জুমবাংলা ডেস্ক : শেখ হাসিনা সরকারের সময় ভারতের যাবতীয় অন্যায় আবদার মেনে নেওয়া হতো। বাংলাদেশের চেয়ে ভারতের স্বার্থকেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া হতো। বাংলাদেশের ইলিশের সংকট থাকতেও ভারতকে টনকে টন ইলিশ দেওয়া হতো। তবে সরকার পরিবর্তনের পর পরিস্থিতিও পরিবর্তন হয়েছে।
এবার দুর্গাপূজায় ভারতে ইলিশ পাঠানো হবে না বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এদিকে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে গেল সোমবার ভারত থেকে ২ লাখ ৩১ হাজার মুরগির ডিম আমদানি করা হয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে বন্দর দিয়ে আরও ৪৭ লাখ ডিম আমদানি করা হবে বলে জানা গেছে। তবে এ নিয়ে বাংলাদেশকে অনেকটা কটাক্ষ করেই সংবাদ প্রকাশ করেছে ভারতীয় কয়েকটি গণমাধ্যম।
‘ইলিশ বন্ধ, তো? ভারত থেকে যাওয়া আড়াই লাখ ডিম পাতে পড়বে বাংলাদেশে!’- এমন শিরোনামে একটি খবর প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজ।
তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা যখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন পূজার উপহার হিসেবে আসত পদ্মার ইলিশ। কিন্তু এবার ইউনূস সরকার সেই প্রথা ভেঙে জানিয়ে দিয়েছে যে, এবার আর বাংলায় (পশ্চিমবঙ্গে) ইলিশ পাঠনো হবে না। ইলিশ বন্ধ, তো? ভারত থেকে এবার আড়াই লাখ ডিম পাতে পড়ছে বাংলাদেশের!
গুণমানের বিষয়ে ঘটনাচক্রে ভারত থেকে পাঠানো ডিমের ওপর বাংলাদেশকে ‘অন্ধের মতো ভরসা করতে হবে’ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে জি নিউজের প্রতিবেদনে। কারণ হিসেবে বেনাপোলের প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কর্মকর্তা ডা. বিনয় কৃষ্ণ মণ্ডলের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘তাদের ডিম পরীক্ষার কোনো যন্ত্রপাতিই নেই। ভারতের চুক্তির ওপর ভিত্তি করে ডিমের ছাড়পত্র দেয়া হবে। খালি চোখে কোনও সমস্য়া দেখা দিলে তা খতিয়ে দেখা হবে।’
এছাড়া “ভারতের ডিমেই পুষ্টি বাংলাদেশের! ইলিশ না দিলেও ডিমের ‘আগুন’ দাম ঠেকাতে ভরসা INDIA” শিরোনামে খবর প্রকাশ করেছে আরেক ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
দেশটির অন্যতম জনপ্রিয় এ গণমাধ্যমটি বলেছে, চলতি বছর দুর্গাপূজায় বাংলাদেশের অন্তর্বতীকালীন সরকার ভারতে ইলিশ পাঠাচ্ছে না বলেই শোনা যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই সে দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নাকি এমনই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। তবে ইলিশ রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও ভারত থেকে কিন্তু লাখ-লাখ ডিম পাতে পড়ছে বাংলাদেশের।
বাংলাদেশের ডিম আমদানি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি পশ্চিমবঙ্গের বহুল প্রচারিত সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারও। ‘একটি ডিম কিনতে হতো ১৬ টাকায়! ভারত থেকে গাড়ি বাংলাদেশে যেতেই অর্ধেক দামে ‘মধ্যবিত্তের প্রোটিন’- শিরোনামে খবর প্রকাশ করেছে তারা।
তারা লিখেছে, “বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হলেও স্থিতিশীল নয় সে দেশের বাজারদর। নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর সঙ্গে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে মুরগির ডিমের দাম। সাধারণ মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে ‘সস্তার প্রোটিন’। বাংলাদেশে একটি ডিম কিনতে হচ্ছিল ১৫-১৬ টাকায়। আড়তদাররা বলছেন, প্রয়োজনের তুলনায় যোগান কম বলে এই অবস্থা। তবে ভারত থেকে পড়শি দেশে (বাংলাদেশ) দু’লক্ষ ৩১ হাজার ৪০টি (১৩ হাজার ৯১০ কেজি) মুরগির ডিম রফতানি হতেই এক লাফে নামল সেই দাম।’
এদিকে ডিম নিয়ে ভারতীয় এসব গণমাধ্যম কটাক্ষ করলেও দেশটির মাছ ব্যবসায়ীরা দুর্গাপূজার আগে ইলিশ চেয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। ইলিশ রফতানির কথা উল্লেখ করে সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের কাছে আবেদন করেছে ভারতের ফিস ইমপোর্টার’স অ্যাসোসিয়েশন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।