জুমবাংলা ডেস্ক : তারল্য সংকট মেটাতে কারেন্সি সোয়াপের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ডলার জমা রেখে টাকা ধার নেওয়া শুরু করেছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। কারেন্সি সোয়াপ বা টাকা-ডলার অদলবদল শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১২টি ব্যাংক ৫৮ দশমিক ৮০ কোটি (৫৮৮ মিলিয়ন) ডলার জমা রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে।
এর বিপরীতে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা ধার নিয়েছে। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কিছুটা বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্রে জানা যায়, ৩০ মেয়াদি এসব টাকা-ডলার অদলবদলের সোয়াপ হয়েছে। ৩০ দিন শেষ হলেই ব্যাংকগুলো টাকা দিয়ে ডলার নিয়ে যাবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে টাকা জমা রেখে কোনো ব্যাংক এখনো ডলার নেয়নি। মূলত যাদের রেমিট্যান্স বেশি আসছে, তারাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে সোয়াপ করছে।
এখন আনুষ্ঠানিকভাবে ১১০ টাকা দরে ব্যাংকগুলো প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কিনছে। এই দামে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ডলার অদলবদল করেছে ব্যাংকগুলো। বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার নিয়ে সমপরিমাণ টাকা দিয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, বেশ কিছু ব্যাংক ডলার জমা দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা নিয়েছে। মূলত যাদের রেমিট্যান্স বেশি আসছে, তারাই সোয়াপ করছে। আবার যেসব ব্যাংকের তারল্য সংকট রয়েছে তারাও সোয়াপ করছে।
ব্যাংকগুলো ডলার জমা দিয়ে টাকা ধার নেওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ কিছুটা বেড়েছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের হিসাবপদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার। ২০ ফেব্রুয়ারি বেড়ে হয় ২০ দশমকি ১৯ বিলিয়ন ডলার। গত সোমবার দিন শেষে রিজার্ভ আরও বেড়ে ২০ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসেবে ওই দিন শেষে রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি টাকা-ডলার অদলবদল পদ্ধতি চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন এ ব্যবস্থার ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ডলার-টাকা অদলবদল করতে পারছে। এ পদ্ধতিতে টাকা বা ডলার জমা রেখে ৭ থেকে সর্বোচ্চ ৯০ দিনের জন্য বিপরীত মুদ্রা নিতে পারবে ব্যাংক। যে মুদ্রা নেওয়া হবে নির্ধারিত মেয়াদ শেষে সেই মুদ্রা ফেরত দিতে হবে।
ব্যাংক খাতের সংশ্লিষ্ট বলছেন, টাকা-ডলার অদলবদলের এ ব্যবস্থা উভয়পক্ষের জন্যই লাভজনক। কারণ, উদ্বৃত্ত ডলারের বিপরীতে ব্যাংকগুলো তাৎক্ষণিকভাবে টাকা পেয়ে যাবে। আবার নির্ধারিত সময় পর টাকা ফেরত দিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সমপরিমাণ ডলার পেয়ে যাবে। এ ব্যবস্থার আওতায় সর্বনিম্ন ৫০ লাখ ডলার বা তার সমপরিমাণ টাকা অদলবদল করা যাচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো অনেক দিন ধরেই ডলার ও টাকার সংকটে ভুগছে। এ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে কোনো কোনো ব্যাংকের কাছে ডলার হোল্ডিং বেশি থাকলেও টাকার সংকট রয়েছে। আবার কারো কাছে নগদ অর্থ রয়েছে কিন্তু ডলার সংকট রয়েছে। এ রকম ক্ষেত্রে যার কাছে যে মুদ্রা থাকবে সাময়িক সময়ের জন্য বিপরীত মুদ্রা নিতে পারবে। তুলনামূলক কম সুদ ও সহজ শর্তে অদলবদল সুযোগের কারণে বাজারে তারল্য সংকট কমতে পারে।
দেশে গত দুই বছর ধরে ডলার-সংকট চলছে। এর ফলে রিজার্ভ কমে প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। ডলার-সংকট সামাল দিতে আমদানি নিয়ন্ত্রণসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।