জুমবাংলা ডেস্ক: ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ১২ কোটি টাকার বেশি আয়কর দেওয়ার আদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। তাঁর দায়ের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি রাশেদ জাহাঙ্গীরের বেঞ্চ এই রায় দেয়।
দান করা টাকার বিপরীতে আয়কর দাবি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নোটিশ দিয়েছিল। সেটিকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে আবেদন করেছিলেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী এই অর্থনীতিবিদ।
এর আগে, গত ২৩ মে এনবিআরের নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের করা তিনটি আয়কর রেফারেন্স মামলার শুনানি শেষ হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে শুনানি করেছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। আর ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন মোস্তাফিজুর রহমান খান।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ড. ইউনূস ২০১১-১২ করবর্ষে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ট্রাস্ট, ইউনূস ফ্যামিলি ট্রাস্ট ও ইউনূস সেন্টারে মোট ৬১ কোটি ৫৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা দান করেন।
একইভাবে ২০১২-১৩ করবর্ষে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ট্রাস্টে দান করেন আট কোটি ১৫ লাখ টাকা।
২০১৩-১৪ করবর্ষে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ট্রাস্ট, ইউনূস ফ্যামিলি ট্রাস্টে দান করেন সাত কোটি ৬৫ হাজার টাকা।
এসব দানের বিপরীতে যথাক্রমে প্রায় ১২ কোটি ২৮ লাখ ৭৪ হাজার ৮০০, এক কোটি ৬০ লাখ ২১ হাজার ও এক কোটি ৫০ লাখ ২১ হাজার টাকাসহ মোট ১৫ কোটি ৩৯ লাখ ১৬ হাজার ৮০০ টাকা আয়কর দাবি করে এনবিআর। সেই সঙ্গে ৬৯ লাখ ২৬ হাজার ২৫৬ টাকা জরিমানাও করে।
জরিমানাসহ ইউনূসের কাছে এনবিআরের মোট পাওনা দাবি করে ১৬ কোটি আট লাখ ৪৩ হাজার ৫৬ টাকা। এর মধ্যে ড. ইউনূস আয়কর পরিশোধ করেন তিন কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার ৪৪৮ টাকা।
পরিশোধের এই টাকা বাদ দিলে জরিমানাসহ ইউনূসের কাছে এনবিআরের পাওনা দাঁড়ায় ১২ কোটি ৪৬ লাখ ৭২ হাজার ৬০৮ টাকা।
এসব দানের বিপরীতে কর দাবি করে এনবিআর আলাদা তিনটি নোটিশ দেয়। সেইসব নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ট্যাক্স আপিল ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন ড. ইউনূস।
ড. ইউনূসের আইনজীবীর দাবি, যেহেতু ড. ইউনূস মৃত্যুচিন্তা ও নিকট আত্মীয়দের কল্যাণের কথা ভেবে ওই টাকা দান করেছেন, ফলে তিনি দানকর আইন অনুযায়ী কর অব্যাহতি পাবেন। তবে এনবিআরের দাবি, দানকর আইন অনুযায়ী দান যদি পুত্র, কন্যা, পিতা, মাতা, স্বামী, স্ত্রী, আপন ভাই অথবা আপন বোনকে করা হয় তবে করদাতা কর অব্যাহতি পাবেন।
কিন্তু ড. ইউনূস দান করেছেন ট্রাস্টে। এর মধ্যে ইউনূস সেন্টারের তিনজন ট্রাস্টির মধ্যে একজন ট্রাস্টি দাতা নিজে। আবার প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ট্রাস্ট ও ইউনূস ফ্যামিলি ট্রাস্টের ট্রাস্টিরা করদাতার নিকট আত্মীয় নন। ফলে এ ক্ষেত্রে তিনি কর অব্যাহতি পাবেন না।
এনবিআর এর ওই নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৪ সালে প্রথমে অ্যাপিলেট যুগ্ম কর কমিশনার এবং পরে ট্যাক্সেস অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালে আপিল করেন ড. ইউনূস। দুই আদালতেই তার আপিল খারিজ হয়ে যায়।
পরে ২০১৪ সালে ট্যাক্সেস অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে ড. ইউনূস হাইকোর্টে তিনটি আয়কর মামলা করেন।
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে আরও তিনটি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১১০০ কোটি টাকার কর ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে।
এ সংক্রান্ত কয়েকটি মামলা হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। এছাড়া গ্রামীণ টেলিকমের বিপুল পরিমাণ অর্থ দুর্নীতি ও পাচারের অভিযোগের তদন্ত করছে দুদক। তার প্রতিষ্ঠিত ৯টি প্রতিষ্ঠানের কর সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে এনবিআরের কাছে চিঠি দিয়েছে দুদক
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।