রাজধানীতে ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালে ১২ শিশু ভর্তি হয়েছে। জুন ও জুলাই মাসে ডেঙ্গুজ্বরের কারণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালটিতে দুই শিশু মারা গেছে। একমাসে ডেঙ্গুজ্বরের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৬৯ শিশু।
হাসপাতালটির কর্মকর্তারা জানান, প্রতিদিন গড়ে ২০ জন শিশু ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত অবস্থায় বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা নিয়ে বাসায় ফিরে যাচ্ছে। গত দুই মাসে সহস্রাধিক শিশু ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, শিশু হাসপাতালে ১৭টি ওয়ার্ড ও আইসিইউ মিলিয়ে ৬২০ জন শিশু ভর্তি রয়েছে, যার মধ্যে ৪০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, গত বছর ডেঙ্গু রোগীদের জন্য বিশেষ সেল খোলা হলেও এ বছর হাসপাতাল সংস্কারের কারণে তা সম্ভব হয়নি।
হাসপাতালের নিচতলার ১ নম্বর ওয়ার্ডের ২৪ নম্বর বেডে ১০ দিন ধরে ভর্তি আছেন সায়মা আক্তার (৫)। তিনদিন আইসিইউতে থাকার পর তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে।
তার অভিভাবক মাহবুব আলম বলেন, ‘সায়মার শরীরে প্রথমে জ্বর আসে। তাপমাত্রা যখন ১০৪ ডিগ্রি হয় তখন তাকে মুগদা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার উন্নতি না হলে তাকে শিশু হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এখন সে ভালো আছে।’
৮ নম্বর ওয়ার্ডে ২৫টি শয্যার মধ্যে শিশু ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দুইজন। সাতমাস বয়সী মূলতাহান ডেঙ্গু জ্বরের কবলে তিনদিন ধরে হাসপাতালে শয্যাশায়ী। তার মা সুলতানা আফরিন বলেন, ‘আমার ছেলের শরীর এখনো ঠিক হয়নি, স্যালাইন চলছে।’ ডেঙ্গু চিকিৎসায় শিশু হাসপাতালের ব্যবস্থাপনায় সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. সুষ্ময় প্রামানিক বলেন, জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে ডেঙ্গু আক্রান্তের আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে। এডিস মশা আক্রান্ত কোনো মানুষকে কামড় দিলে সেই মশা ইনফেক্টেড হয়ে যায়। সেই মশা কোনো সাধারণ মানুষকে কামড়ালে তিনিও ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হবেন। ফলে ডেঙ্গু রোগের প্রাদূর্ভাব বাড়ছে।
হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের প্রধান সহকারী প্রফেসর ডা. শফিউল হক বলেন, শরীরে র্যাশ বা চোখ লাল হওয়া ছাড়াও শরীরের ভেতরে ও বাইরে ব্লিডিং হয়। তাই বর্তমানে ডেঙ্গু সনাক্ত করা সম্ভব নয়। এ রোগ থেকে বাঁচাতে শিশুদের দেহের তাপমাত্রা বাড়লেই দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. সায়িদ শফি আহমেদ বলেন, ‘ডেঙ্গুজ্বর নিরাময়ে আমাদের হাসপাতালের মত আধুনিক স্বাস্থ্য পরিসেবা দেশের অন্য কোনো হাসপাতালে নেই।’
দুই শিশুর মৃত্যু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অনেক শিশুকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আমাদের এখানে পাঠানোর কারণে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।