জুমবাংলা ডেস্ক : ত্রাণের স্লিপ চাওয়ায় লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলী’র স্ত্রীর গলা ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন শতবর্ষী বৃদ্ধা আলেমা বেওয়া (৯৫)।
সোমবার বিকেল আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন বৃদ্ধা আলেমা বেওয়া।
এ ঘটনায় আহত বৃদ্ধার ছেলে নুরুজ্জামান বাদি হয়ে চেয়ারম্যান শওকত আলীকে প্রধান অভিযুক্ত করে চেয়ারম্যানের স্ত্রী ও মেয়ের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। আহত বৃদ্ধা উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের নামুড়ি মদনপুর গ্রামের মৃত ছপির উদ্দিনের স্ত্রী ও রিক্সা চালক নুরুজ্জামানের মা।
এর আগে গত সপ্তাহে মধ্যরাতে নিজ বাড়িতে শ্যালিস বৈঠকে স্ত্রী সন্তানের সামনে এক ব্যবসায়ীকে অমানুষিক নির্যাতন করেন বলে আদিতমারী থানায় চেয়ারম্যান শওকত আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন আহত ব্যবসায়ী। সেটিও রহস্যজনক ভাবে নথিভুক্ত হয়নি।
বৃদ্ধাকে ধাক্কা দেয়ার অভিযোগে বলা হয়, আলেমা বেওয়া রিক্সা চালক ছেলে নুরুজ্জামানের সংসারে বসবাস করেন। করোনার কারণে রিক্সা চালক ছেলের আয় রোজগার কমে যাওয়ায় নিদারুন অর্থ কষ্টে পড়েন পরিবারটি। ৪ দিন আগে পলাশী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শওকত আলী ত্রাণ দেয়ার কথা বলে বৃদ্ধা আলেমার কাছ থেকে জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি গ্রহণ করেন। সেই ত্রাণ নিতে সোমবার সকালে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকেন চেয়ারম্যান। সকালে ইউনিয়ন পরিষদের চলে আসেন ওই বৃদ্ধা। তখন চেয়ারম্যান তার বাড়িতে রাখা স্লিপ নিয়ে আসতে বললে বৃদ্ধা পরিষদের পাশে চেয়ারম্যানের বাড়িতে যান। সেখানে দুপুর পর্যন্ত স্লিপের জন্য অপেক্ষা করে ক্ষুধার্ত বৃদ্ধা। এরই মধ্যে ত্রাণ বিতরণ শেষ করে চেয়ারম্যান বাড়িতে চলে আসলে স্লিপ দাবি করেন বৃদ্ধা। এ সময় চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার স্ত্রী আনোয়া বেগম (৪৫) ও মেয়ে সুহিন আক্তার(১৯) বৃদ্ধা আলেমার গলা ধাক্কা দিলে বৃদ্ধা মেঝেতে পড়ে গিয়ে দাঁত ভেঙ্গে রক্তাক্ত হন। এতে বৃদ্ধার হাত, পা ও বুকে প্রচন্ড আঘাত পেয়ে সজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন।
বিপদ দেখে দ্রুত পল্লী চিকিৎসক নিয়ে নিজ বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন চেয়ারম্যান। মায়ের অসুস্থতার খবরে রিক্সা চালক ছেলে নুরুজ্জামান স্থানীয়দের সহায়তায় বৃদ্ধা আলেমাকে উদ্ধার করে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত পলাশী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শওকত আলী সাংবাদিকদের কাছে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
হাসপাতালের বেডে কান্না জড়িত কণ্ঠে বৃদ্ধা আলেমা বেওয়া বলেন, হামরা গরিব জন্য সরকারি তেরান(ত্রাণ) নিবার গেছি। চেয়ারম্যানের কথা মত স্লিপ নিতে তার বাড়ি গেছি। সারাদিন বসি থাকি বিকেলে তেরান তো নাই, স্লিপটাও না দিয়া চলে যাবার কইছে (বলছে)। বাড়ি থেকে বের হতে দেরি (বিলম্ব) করায় বউ বেটি( স্ত্রী-মেয়ে) গলা ধাক্কা দিয়া পাকার উপর ফেলে দিছে। তারপর কি হয়েছে মুই যানোং(আমি জানি) না বাপু।
আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে অফিসার পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধের দায়ের করা অভিযোগ বাদির সাথে আপোষের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।