জুমবাংলা ডেস্ক: লাল শাপলার রঙ্গে রঙ্গিন গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বিল। উপজেলা ৫টি বিলে এখন লালের সমারহ। বিলের লাল শাপলা দেখে মনে হয় কেউ যেন স্বযত্নে বিল জুড়ে লাল গালিচা পেতে রেখেছেন। বিলের কালো পানিতে লাল শাপলা অপরূপ সৌন্দর্য ছড়িয়ে সবাইকে আকৃষ্ট করছে।
বিলের প্রকৃতিক এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থী আসছেন। তারা নয়নাভিরাম প্রকৃতির এ অপার সৌন্দর্য উপভোগ কারছেন। প্রতিবছরই এসব বিলে লাল শাপলার উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। লাল শাপলা ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য বাড়িয়ে দিচ্ছে বাড়তি আকর্ষণ।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার এসব বিলে মে মাসের দিকে জমিতে জোয়ার ও বর্ষার পানি এসে যায়। এ পানিতেই প্রতিবছর প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেয় লাল শাপলা।
সরকারি ভাবে লাল শাপলা সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়ে এসব বিলে নৌ বিহারের ব্যাবস্থা করা হলে এলাকার মানুষের আর্থসামজিক ব্যবস্থার উন্নতি হবে। এছাড়া লাল শাপলা দেশের অন্যান্য জেলায় সবজি হিসেবে রপ্তানির উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে এলাকার মানুষ শাপলা সংগ্রহ করে বাড়তি আয়ের সুযোগ পাবেন বলে স্থানীয়রা মত দিয়েছেন।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার জোয়াড়িয়া গ্রামের বিপদ ভঞ্জন হালদার (৬৭) বলেন, এসব বিলের সাদা-সবুজ শাপলা জন্মাত। বিগত ১৯৮৮ সালের বন্যার পর থেকে এখানে লাল শাপলা জন্মাতে শুরু করে। চারিদিক লালে লালে একাকার হয়ে যায়। লাল শাপলার বিল দেখতে এখানে অনেকেই দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন। লাল শাপলার অভুতপূর্ব দৃশ্য আগত সবার মন ভরিয়ে দেয় ।
কোটালীপাড়া উপজেলার বর্ষাপাড়া গ্রামের ইব্রাহিম মিয়া (৪৫) বলেন, লাশ শাপলা বাংলার চিরায়ত রূপকে আরো অপরূপ করেছে। এখানে এসে লাল শাপলার সৌন্দর্য দেখে মন ভরে গেছে। ভ্রমণ পিপাসুরা এখানে এসে বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করে এক বুক অনন্দ নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবেন।
টুঙ্গিপাড়া গোপালপুর গ্রামের কার্ত্তিক বালা (৩৫) বলেন, এ শাপলা খেতে একটু কষ্টা। তাই বাজারে এ শাপলার চাহিদা একেবারেই কম। তাই বিক্রিও কম হয়। প্রতি বছর শাল শাপলার উৎপাদন বাড়ছে। ধান চাষ মৌসুমে জমি থেকে শাপলা পরিস্কার করতে বাড়তি ব্যয় করতে হয়। এ কারণে ধান চাষে ব্যয় বৃদ্ধি পায়। লাল শাপলা সৌন্দর্য বর্ধনই করছে। আমাদের তেমন লাভ হচ্ছে না।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান লাল বাহাদুর বিশ্বাস বলেন, সরকারি ভাবে লাল শাপলা সারা বছর সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়ে এসব বিলে নৌ বিহারের ব্যাবস্থা করা হলে এলাকার মানুষের আর্থসামজিক ব্যবস্থার উন্নতি হবে । এছাড়া লাল শাপলা দেশের অন্যান্য জেলায় সবজি হিসেবে রপ্তানির উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে এলাকার মানুষ শাপলা সংগ্রহ করে বাড়তি আয়ের সুযোগ পাবেন । তখন কৃষকসহ স্থানীয়রাও লাভবান হবেন।
ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, কোটালীপাড়া উপজেলার ধারবাসাইলে শেখ হাসিনা আদর্শ কলেজ সংলগ্ন লাল শাপলার বিল সংরক্ষণ করা হয়েছে। জায়গাটির নাম দেয়া হয়েছে শাপলালয়। প্রতিদিনই মানুষ লাল শাপলা দেখতে ওই বিলে যান। এভাবে টুঙ্গিপাড়ার শাপলার বিল সংরক্ষণ করার দাবি জানাচ্ছি।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জামাল উদ্দিন বলেন, লাল শাপলা সবজি হিসোব খাওয়া যায়। এতে প্রচুর পরিমান আয়রন, সিলিকন ও আয়োডিন রয়েছে। এ উপাদান গুলো মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী। লাল শাপলা বিলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে। এটি সংরক্ষণের পাশাপশি সবজি হিসেবে অন্য জেলায় পাঠানোর ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল মামুন বলেন, লাল শাপলার বিলকে ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ জন্য যা যা করা দরকার তা আমরা করব।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।