জুমবাংলা ডেস্ক: শীত এলে খেজুরের রস থাকবে না- এটা একসময় ছিলো অবিশ্বাস্য। শীতের সকালে টাটকা খেজুরের রস এবং রস দিয়ে তৈরি পিঠে-পায়েস, গুড়-পাটালি সকলের কাছেই ছিলো লোভনীয়। কিন্তু সে খেজুরের রস এখন যেনো আর খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না।
যারা খেজুরের রস আর গুড় খুঁজছেন তারা কাছাকাছি হলে একবার গাজীপুরের কালিয়াকৈর ঘুরে আসতে পারেন।
কালিয়াকৈর উপজেলার আন্ধারমানিক এলাকায় অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফিল্ম সিটির ১০৫ একর জায়গা জুড়ে রয়েছে চার শতাধিক খেজুর গাছ। এসব গাছ থেকে প্রতিবছর শীতকালীন খেজুরের রস সংগ্রহ করা হয়। এবছরেও খেজুরের রসের জন্য প্রায় ৩৫০টি খেজুর গাছ প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব গাছ থেকে প্রতিদিন দেড়শো লিটার রস সংগ্রহ করা হয়।
ফিল্ম সিটিতে গিয়ে দেখা যায়, মূল ফটক থেকে শুরু করে দু’পাশের দীঘির পাড়ে সারি সারি ছোটবড় খেজুর গাছ। এসব খেজুর গাছে কয়েক মাস ধরে ৪ জন গাছি ও ৩ জন সহকারী অক্লান্ত পরিশ্রম করে রস সংগ্রহের উপযোগী করে তুলেছে। গত সপ্তাহ থেকে রস সংগ্রহ ও গুড় উৎপাদন শুরু হয়েছে। সকাল হতে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ছুটে এসেছে রস খেতে। কেউ রস ওখানে বসেই খাচ্ছেন, কেউবা বাসার জন্য নিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা নাহিদ হোসেন বলেন, আমাদের এলাকাটি শিল্প অঞ্চল, এখানে খেজুরের রস পাওয়া সৌভাগ্যও বটে। এফডিসিতে কয়েক শতাধিক খেজুর গাছ থাকায় রসের চাহিদা মিটে যাচ্ছে অনায়াসে। আমরা এখান হতে পাটালি, দানা ও ঝোলা গুড় পেয়ে থাকি।
গাছি ঝন্ডু, জহির ও আবুল হোসেন বলেন, আমরা ৪/৫ দীর্ঘ কয়েক মাস পরিচর্যা করে গাছ রস উপযোগী করেছি। এখন প্রতিদিন রস পাড়া হচ্ছে। যে রস প্রতিদিন পাড়া হয় তাতে দেড়শো থেকে দু’শ লিটার হবে। এসব রস কাঁচা বিক্রি শেষে এখানেই জ্বাল দেই। পরে পাটালি, ঝোল, লনের গুড় তৈরি করে থাকি। তবে শীত যত বেশি পড়ে রস ততই মিষ্টি হয়।
এই জমি লিজ নিয়ে খেজুরের গুড় উৎপাদনকারী রিজভী আহমেদ মিল্টন বলেন, আমি ন্যাচারাল ফুড উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ করে থাকি। এজন্য আমি এই ৬০ বিঘা জমিটি লিজ নিয়েছি। এখানে ৪ শতাধিক খেজুর গাছ রয়েছে। এবছর প্রায় সাড়ে ৩ শতাধিক খেজুর গাছ রস সংগ্রহ উপযোগী করা হয়েছে। বাজারে যে ভেজাল বা চিনি মিশ্রিত গুড় পাওয়া যায়, এটা থেকে বেরিয়ে সাধারণ মানুষকে ভালো মানের খাঁটি গুড় খাওয়াতে চাই। এজন্যই কাঁচা রস বিক্রির পর অবশিষ্ট রস দিয়ে গুড় তৈরি করা হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।