জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার নামে ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডের তথ্য হাতিয়ে নিতেন তারা। এরপর কার্ড থেকে অর্থ আত্মসাৎ করা এ চক্রের মূলহোতাসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গ্রেফতাররা হলেন- চক্রের মূলহোতা ইসমাইল মাতুব্বর ওরফে আসিফ ইকবাল (৩৩) ও তার সহযোগী সাদ্দাম হোসেন (৩৩)।
শনিবার (২০ আগস্ট) মাদারীপুরের শিবচর থানার দত্তপাড়া ইউপির সূর্য নগর এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
রোববার (২১ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. রেজাউল মাসুদ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড থেকে কর্মরত এবং অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সাধারণ চিকিৎসা, জটিল ও ব্যয়বহুল রোগের চিকিৎসা, শিক্ষাবৃত্তি, যৌথবীমা ও দাফন/অন্তেষ্টিক্রিয়া অনুদানের অর্থ আবেদনকারীদের ব্যাংক হিসাবে ইএফটির মাধ্যমে পাঠানো হয়। এ ইএফটির তালিকা বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
প্রতারক চক্রটি ওয়েবসাইটের ইএফটির তালিকার তথ্য ব্যবহার করে বিভিন্ন মোবাইল ফোন নম্বরের মাধ্যমে বোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারী পরিচয় দেয় আবেদনকারীরদের কাছে। এক পর্যায়ে আর্থিক সহায়তা পেতে সহযোগিতার কথা বলে আবেদনকারীর কাছ থেকে তাদের ব্যাংকের ডেবিট, ক্রেডিট কার্ড নম্বর এবং সিভিসি/সিভিভি (Card Verification Value/Code) নম্বর সুকৌশলে সংগ্রহ করতো চক্রটি।
পরে চক্রটি এসব কার্ডের নম্বর ব্যবহার করে অবৈধ ট্রানজেকশন করতে চাইলে রিয়েল টাইমে ব্যাংকের সার্ভার থেকে স্বংয়ক্রিয়ভাবে ওটিপি গ্রাহকের মোবাইলে চলে আসে। তখন চক্রটি বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ভুয়া পরিচয় দিয়ে গ্রাহকের সঙ্গে ফোনে কথা বলে জানায়, ব্যাংক থেকে আপনার কাছে আপনার আবেদন করা সিরিয়াল নম্বর পাঠানো হয়েছে। ওই নম্বরটি আমাদের জানান।
আসলে ওই নম্বরটিই ট্রানজেকশনের স্বংয়ক্রিয় ওটিপি যা ব্যবহার করে প্রতারকরা গ্রাহকের ডেবিট, ক্রেডিট কার্ডের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়।
সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়ে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারে অভিযোগ আসে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে ইসমাইল মাতুব্বর ওরফে আসিফ ইকবাল জানান, তিনি তার অন্যান্য সহযোগীদের যোগসাজশে বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড থেকে অনুদানের অর্থ আবেদনকারীদের (সরকারী কর্মচারী) কাছ থেকে প্রায় এক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
এছাড়া আগেও বিভিন্ন প্রতারণার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইকবাল গ্রেফতার হন। পরে জামিনে বের হয়ে এসে একই ধরনের কাজ করে আসছেন।
গ্রেফতারদের নামে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান রেজাউল মাসুদ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।