বিখ্যাত গ্রিক দার্শনিক হেরাক্লিটাসের নাম আমরা শুনে থাকব। তার জন্মস্থান আধুনিক তুরস্কের এফেসাসে। সেই প্রাচীন শহর এফেসাসের কথাই বলা হবে এই লেখায়।
৬০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে ক্যালকোলিথিক সময়কাল পর্যন্ত এফেসাসের ইতিহাস পাওয়া যায়। আয়াসুলুক পাহাড়ে খনন করে একটি প্রাচীন বসতির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। তাই প্রাচীন এফেসাস প্রথমে আয়াসুলুক পাহাড়ে অবস্থিত ছিল বলে ধারণা করা হয়। এটি সর্বপ্রথম আনাতোলিয়ান গোত্রের বসতি ছিল, কারণ হিট্টাইট কিউনিফর্ম ফলকে ‘অ্যাপাসাস’ নামের উল্লেখ রয়েছে, যার অর্থ ‘মৌমাছি’।
আরেকটি কিংবদন্তি অনুযায়ী, ‘অ্যামাজন’ নামে মহিলা যোদ্ধাদের একটি গোত্র এফেসাস প্রতিষ্ঠা করেছিল, আরশহরের নামকরণ করা হয় তাদের রানী এফেসিয়ার নামে। আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট পার্সিয়ানদের পরাজিত করে এফেসাস দখল করেন।
আজকের এফেসাসের ধ্বংসাবশেষের বেশিরভাগ অ্যাম্ফিথিয়েটার, সেলসাসের লাইব্রেরি এবং জলাশয়গুলো অগাস্টাসের রাজত্বকালে নির্মিত বা পুনর্নির্মিত হয়েছিল।
টাইবেরিয়াসের রাজত্বকালে এফেসাস একটি বন্দর হিসেবে বিকাশ লাভ করে। ৪৩ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে জায়গাটি এই অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্র হয়ে ওঠে। বন্দর এবং প্রাচীন রয়্যাল রোডে ভ্রমণকারী কাফেলা থেকে প্রচুর পরিমাণে পণ্যের পরিষেবা প্রদান করা হতো। কিছু সূত্রের মতে, সেই সময়ে সংস্কৃতি ও বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে রোমের পরেই দ্বিতীয় ছিল এফেসাস।
৫ম ও ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে কনস্টান্টিনোপলের পর এফেসাস এশিয়ার বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহর ছিল। ১০৯০ সালে সেলজুক তুর্কিরা এফেসাস জয় করলেও ১১০০ সালের দিকে বাইজেন্টাইনরা আবার এই শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয়া শুরু করে।
ঘুমন্ত সাত গুহাবাসীর ঘটনাটি মুসলিম ও খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় ঘটনা। পবিত্র কুরআনের সুরা ক্বাহাফে এই ঘটনার কথা এসেছে। ২৫,০০০ দর্শকের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন চিত্তাকর্ষক অ্যাম্ফিথিয়েটার প্রাচীন বিশ্বের বৃহত্তম বলে মনে করা হয়।
এটি নাটকের অভিনয়ের জন্য ব্যবহার করা হলেও প্রমাণ রয়েছে যে এটি গ্ল্যাডিয়েটরদের (প্রাচীন রোমের মল্লযোদ্ধা) লড়াইয়ের জন্যও ব্যবহৃত হতো। এছাড়া, ওডিয়ন থিয়েটারটিও ছিল প্রাচীন এথেন্সের অন্যতম সেরা স্থাপত্যবিস্ময়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।