জ্যোতির্বিদেরা কিছু কোয়াসার (গ্যালাক্সি) আবিষ্কার করেছেন, যেগুলো কিনা কয়েক বিলিয়ন আলোকবর্ষজুড়ে সুতার মতো একটা আকার সৃষ্টি করেছে (ছবি ৪)। তবে এসব আবিষ্কারের পরিসংখ্যানগত বিশ্লেষণ নিয়ে বিজ্ঞানীদের মতভেদ আছে। অনেকে বলছেন, বিজ্ঞানীরা যে পদ্ধতিতে বিশালকায় গঠন আবিষ্কার করছেন, তা ঠিক নয় এবং এখন পর্যন্ত যত বড় গঠন পাওয়া গেছে, সেগুলোকে সাধারণ বিগব্যাং মডেল দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়।
কিন্তু বিশালকায় কোয়াসার সমষ্টির গঠন নতুন পর্যবেক্ষণের মধ্যে ক্রমাগতই পাওয়া যাচ্ছে। প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে একদল গবেষক গামা রশ্মি বিস্ফোরণের বিতরণ তথ্য থেকে প্রায় ২ থেকে ৩ বিলিয়ন আলোকবর্ষজুড়ে একটি গঠনের অস্তিত্ব দাবি করেন। যেহেতু অন্য কোনো তরঙ্গ দৈর্ঘ্যে এই আবিষ্কারকে সমর্থন করা যাচ্ছে না, সে জন্য এই গঠনটির অস্তিত্ব এখনো নিশ্চিত নয়।
গ্যালাক্সিগুলো একমাত্রিক সুতার মতো ফিলামেন্ট কিংবা দ্বিমাত্রিক চাদরের মতো গঠন সৃষ্টি করে বুদ্বুদের আকারের ওপর ছড়িয়ে আছে। তাই গ্যালাক্সি সুতা ও চাদরের মধ্যে রয়েছে বিশালকায় শূন্যস্থান, যার ব্যাস কয়েক শ মিলিয়ন আলোকবর্ষ হতে পারে। SDSS-এর তথ্য ব্যবহার করে পাঠক অনায়াসেই এটা নিজেই আবিষ্কার করতে পারেন। গ্যালাক্সিগুলোর বিতরণ সমসত্ত্ব নয়।
মহাবিশ্বের উত্পত্তি ও পরবর্তী সময়ে তার গঠন ও প্রসারণ নিয়ে যে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করেন, তাঁদের কসমোলজিস্ট (Cosmologist) বা মহাজাগতিক বিজ্ঞানী বলা হয়। কসমোলজিস্টরা মনে করেন, মহাবিশ্বের শুরুতে যদি স্ফীতিতত্ত্ব (Inflation) কাজ করে, তবে একধরনের ‘স্কেলার’ ক্ষেত্র কোয়ান্টাম হ্রাস-বৃদ্ধির (Fluctuation) মধ্য দিয়ে যায়, যা কিনা পরে বস্তু ও শক্তির ঘনত্বের হ্রাস-বৃদ্ধি হিসেবে প্রকাশ পায়।
আরও পরে ফোটন কণার চাপ বস্তুকণাকে দূরে ঠেলে একটি গোলকের আকার সৃষ্টি করে (যাকে ব্যারিয়ন দোলন বলা হয়), সেই আকার মহাবিশ্বের প্রসারণের ফলে এখন প্রায় ৫০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ স্থানজুড়ে বিস্তৃত। কাজেই বিশাল শূন্যস্থান ও সুতার মতো গ্যালাক্সি দলের বিতরণ অপ্রত্যাশিত নয়।
অর্থাৎ বিগব্যাং হওয়ার পর কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশন এবং পরে আলো ও বস্তুর মধ্যে মিথষ্ক্রিয়ায় মহাবিশ্বের বর্তমান গঠন অনেকটা নির্ধারিত হয়। একে রবার্টসন-ওয়াকার কনকর্ডান্স বা ঐক্য মডেল (Robertson-Walker বা R-W Concordance Model) বলা হয়। মডেলটি আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের ভিত্তিতে গঠিত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।