লাইফস্টাইল ডেস্ক : শীতে ঠান্ডাজনিত অসুস্থতা বেড়ে যায়, যার ফলে মায়ের পাশাপাশি গর্ভের সন্তানেরও ক্ষতি হতে পারে। বিজ্ঞানবাক্সের আজকের ব্লগে থাকছে শীতকালে গর্ভবতী মায়ের যত্ন নিয়ে কিছু পরামর্শ।
সুষম খাবার খান
গর্ভের সন্তান তার পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে মায়ের খাবারের মাধ্যমে। এবং মা অসুস্থ হলে তার প্রভাব গর্ভের সন্তানের উপরও পড়ে সেজন্য মায়ের সুষম খাবার ও তার স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখা জরুরী। এতে সুস্থ সন্তান জন্ম দেয়ার সম্ভাবনা অনেক গুণ বেড়ে যায়। শীতকালে সতেজ ফলমূল ও সবুজ সবজি খাওয়া উচিত বেশি করে। সবুজ সবজি ও সতেজ ফল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ফলমূল ও সবজির সাথে ডায়েটে জাফরান ও দুধ রাখা উচিত। এতে শরীর উষ্ণ থাকবে।
পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খাবেন
শীতকালে আমাদের তৃষ্ণা কম লাগে বলে আমরা স্বাভাবিকের তুলনায় কম পানি খাই। কিন্তু একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য এটা মোটেও উচিত নয়। শীতকাল শুষ্ক ঋতু হওয়ার ফলে অন্যান্য সময়ের চেয়ে শীলকালে বেশি করে পানি খাওয়া উচিত। একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য দিনে কমপক্ষে ২.৩ লিটার পানি খাওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি ডাবের পানি ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর তরল খাবার খাওয়া যেতে পারে। শীতকালে পানি খাওয়ার কথা ভুলে গেলে নির্দিষ্ট পরিমাণ পানির খাওয়ার জন্য এলার্ম সেট করে রাখতে পারেন।
ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখবেন
শীতকালে সাধারণত আমাদের ত্বকের আর্দ্রতাও কমে যায়। আর গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রে এই সমস্যা আরো বেশি দেখা দেয়। সেজন্য ত্বকে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। এইসময় কিছু জিনিস মনে রাখুন-৫ মিনিটের মধ্যে গোসল শেষ করুন, গরম পানি কম ব্যবহার করার চেষ্টা করুন অথবা হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন, ত্বক ভেজা থাকা অবস্থায় ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন, সাবান ব্যবহার কম করুন অথবা গ্লিসারিন সমৃদ্ধ সাবান ব্যবহার করুন, ঠোঁট চুষবেন না, ঠোঁটে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করুন।
ঠান্ডাজনিত রোগের জন্য চিকিৎসা নিবেন
অনেকেই মনে করেন গর্ভকালিন অবস্থায় অন্য কোন ঔষধ খেলে তা প্রতিক্রিয়া করে ক্ষতি হতে পারে। এই ধারণা একেবারে ঠিক না আবার একেবারে ভুলও না। কিন্তু ঠান্ডা বা ফ্লু জাতীয় অসুখে যদি গর্ভবতী মা তিনদিনের বেশি ভোগে তাহলে ডাক্তার দেখানো উচিত। ডাক্তার এই সময়ে নিরাপদ ঔষধই দেবেন। তিনদিনের বেশি সর্দি কাশি থাকলে তা ফ্লু জাতীয় কোন রোগের লক্ষণ হতে পারে। প্রয়োজনে ডাক্তারের কাছ থেকে এই বিষয়ে ভালোভাবে জেনে নিতে হবে।
শীত কালীন রোগের প্রতিরোধ করুন
শীতকালে ইনফেকশনের ঝুঁকি বেড়ে যায়। সেজন্য আপনাকে সুরক্ষিত থেকে রোগ প্রতিরোধ করতে হবে। শীতকালে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলেই রোগ থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। নিয়মিত সাবান ও পরিষ্কার পানি দিয়ে হাত ধোবেন, সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল খাবেন। এতে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। তুলসি চা খেতে পারেন এতে কফ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে। হালকা গরম পানিতে লবন দিয়ে কুলি করলে গলায় ঠান্ডাজনিত রোগ হবে না।
উষ্ণ ও আরামদায়ক পোশাক পরুন
খেয়াল রাখুন শীতকালে গর্ভবতী মায়ের পোশাক যেন একই সাথে উষ্ণ ও আরামদায়ক হয়। বেশি টাইট পোষাক পরা যাবে না, এতে আপনার গর্ভের সন্তানের উপর চাপ পড়তে পারে। ঢিলেঢালা পোশাক পরার চেষ্টা করুন। সামনে বোতামসহ সুয়েটার এই সময়ে গর্ভবতী মায়ের জন্য আরামদায়ক ও নিরাপদ হবে। শীতে বাসায় মোজা পরে থাকুন কারণ ঘরের মেজে থেকে পায়ে ঠান্ডা লেগে ক্ষতি হতে পারে।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
শীতের মধ্যে ভোরে বাইরে ব্যায়াম করতে যাওয়া গর্ভবতী মায়ের জন্য কিছুটা কঠিন বটে। কিন্তু তাই বলে ব্যায়াম বাদ দেয়া যাবে না। নিজেকে ফিট ও নিরাপদ রাখার জন্য ঘরেই ব্যায়াম করতে পারেন। এই সময়ে মেডিটেশন ও যোগ ব্যায়াম বেশ উপকারী। যোগ ব্যায়ামের জন্য ডিভিডি কিনে তা দেখে দেখে করতে পারেন। তাছাড়া ইউটিউব থেকে ব্যায়ামের কিছু নিয়ম শিখে নিয়ে ঘরে বসেই ব্যায়াম করতে পারেন।
বেশি করে ইনডোরে থাকার চেষ্টা করুন
গর্ভবতী থাকা অবস্থায় আপনি ও আপনার অনাগত সন্তান অনেক বেশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকেন। আর শীতকালে খারাপ আবহাওয়ার ফলে বাতাসের ধুলাবালি ও বিভিন্ন জীবাণু দ্বারা খুব সহজে আক্রান্ত হতে পারেন। সেজন্য যথাসম্ভব কম বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করুন। ঘরে আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করে ঘরে বেশি সময় কাটান। বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করুন সবসময়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।