জুমবাংলা ডেস্ক : তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি থেকে পুরোপুরি সরে এসে এবার মহাপরিকল্পনার দিকে এগুচ্ছে ভারত। গবেষকরা বলছেন, পানি বণ্টন চুক্তির বিকল্প কখনও মহাপরিকল্পনা হতে পারে না। আর এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেও বাংলাদেশকে ন্যায্য হিস্যা অনুযায়ী পানি না দিলে শুষ্ক মৌসুমে তা কোন কাজে আসবে না।
উত্তরের বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষি ও প্রকৃতি তিস্তার ওপর নির্ভরশীল। অভিন্ন এ নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার জন্য উজানের দেশ ভারতের দিকে দীর্ঘ কাল ধরে তাকিয়ে আছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে একটি খসড়া রূপরেখা তৈরি থাকলেও ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কারণে এখনও চুক্তি নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি।
২০১১ সালে তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরে তিস্তা চুক্তি সই হওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তির কারণে হয়নি। তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী সে সময় বলেছিলেন, তারা এমন কোনও পদক্ষেপ নেবে না, যার বিরূপ প্রভাব পড়ে।
অথচ ২০১১ সালের পর থেকে তিস্তার পানি একতরফা প্রত্যাহার করছে ভারত। এমনকি নিয়ম না মেনে পানি সরাতে গত বছর উজানে আরও দুটি খাল খননের উদ্যোগ নেয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে দুদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সবার প্রত্যাশা ছিল, এবার সুরাহা হতে পারে পানি বন্টন চুক্তির। কিন্তু শনিবার (২২ জুন) দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক শেষে নরেন্দ্র মোদি জানান, পানি বন্টন চুক্তি নয়, তিস্তার পানি সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় একটি মহাপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করতে শিগগিরই বাংলাদেশ যাবে একটি কারিগরি দল।
গবেষকদের মতে, ভারতের এমন পরিকল্পনার মধ্যদিয়ে অনিশ্চিত হয়ে পড়ল কাঙ্ক্ষিত পানি বন্টন চুক্তি। আর চুক্তি ছাড়া ভারতের এ মহাপরিকল্পনা কোন কাজে আসবে না।
রিভারাইন পিপলের পরিচালক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘২০১১ সালের পর ২০২৪ সাল — মাঝখানে তিস্তার পানি একতরফা প্রত্যাহার করছে ভারত। ফলে পরিকল্পনা নিয়ে আমাদের কাছে আশা জাগছে বটে; কিন্তু সে আশা যে খুব মধুর হবে, এটা মনে করি না।’
অধিকারকর্মীরা বলছেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ওপর দায় না চাপিয়ে চুক্তির বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে আন্তরিক হতে হবে।
তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী বলেন, ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করলে ভাঙন থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। কিন্তু খরার সময় পানি না পেলে এ অঞ্চলে বিপর্যয় নেমে আসবে।’
ভারতের মহাপরিকল্পনায় আগ্রহ থাকলেও দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক আরও দৃঢ় রাখতে এ চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নের পরামর্শ সংশ্লিষ্টদের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।