা উচিত এরা কীভাবে সমাজের জন্য বিপজ্জনক। ১৯২৬ সালে দাওয়া নামে এ সংগঠনটি গঠিত হয়।
উইকিপিডিয়া বলছে, তাবলিগ জামাত ভারতীয় উপমহাদেশকেন্দ্রিক একটি ধর্মপ্রচার আন্দোলন, যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে— মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকা এবং যা মুসলিমদের ও নিজ সদস্যদের সেভাবে ধর্মচর্চায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করে, যেভাবে নবী মুহাম্মাদের (সা.) জীবদ্দশায় তা চর্চা করা হতো।
বিশ্লেষকরা বলছেন, তাবলিগ জামাত ভারতের দেওবন্দভিত্তিক সুন্নি মুসলিমদের সংগঠন। অন্যদিকে সৌদি আরবের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী কট্টর ওয়াহাবি ও আহলে হাদিস মতাদর্শের অনুসারী। তাই সৌদিতে প্রকাশ্যে তাবলিগ জামাতের কাজ করা যায় না এবং সৌদি সরকার মাঝেমধ্যেই এ দলটি সম্পর্কে সতর্ক করে খুতবা দেয়। কিন্তু এ বছরই প্রথম অহিংস এ সংগঠনটিকে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ করা হয়েছে।
সৌদি সরকারের ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স দপ্তরের এমন নির্দেশনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসলিম স্কলাররা।
ভারতের বিখ্যাত আলেম শায়খ সালমান হুসাইনি নদবী এ বিষয়ে সৌদি সরকারের তীব্র সমালোচনা করে তাৎক্ষণিক আরবি ও উর্দু ভাষায় এর প্রতিবাদ করেছেন।
তিনি বলেন, মোহাম্মদ বিন সালমানের এ সৌদি সরকার আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদী শক্তির এজেন্ট হয়ে যে মুসলিম বিশ্বের বিরুদ্ধে কাজ করছে সেটি এমন নির্দেশনায় আরও স্পষ্ট হলো। তবে এ বিষয়ে ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
বাংলাদেশের গবেষক আলেম মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী বলেন, সৌদি সরকারের ফরমান, অভিযোগ ও খুতবা প্রচারের বিষয়ে আমার মূল্যায়ন দেশটির বড় আলেমদের কাছে পৌঁছানো হবে। শাসক পর্যায়েও পৌঁছে যাবে ইনশাআল্লাহ। ২০ জন আরব আলেমকে নিয়ে আমরা জুম মিটিং করছি। এ ধারা চলতে থাকবে। তারা কারেকশন দিতে পারেন কিন্তু শতবর্ষী একটি দীনি আন্দোলনকে এভাবে একতরফা নিন্দা ও নিরুৎসাহিত করতে পারেন না। মিথ্যা প্রচারণা শুনে তাবলিগি কাজের বিরুদ্ধে অপবাদ দিতে পারেন না।
তিনি বলেন, সৌদি সরকারের প্রজ্ঞাপনটির বক্তব্যে ব্যক্তিগতভাবে খুবই মর্মাহত হয়েছি। তারা এ কথা কোথায় পেলেন যে, তাবলিগিরা কবরকে সেজদার স্থান বানায়? দুনিয়ার কোথাও এমন নেই, হতে পারে না। তাদের এ কথা তুলে নিতে হবে। সাবকন্টিনেন্টের আলেমদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করতে হবে। বিশ্বের কোটি কোটি তাবলিগ সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
চীন সরকারের অনুরোধে ‘কোরআন মজিদ’ অ্যাপ নিয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নিলো অ্যাপল
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।