নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর উত্তরায় মহাসড়কে শিক্ষার্থীদের তল্লাশিকালে টাকার বস্তা সহ আটক ব্যবসায়ীর পরিচয় মিলেছে। তার নাম কামরুজ্জামান সাঈদী (কে এস সোহাগ খান)। ফাইভ এস ট্রেডিং নামে একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের মালিক সে।
বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, এই কোম্পানিসহ বিভিন্ন ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে শত কোটি টাকা লোপাট করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বিএফআইইউ’র প্রধান মাসুদ বিশ্বাস তার ব্যবসায়ীক অংশীদার- বিভিন্ন সময়ে সোহাগ খানকে বিভিন্ন ব্যাক্তির কাছে এমন কথা বলতে শোনা গেছে। জব্দকৃত বস্তায় আড়াই কোটি টাকা ছিল বলে জানা গেছে।
বুধবার বিকেল ৪টার দিকে গাজীপুর–ঢাকা মহাসড়কের উত্তরার হাউজবিল্ডিং এলাকায় একটি প্রাডো গাড়ি থেকে সোহাগ খানকে আরেক সহযোগী সহ আটক করেছে সেনাবাহিনী। তাদের সাথে ৫০ কেজির পাটের বস্তা ভর্তি টাকা ছিল। তাকে যখন আটক করা হয় তখন ধারনা করা হচ্ছিল, ব্যাংক লুটের টাকা নিয়ে সে পালাচ্ছিল। নিরাপত্তার জন্য সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেছে। গাড়িটির নম্বর ঢাকা মেট্রো ঘ ১৫–১৫৮১। গাড়িটিতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের স্টিকার ছিল।
ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘আমি হেঁটে মহাসড়ক পার হচ্ছিলাম। ওই সময় একটি গাড়ি আমাকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। তখন ছাত্ররা তল্লাশি চালিয়ে ভেতরে থাকা দুই জনকে টাকার বস্তাসহ ধরে ফেলে। এর মধ্যে চালক দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে তারা গাড়িটি সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়।’
সোহাগ খানকে আটকের পরপর দায়িত্বরত সেনা কর্মকর্তা লে. কর্নেল মাহবুব উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘ওনার কথাবার্তায় আমরা অসংলগ্নতা পেয়েছি। এই টাকার উৎস সম্পর্কে আমরা এখনো নিশ্চিত না। এজন্য ওনাদেরকে টাকা সহ এরেস্ট করে নিয়ে যাচ্ছি। এই টাকা অবৈধ হলে তাদেরকে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করা হবে।’
হাউজবিল্ডিং এলাকায় ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারী কাতার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘গাড়িটি দেখেই আমাদের সন্দেহ হয়। পরে আমরা ছাত্ররা তল্লাশি করে গাড়ির ভেতর বস্তা দেখতে পাই। সেটি খুলে দেখি টাকায় ভরা!’
তিনি বলেন, ‘গাড়িটি ছিল সরকারি প্রাডো গাড়ি। গাড়িতে ওগুলো কিসের টাকা, সেটি জানতে চাইলে গাড়িতে থাকা দুই জনের কেউ–ই সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে আমরা টাকার বস্তা ও গাড়িসহ দুজনকে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেই।’
জানা গেছে, আটকের পর সেনা সদর দপ্তরে তাদেরকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে অর্থের উৎস নিশ্চিত হয়ে গভীর রাতে ছেড়ে দিয়েছে সেনাবাহিনী।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও অগ্রণী ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও টিন নাম্বার ব্যবহার, খেলাপি ঋণের তথ্য গোপন এবং একই সম্পত্তি দুই ব্যাংকের কাছে বন্ধক রেখে অগ্রণী ব্যাংক থেকে ৪১ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ। পাশাপাশি জামানতের ক্ষেত্রে সম্পত্তির কয়েকগুণ অতিমূল্যায়ন করেছেন তিনি। এভাবে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ৭৮ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন সোহাগ, এমন তথ্য জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা।
ইসলামী ব্যাংকে সর্ববৃহৎ ঋণ জালিয়াতি, ৩৪০০ কোটি টাকা এস আলমের পকেটে
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।