টর্নেডোয় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য এক বছরের বেতন-ভাতা উৎসর্গ করলেন হুইপ স্বপন

জয়পুরহাট প্রতিনিধি:  জেলার ক্ষেতলাল ও কালাই উপজেলার বিভিন্ন অংশে ভয়াবহ টর্নেডোয় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তায় নগদ অর্থ বিতরণের জন্য এক বছরের সরকারি বেতন-ভাতার সমপরিমাণ অর্থ প্রদান করেছেন হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন।

আজ (২৮ মে) ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে তিনি এই অর্থ স্থানীয় প্রশাসনের হাতে হস্তান্তর করেন।

২৪ মে এবং ২৭ মে ভোরে টর্নেডোর আঘআতে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল ও কালাই উপজেলার গ্রামের পর গ্রাম লণ্ডভণ্ড হয়েছে। এতে দেয়াল চাপা পড়ে একই পরিবারের তিনজনসহ চারজনের মৃত্যু হয়।

স্থানীয় সংসদ সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ২৪ মে টর্নেডোর আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সফর শেষে ২৬ মে ঢাকায় ফিরে যান। গতকাল আবার টর্নেডো আঘাত হানলে তিনি আজ (  ২৮ মে) ঢাকা থেকে ছুটে এসে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান।

সারাদিন দুই উপজেলার বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সরজমিন পরিদর্শন করে অসহায় মানুষকে সান্ত্বনা দেন। পরিদর্শন শেষে কালাই উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক, দুই উপজেলার উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও, মেয়র, ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক প্রস্তুতি সভা করেন।

জেলা প্রশাসক জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ বিভিন্ন এলাকার বাড়িঘর, চাউলকল, পোলট্রি ফার্ম, দোকানপাট, স্কুল, মাদ্রাসা ও ধানের ব্যাপক ক্ষতির পরিসংখ্যান তুলে ধরেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত জনগণকে মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য নানামুখী পরামর্শ দেন।

সভায় হুইপ স্বপন প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঠিক তথ্য, তাদের আর্থিক অবস্থার চিত্র সম্বলিত তথ্য দ্রুত গতিতে সংগ্রহ করার জন্য মেয়র ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের ২০টি টিম মাঠে নামানোর জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান ও নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশ দেন। প্রতি ইউনিয়নে একাধিক প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তাদের টিম এই কার্যক্রম তদারক করার নির্দেশনা প্রদান করেন।

তিনি বলেন, ‘আমার নির্বাচনী এলাকার কোন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার মানবিক সহায়তার বাইরে থাকবে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সাথে কথা বলে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করা হবে।’

হুইপ স্বপন তাৎক্ষণিকভাবে সরকারি সহায়তার পাশাপাশি নগদ অর্থ বিতরণের জন্য তাঁর এক বছরের সরকারি বেতন-ভাতার সমপরিমাণ অর্থ ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য উৎসর্গ করেন।

তিনি ক্ষেতলাল উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাকিম মন্ডল ও ইউএনও আরাফাত রহমানের হাতে ৬ লক্ষ নগদ টাকা এবং কালাই উপজেলা চেয়ারম্যান মিনফুজুর রহমান মিলন ও ইউএনও মোবারক হোসেনের নিকট ৪ লক্ষ নগদ টাকা তুলে দেন।

এর আগে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য গত ২৬ মে ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদকে স্থানীয় এই সংসদ সদস্য ৪ লক্ষ টাকা প্রদান করেছিলেন।

এছাড়া আজ বিকালে ক্ষেতলালের খলিশাগাড়ি গ্রামে টর্নেডোতে নিহত পরিবারের হাতে ১ লক্ষ টাকা হস্তান্তর করেন তিনি। এ সময় ক্ষেতলাল উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও ছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল মজিদ মোল্লা ও মেয়র সিরাজুল ইসলাম বুলু উপস্থিত ছিলেন।

ইতোমধ্যে ত্রাণ মন্ত্রণালয় আজ জয়পুরহাট জেলার জন্য জরুরি সহায়তা হিসেবে অতিরিক্ত ১০০ বান্ডিল টিন ও নগদ ৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে।