টেকনোলজি ব্যবহারের নিরাপদ উপায়

Safe technology

বিপদ বা হুমকির কার্যক্রম থেকে নিরাপদ বা মুক্ত থাকার নামই হচ্ছে নিরাপত্তা। কিন্তু তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তিতে কম্পিউটার নিরাপত্তা হচ্ছে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার ক্ষতি না হওয়া বরং সিস্টেমকে সুরক্ষা করা সিস্টেমের তথ্যের অপব্যবহার রােধ করা ইত্যাদি। এসবকে নিরাপত্তা বােঝায় অনলাইনে ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে-নিরাপদের সমস্যা দেখা যাচ্ছে। তবে অনলাইনে নিরাপদ থাকার প্রথম উপায় হচ্ছে নিজ সতর্ক থাকা।

Safe technology

কেননা সবসময় কিছু অসাধু মানুষ অনলাইনে নিজের পরিচয় গােপন রেখে ঘুরাফেরা করছে তারা সুযােগ পেলে আপনার ক্ষতি করবে। সে কারণে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, পাসওয়ার্ড বা বিভিন্ন একাউন্ট ইনফরমেশন শেয়ার না করা। অনলাইনে কোনাে massage বা Text box-এ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য না পূরণ করা। সবকিছু বিষয়ে সতর্ক থেকে অনলাইন ডেটা ব্যবহার করা। অপরিচিত ব্যক্তির সাথে যােগাযােগ না করা। অপ্রয়ােজনীয় বা লােভনীয় সাইটে প্রবেশ না করাই উত্তম। কেননা এই সাইটগুলাে আপনার তথ্যকে গােপনে ট্রান্সফার করতে পারে। এভাবেই অনলাইনে নিরাপদ থাকা যায়।

অপরিচিত নম্বর থেকে আসা কোনো কলে ব্যক্তিগত বা আর্থিক তথ্য দেবেন না। কোনোভাবেই নিশ্চিত না হয়ে তাদের বিশ্বাস করবেন না, বিশেষ করে যদি তারা বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে কল শেষ করতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। সবময় কলারের নাম, নম্বর, কোম্পানির নাম ইত্যাদি জিজ্ঞেস করে নিন। অনেক ক্ষেত্রে স্ক্যামাররা ভুয়া তথ্য ব্যবহার করে, তাই এগুলো শোনার পরেও অপরিচিত কলারকে বিশ্বাস না করাই শ্রেয়।

সংবাদের শিরোনাম আসল না ভুয়া যাচাই করুন: ইন্টারনেটজুড়ে ভুয়া ও প্রতারণামূলক খবর প্রচুর। এসব খবর মানুষের আবেগকে প্রভাবিত করে। অনেকেই দ্রুত ও অসতর্ক সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলতে পারেন, যা বয়ে আনতে পারে বিপদ। এ ধরনের ভুল তথ্য দ্রুত শনাক্ত করতে বিভিন্ন লক্ষণ চিনতে শিখুন। ওয়েব ব্রাউজ বা অনলাইনে ঘুরে বেড়ানোর সময় সতর্ক থাকুন ও নিরাপদ ব্রাউজিং অনুশীলন অনুসরণ করুন। প্রথমত, সবসময় ব্রাউজার ‘আপডেট’ করুন এবং চেষ্টা করুন ব্রাউজারের সব নিরাপত্তা সেটিং সেটআপ করার। এ ছাড়া, ‘পপ-আপ ব্লকার’ চালু করুন, অদ্ভুত বিজ্ঞাপন বা ‘পপ-আপ’-এ ক্লিক করা এড়িয়ে চলুন। অর্থাৎ কোনো ওয়েবসাইট ব্যবহারের সময় যখন বিভিন্ন বিজ্ঞাপন স্ক্রিনের ওপর ভেসে ওঠে সেখানে ক্লিক না করাই ভাল।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কী কী শেয়ার করেন সে সম্পর্কে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। পুরো নাম, বাড়ির ঠিকানা, জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর, বা আর্থিক বিবরণের মতো ব্যক্তিগত তথ্য কখনই প্রকাশ করবেন না। এমনকি, ভ্রমণ পরিকল্পনা শেয়ার করা এবং ভ্রমণের সময়ে বর্তমান অবস্থান প্রকাশ করা এড়িয়ে চলুন। আমাদের ডিজিটাল লিটারেসি বাড়ানো উচিত। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত সাইবার অপরাধের শিকার হয়ে কোনো কিশোর-কিশোরী আত্মহত্যা না করে, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো ধরনের আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এ ছাড়া ওয়ার্কশপ, সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন, গোলটেবিল আলোচনা– এসবই ঢাকাকেন্দ্রিক। ইন্টারনেট ব্যবহার শুধু ঢাকাতেই হয় না, প্রত্যন্ত এলাকার ছেলেমেয়েরাও ইন্টারনেট ব্যবহার করছে।

আমাদের যেসব নারী শ্রমিক বিদেশে কাজ করেন, তাঁদের জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তিটা দরকার। সে ক্ষেত্রে সক্ষমতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। কারণ, অনেক নারী শ্রমিক ডিজিটাল দুনিয়ায় হয়রানির শিকার হন এবং তাঁদের কাছ থেকে প্রতারকরা অনেক টাকা হাতিয়ে নেয়। বিদেশে কর্মরত এসব ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর নারী শ্রমিকের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করতে হবে।

অনলাইনে নিরাপদ থাকতে কম্পিউটার এবং মুঠোফোনে হালনাগাদ অপারেটিং সিস্টেম, ব্রাউজার এবং সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে। শুনতে অবাক লাগলেও ঘটনা কিন্তু সত্যি। কারণ, হালনাগাদ অপারেটিং সিস্টেম, ব্রাউজার এবং সফটওয়্যারের নিরাপত্তাব্যবস্থা বেশ শক্তিশালী থাকে। ফলে ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় সাইবার হামলার আশঙ্কা থাকলে ব্যবহারকারীদের সতর্ক করার পাশাপাশি হামলা প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে।