আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ডমিনিক মাতেও নামটা এখন আর পরিচিত নয়। সাবেক লিভারপুল ডিফেন্ডার খেলা ছেড়েছেন ১৫ বছর আগে। এর বহু আগ থেকেই অবশ্য মানুষের মন থেকে হারিয়ে গেছে তিনি। ২০১৫ সালে হঠাৎ আবার আলোচনায় ফিরেছিলেন, কারণ দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়েছিল তাঁকে।
নিজের ভুল যেন আর কেউ না করে সেটা চাচ্ছেন সাবেক স্কটিশ ডিফেন্ডার। বাজি ও জুয়ার ক্ষতি প্রতিরোধ বিশেষজ্ঞ এপিক গ্লোবাল সল্যুশনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বাজি ও জুয়ার নেশা সম্পর্কে সচেতন করতে নেমেছেন। সবাইকে শোনাতে চাইছেন, কীভাবে ১৫ কোটিরও বেশি টাকা তিনি খুইয়েছেন এ নেশায়।
জুয়ার নেশাটা খেলোয়াড়ি জীবনেই ছিল। ১৯৯৩ সালে রেড ডেভিলের জার্সিতে অভিষেকের পর অ্যানফিল্ডের ক্লাবের হয়ে ১৫৫ বার মাঠে নেমেছিলেন। ২০০০ সালে লিডস ইউনাইটেডের কাছে তাঁকে যখন ৪৭ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডে বিক্রি করা হলো, তখনা ক্যারিয়ারের মধ্যগগনে।
২৬ বছর বয়সী নতুন ক্লাবে যোগ দেওয়ার সময় দেওয়া বাধ্যতামূলক মেডিক্যাল টেস্টে ফেল করেন। তবু দলবদলে সমস্যা হয়নি, বয়সটা পক্ষে ছিল। লিডসে ভালোই খেলেছেন, অধিনায়কও হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর সময়েই লিডসের অবনমন হয়। সেখানে চার বছর কাটিয়ে যখন দল ছাড়লেন, এরপর চোট হানান দিল। ক্যারিয়ারের শেষদিকে ব্ল্যাকবার্ন রোভার্স ও স্টোক সিটির হয়ে যতটা না মাঠে ছিলেন, তার চেয়ে বেশি খেলেন সাইড বেঞ্চে।
চোটগ্রস্ত এই সময় আর অবসরের পরই জুয়ার নেশাটা জেঁকে বসে। ২০১৫ সালে দেউলিয়া ঘোষণার সময় স্বীকার করেন ১০ লাখ পাউন্ডের বেশি টাকা তিনি জুয়ায় হারিয়েছেন। একবার শুধু একটি ঘোড়দৌড়েই ২ লাখ পাউন্ডের বাজি ধরেছিলেন। বিস্ময়ের ব্যাপার, সেবার ভাগ্য পক্ষে ছিল।
নিজের ভুলের জন্য অনুতপ্ত মাতেও চান অন্যরা তাঁর গল্প থেকে শিক্ষা নিক। ইকো-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছে, ‘আমার মনে হয়েছে আমার গল্প বলার এটাই ভালো সময়। এপিক আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, আর ওরা যেভাবে কাজ করে সেটা আমার দারুণ লাগে। আমি ভাবলাম, বিভিন্ন বয়সের অনেক মানুষকে হয়তো সাহায্য করতে পারব। যেহেতু আমার নিজের এই সমস্যা ছিল, আমি হয়তো সঠিক ব্যক্তি হব এ কাজে। ’
গত কয়েক বছরে বেশ কিছু পরিচিত মুখ ফুটবল নিয়ে বাজি ধরার কারণে শাস্তি পেয়েছেন। নিউক্যাসলের সান্দ্রো টোনালি অবশেষে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরেছেন। এর আগে ইভান টনি, আন্দ্রোস টাউনসেন্ড, ড্যানিয়েল স্টারিজ, কিয়েরেন ট্রিপিয়ারের মতো ফুটবলাররাও ফুটবল নিয়ে বাজি ধরেছেন।
মাতেওর ধারণা, শুধু এই ফুটবলাররা নন, আরও অনেকেই বিভিন্ন ধরনের বাজির নেশার শিকার, ‘এটা কীভাবে আমাকে প্রভাবিত করেছে, এবং আমার অবস্থা কেন এমন হয়েছিল তা নিয়ে কথা বলতে চাই আমি। আমি জানি আমাদের ধারণার চেয়েও অনেক বেশি কিছু হচ্ছে। তরুণ ফুটবলার ও ক্রীড়ার অন্য তরুণদের খুব সহজে প্রভাবিত করা যায়। আর এখন ফুটবলে যে পরিমাণ টাকা, তাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ। এত টাকা পায় যে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।’
এ কারণেই নিজের ভুল থেকে পাওয়া শিক্ষাটা ছড়িয়ে দিতে চান মাতেও, ‘আমি য পরিমাণ অর্থ হারিয়েছি সেটা বিশাল এবং আমি এ নিয়ে লজ্জিত। এবং এটা আমার পরিবার ও ছেলেমেয়ের যে অবস্থা করেছে তাতেও লজ্জিত। এ লজ্জা আমার নিজের দেওয়া। আমি তাই অভিজ্ঞ ও তরুণ খেলোয়াড়দের কিছু শেখাতে চাই, যদি আমাকে সে সুযোগ দেওয়া হয়।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।