প্রায় দেড় যুগের নির্বাসন ভেঙে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ব্যক্তিগত বা দলীয় অর্জনে সীমাবদ্ধ না রেখে বাংলাদেশের ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসেবে মূল্যায়ন করতে চান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন প্রমাণ করে, একজন বাংলাদেশি নাগরিক ও রাজনৈতিক নেতার নিজ দেশে ফেরার অধিকারকে রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের মাধ্যমে দীর্ঘদিন আটকে রাখা সম্ভব নয়। স্বৈরাচার যত শক্তিশালীই হোক, জনগণের রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তিকে চিরতরে দমন করা যায় না।
পোস্টে তিনি আরও লেখেন, রাজনৈতিক ভিন্নমতের কারণে তারেক রহমান ও তার পরিবার যেভাবে রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং দীর্ঘদিন নির্বাসনে থাকতে বাধ্য হয়েছেন, তা গত দেড় দশকের কর্তৃত্ববাদী শাসনের এক উন্মুক্ত দলিল। তবে এই প্রত্যাবর্তন সম্ভব হয়েছে হাজারো শহীদের আত্মত্যাগ, অসংখ্য আহত মানুষের ত্যাগ এবং গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সৃষ্ট নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার কারণে।
তিনি উল্লেখ করেন, এই বাস্তবতা কোনো ক্ষমতার অনুগ্রহ নয়, বরং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত লড়াইয়ের ফসল।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে ভিন্নমত কোনো অপরাধ নয়, বরং তা হবে নাগরিকের অধিকার। রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে কাউকে রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার হতে হবে না; বরং রাষ্ট্রই তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশে গণতন্ত্র শুধু নির্বাচনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সংগঠিত হওয়ার অধিকার এবং ন্যায্য রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার পরিবেশ নিশ্চিত করাই হবে গণতন্ত্রের মূল সংজ্ঞা।
এনসিপির এই নেতা বলেন, বিগত দেড় দশকের অবরুদ্ধ রাজনৈতিক পরিসর ভেঙে আজ যে মুক্ত বাংলাদেশের পথে দেশ এগোচ্ছে, সেখানে আইনের শাসন ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠাই হবে প্রধান লক্ষ্য। এই লড়াই যেন কোনো ব্যক্তি বা দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে এবং জনগণের সার্বভৌমত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা পায়—এটি নিশ্চিত করা প্রত্যেক রাজনীতিবিদের দায়িত্ব।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন দেশের বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চাকে আরও শক্তিশালী করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। তবে নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় সহাবস্থান, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সুস্থ রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার সংস্কৃতি গড়ে তোলাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
তিনি তারেক রহমানকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, বেগম খালেদা জিয়া যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে দেশের রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারেন—এই কামনা করেন তিনি। একই সঙ্গে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের সংগ্রামে তারেক রহমানের অংশগ্রহণ জনগণের প্রত্যাশা ও ইতিহাসের দায় পূরণে ভূমিকা রাখবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



