পটুয়াখালী প্রতিনিধি : কুয়াকাটা সংলগ্ন গভীর বঙ্গোপসাগর থেকে উপকূলে ভেসে আসছে অসংখ্য জেলিফিশ। গত কয়েকদিন ধরে সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন স্থানে মৃত ও অর্ধমৃত জেলিফিশ দেখা যাচ্ছে। সমুদ্রের জোয়ারের সঙ্গে এগুলো ঝাঁকে ঝাঁকে তীরে এসে বালুতে আটকে পড়ায় বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে।
এছাড়া জেলিফিশ আটকে জাল ছিঁড়ে যাচ্ছে এবং মাছ শিকারে দেখা দিয়েছে প্রতিবন্ধকতা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ট্রলার মালিক ও জেলেরা।
সরজমিন কুয়াকাটার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, দখিনা বাতাস এবং জোয়ারের পানির সঙ্গে ভেসে আসছে অসংখ্য জেলিফিশ। কুয়াকাটা লেম্পুচর, ঝাউবনসহ সৈকতের বিভিন্ন স্থানে সেগুলো আটকে আছে।
খুলনা থেকে ঘুরতে আসা জাকির হোসেন নামের এক পর্যটক ঢাকা বলেন, জেলিফিশের নাম শুনেছি কিন্তু কখনো দেখিনি, এই প্রথম দেখছি। এগুলো দ্রুত সরিয়ে না নিলে পচে সৈকতের পরিবেশ দূষিত হবে। তবে জেলিফিশগুলো দেখতে খুবই সুন্দর।
স্থানীয় জেলে মো. হারিচ জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে তাদের জালে বিপুল পরিমাণ জেলিফিশ ধরা পড়েছিল। তারা জাল থেকে সমুদ্রে ফেলে দিয়েছে। শুধু তারাই নয় বর্তমানে জেলিফিশ সমুদ্রে এতটাই বেড়েছে যে, জেলেরা বাধ্য হয়ে সমুদ্র থেকে জাল উঠিয়ে নিয়ে আসছে।
ফিশারিজ বিভাগের গবেষকদের মতে, জেলিফিশ গভীর সমুদ্রের মাছ। সমুদ্রের পানিতে কোনো বিপর্যয় বা পরিবর্তনের প্রভাবে উপকূলের কাছাকাছি চলে আসাটাই শঙ্কা। জেলিফিশ বিভিন্ন প্রজাতির হয়ে থাকে। একটি প্রজাতি মিঠাপানিতে পাওয়া যায়। এরা সাধারণত পানির ওপরভাগে ভাসমান অবস্থায় থাকে। গভীর সমুদ্রে জেলিফিশের হরেক রকম জাত রয়েছে। এদের বিশেষ ধরনের দংশন কোষ আছে। এগুলো স্পর্শ করলে শরীর চুলকায়, ঘা হয়ে যেতে পারে। এমনকি মানুষ মারাও যেতে পারে। তাই কাঠ বা লোহা দিয়ে তুলে এ মাছগুলো বালুতে পুঁতে ফেলা উচিত।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, গত কয়েক দিন থেকে এসব জেলিফিশ উপকূলের কাছাকাছি এসে জেলেদের জালে আটকা পড়ছে। পরে জেলেরা ফেলে দেওয়ায় মরা মাছগুলো সৈকতের বেলাভূমিতে আসতে শুরু করেছে। তবে আবহাওয়ার পরিবর্তন হলে সবকিছু ঠিক হয় যাবে।
এ বিষয়ে কথা হয় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদের অধ্যাপক ড. একেএম আবদুল আহাদ বিশ্বাসের সঙ্গে। তিনি বলেন, এ জলজ প্রাণিগুলো পঁচে সৈকতে আটকে থাকাতে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। মাছগুলো মারা যাচ্ছে কেন তা নিয়ে গবেষণা করা দরকার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।