জুমবাংলা ডেস্ক: ব্যয়সংকোচন নীতির অংশ হিসেবে ১৫ শতাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের কথা ভাবছে এইচএসবিসি ব্যাংক। হংকং বিক্ষোভ ও করোনাভাইরাসের চ্যালেঞ্জ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে ৪৫০ কোটি ডলার ব্যয় সাশ্রয় করতে চাচ্ছে লন্ডনভিত্তিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটি। খবর বিবিসি ও ব্লুমবার্গের।
এশিয়া থেকে বড় আকারের মুনাফা করা আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি এখনো একজন স্থায়ী শীর্ষ নেতৃত্ব খুঁজছে। বর্তমানে নোয়েল কুইন অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান হিসেবে কাজ করছেন। কুইন পরিচালনা পর্ষদকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছেন ওই পদের জন্য তিনিই যোগ্যতর ব্যক্তি।
মঙ্গলবার গত বছরের আয় ব্যয়ের হিসাব প্রকাশের অংশ হিসেবে দেয়া এক বিবৃতিতে কুইন বলেন, আমাদের কিছু ব্যবসায় ভালো ফলাফল পাচ্ছি না। এ কারণে বিনিয়োগকারীদের মুনাফা বাড়িয়ে দিতে আমরা আমাদের পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনছি।
২০২২ সাল নাগাদ ব্যয় সাশ্রয়ী ওই পদক্ষেপগুলোর মাধ্যমে ৪৫০ কোটি ডলার ব্যয়সংকোচন ও সম্পদের পরিমাণ ১০ হাজার কোটি ডলার কমাতে চাচ্ছে এইচএসবিসি।
গত বছরে এইচএসবিসির করপূর্ব মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৩৫ কোটি ডলার। ২০১৮ সালের ১ হাজার ৯৮৯ কোটি ডলার মুনাফার চেয়ে গত বছরে বার্ষিক মুনাফা ৩৩ শতাংশ কমেছে। ২০১৯ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে ৩৯০ কোটি ডলার করপূর্ব লোকসান করেছে বলে জানায় ব্যাংকটি।
ব্লুমবার্গকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে কয়েকটি ব্যবসা গুটিয়ে নেয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন কুইন। তিনি বলেন, আগামী তিন বছরের মধ্যে কর্মীবহর ২ লাখ ৩৫ হাজার থেকে কমিয়ে দুই লাখ করা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা ১০ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের পূর্বাভাস দিলেও বাস্তবে তা আরো বড় অংকের হিসাবে দেখা গেল।
সাবেক সিইও জন ফ্লিন্টের অপসারণের পর গত বছরের আগস্টে ভারপ্রাপ্ত সিইও নিযুক্ত হয়েছিলেন ৫৭ বছর বয়সী কুইন। এইচএসবিসির ঝানু এ ব্যাংকার আগামী ছয় থেকে ১২ মাসের মধ্যে শীর্ষ পদে স্থায়ীভাবে নিযুক্তির প্রত্যাশা করছেন।
হংকং শেয়ারবাজারে গতকাল এইচএসবিসির শেয়ারদরে ছয় মাসের সর্বোচ্চ দরপতন (৩ দশমিক ২ শতাংশ) হয়েছে। ব্যাংকটির জন্য ২০২০ সাল খুবই নাজুক বলে মনে করছেন কর্তাব্যক্তিরা।
মূলত ইউরোপীয় ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বৃহত্সংখ্যক ওই কর্মী ছাঁটাইয়ে যাচ্ছে এইচএসবিসি। এছাড়া ব্যাংকটি তাদের রিটেইল নেটওয়ার্ক ৩০ শতাংশ সংকুচিত করার কথা ভাবছে। এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের অবস্থান মজবুত করার কথা ভাবছে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটি।
এইচএসবিসি রূপান্তরে চেয়ারম্যান মার্ক টাকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নতুন কৌশলপত্র গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।
বর্তমানে ব্যাংকটি উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার ৫০টিরও বেশি দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যুক্তরাজ্যে ব্যাংকটিতে ৪০ হাজার কর্মী কাজ করছেন বৈশ্বিক ব্যাংকিং ও বাজার এবং ইউরোপে বাণিজ্যিক ব্যাংকিং ইউনিটগুলোতে ৭৩০ কোটি ডলারের রাইট অফ মীমাংসায় এইচএসবিসির মুনাফায় পতন হয়েছে।
এইচএসবিসির প্রধান বাজারগুলোতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে শ্লথগতিতে কৌশলপত্র ঢেলে সাজানো দরকার হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে করোনাভাইরাসের প্রভাব, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ব্রিটেনের প্রলম্বিত প্রস্থান এবং বিশ্বব্যাপী নিম্ন সুদহার এতে প্রভাব ফেলেছে। মুনাফা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এক দশকের মধ্যে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো নিজেদের ঢেলে সাজাচ্ছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ব্যাংকটি।
এইচএসবিসির মোট আয়ের অর্ধেক এবং মোট মুনাফার ৯০ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করছে এশিয়া। ব্যাংকটির বাণিজ্যিক ও রিটেইল ব্যাংকিংয়ের তুলনায় বিনিয়োগ ব্যাংকিংয়ের মতো বিভাগগুলোর পারফরম্যান্স ভালো নয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।