জুমবাংলা ডেস্ক: গরমকালে রাতের বেলায় আমরা সবাই ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক শুনে থাকি। বিশেষ করে নিঝুম রাতে এই ডাক বেশি শোনা যায়। ঘরের বাইরে বা কখনো কখনো ঘরের আনাচে কানাচে আমরা ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক শোনা যায়। কিন্তু আমরা অনেকেই জানেননা রাত হলে কেন ঝিঁঝিঁ পোকা ডাকে, এই ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক আসলে কী, এই ডাকের পেছনে লুকিয়ে রয়েছে কোন রহস্য।
এরা ঠান্ডা রক্তের পতঙ্গ বলে বেশি শীত পড়লে শুধু যে এদের ডাকাডাকি বন্ধ হয়ে যায় তাই নয়, এদের নড়াচড়াও বন্ধ হয়ে যায়। তবে গরমকালে এরা বেরিয়ে আসে। সাধারণত রাতেই বেরোয়, দিনে ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে থাকে। পাখি বা কোনো পতঙ্গভুক প্রাণীর আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য এটা করতে হয়।
রাতে বেরোনোর দুটি উদ্দেশ্য। একটি হলো খাবার সংগ্রহ। অন্যটি বংশবিস্তার। এ কাজে সাহায্য করে এদের একটানা ছন্দময় ডাক। ঝিঁঝি পোকা কিন্তু মুখে ডাকে না। সাধারণত দুই পাখার মধ্যে বিশেষ কায়দায় ঘর্ষণে এরা শব্দ তৈরি করে। একটি পাখা ৪৫ ডিগ্রি কোণে মেলে ধরে আর তার খসখসে তলের ওপর দিয়ে অন্য পাখার প্রান্ত বিশেষ কায়দায় টেনে নিয়ে যায়। এই ঘর্ষণে শব্দ সৃষ্টি হয়। আসলে ঝিঁ ঝিঁ পোকার চোখে যখন দিনের আলো পড়ে না, তখন অভ্যন্তরীণ ঘড়ির কারণে ‘পার’ প্রোটিনের তারতম্য শুরু হয় এবং সে বুঝতে পারে ডাকার সময় হয়েছে।
বেশির ভাগ পতঙ্গবিদের মতে, শুধু পুরুষ ঝিঁঝি পোকাই রাতে ডাকে। এর উদ্দেশ্য হলো স্ত্রী ঝিঁঝি পোকাকে আমন্ত্রণ জানানো। প্রায় ১০০ প্রজাতির ঝিঁঝি পোকা আছে। এদের এক-একটির ডাকের ধরনে সামান্য পার্থক্য থাকে। স্ত্রী ঝিঁঝি পোকা আবার এসব পার্থক্য ধরতে পারে। ফলে দুই ভিন্ন প্রজাতির মিলনের ভয় থাকে না।
নিঃশব্দ রাতে ঝিঁঝি পোকার ডাক বহু দূর থেকেও শোনা যায়। এ জন্যই ওরা সংগীতের জন্য রাতকে বেছে নিয়েছে। বেশি গরমে এদের খাদ্য বিপাক-প্রক্রিয়া বাড়ে, আর সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে পাখা ঝাপ্টানোর গতি। এই পারস্পরিক সম্পর্কটি এতো নিখুঁত যে, ঝিঁঝি পোকার ডাকের গতি শুনে তাপমাত্রা কত তা বলে দেওয়া যায়।
শব্দ দিয়ে ঝিঁঝিঁ পোকারা আমাদের বলে দেয় শীত অথবা উষ্ণতার মাত্রা। যখন তারা খুব দ্রুত ডাকে তখন খুব গরম। যখন ধীরে ধীরে ডাকে তখন ঠান্ডা। ১৫ সেকেন্ডে একটি ঝিঁঝি পোকা কতবার ডাকল, তা গুনে নিন এবং এর সঙ্গে ৪০ যোগ করুন। এই যোগফলকেই ঐ সময়ের আবহাওয়ার তাপমাত্রা (ফারেনহাইটে) বলে ধরে নেয়া যায়।
সূত্র: নিউজ ১৮
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।