প্রকৃতিতে লুকিয়ে থাকা বিস্ময়কর ও সুন্দর প্রাণীগুলোর মধ্যে জেলিফিশ অন্যতম। দেখতে সাদামাটা হলেও কয়েক প্রজাতির জেলিফিশ বেশ মারাত্মক। আত্মরক্ষার জন্য টেন্টেকল বা শুঁড় থেকে বিষ ছুড়ে মারে এরা। এ বিষ শুধু সামুদ্রিক প্রাণীর জন্যই ক্ষতিকর নয়, মানুষও বিপদে পড়তে পারে। জেলিফিশের বিষ গায়ে লাগলে হালকা অস্বস্তি থেকে শুরু করে হতে পারে গুরুতর ব্যথাও।
ক্যাননবল জেলিফিশ
নামের সঙ্গে চেহারার দারুণ মিল আছে। এদের দেহ শক্ত, কামানের গোলার মতো গোলাকার বলে এমন নামকরণ। আটলান্টিক মহাসাগর, মেক্সিকো উপসাগর ও বিশেষভাবে দক্ষিণ-পূর্ব যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলীয় অঞ্চলে পাওয়া যায়। ২৫-৩৫ সেন্টিমিটার ব্যাসের এই জেলিফিশের বৈজ্ঞানিক নাম স্টোমোলোফাস মেলিয়াগ্রিস (Stomolophus meleagris)। সাদা বা স্বচ্ছ রঙের ওপর কিছুটা বাদামি বা নীল দাগ থাকতে পারে। এদের জীবনকাল মাত্র ৩-৬ মাস। এদের টেন্টেকলও হালকা। মানুষের জন্য তেমন বিপজ্জনক না হলেও কারো কারো এতে অ্যালার্জি হতে পারে।
মুন জেলিফিশ
আটলান্টিক, প্রশান্ত এবং ভারত মহাসাগরসহ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে আছে মুন জেলিফিশ। সাধারণত সব জায়গায় যেসব জেলিফিশ পাওয়া যায়, এটি তাদের মধ্যে অন্যতম। তবে তালিকার অন্যান্য জেলিফিশের মতো এটা অত মারাত্মক নয়। এদের টেন্টেকলও অন্যগুলোর চেয়ে হালকা। বিষ শরীরে লাগলে হালকা অস্বস্তি হতে পারে। এদের বৈজ্ঞানিক নাম অরেলিয়া অরিতা (Aurelia aurita)। ২৫-৪০ সেন্টিমিটার ব্যাসের এই জেলিফিশও ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত বাঁচে। এদের শরীর সাধারণত স্বচ্ছ হলেও আলো বা খাদ্যের প্রভাবে কিছুটা গোলাপি বা বেগুনি রঙের দেখায়।
ফ্লাওয়ার হ্যাট জেলিফিশ
এই প্রজাতির জেলিফিশ দেখতে অনেক সুন্দর। এদের বৈজ্ঞানিক নাম ওলিনডিয়াস ফরমোসা (Olindias formosa)। ছোট মাছ ও প্ল্যাঙ্কটন খেয়ে বেঁচে থাকে এরা। ৬-৭ সেন্টিমিটার ব্যাসার্ধের এই জেলিফিশ বাঁচে ৬ মাস থেকে ১ বছর। জাপান ও ব্রাজিলের উপকূলে পাওয়া যায়। তবে এদের রঙিন রূপ দেখে বোকা হবেন না। এদের রয়েছে শক্তিশালী টেন্টেকল, যার আঘাতে শরীর অবশ হয়ে যেতে পারে।
সি নেটেল
উষ্ণ ও শীতল—দুই ধরনের পানিতেই পাওয়া যায় এদের। তবে উত্তর আমেরিকার পূর্ব উপকূল ও মেক্সিকো উপসাগরে বেশি পাওয়া যায়। এদের টেন্টেকল সরু। সোনালি বা লালচে বাদামি রঙের এসব জেলিফিশ ২-৩ মিটার লম্বা হতে পারে। এদের বিষ গায়ে লাগলে জ্বালাপোড়া হতে পারে দেহে। সাধারণত শিকারকে প্যারালাইজ করতে এরা টেন্টেকল থেকে বিষ ছুড়ে মারে। এদের প্রিয় খাবার ছোট মাছ ও প্ল্যাঙ্কটন। বৈজ্ঞানিক নাম ক্রিসাওরা কুইনকুইসিরা (Chrysaora quinquecirrha)।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।