জুমবাংলা ডেস্ক : নিরাপত্তা প্রহরী এমদাদুল হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছে- এমন খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এমদাদুলের স্ত্রী-সন্তানরাও সেটা মেনে নেন। পরের দিন কবর খোঁড়া থেকে শুরু করে চলছিল লাশ দাফনের প্রস্তুতি।
খুনিরাও ভেবে নিয়েছিলেন, কিছুক্ষণের মধ্যে লাশ দাফন হলেই আসল সত্যটাও দাফন হয়ে যাবে। তারা থেকে যাবেন ধরা-ছোয়ার বাইরে।
এমন সময় হঠাৎ করেই কোথা থেকে বোবা (বাকপ্রতিবন্ধী) সাহাবুদ্দিন মৃত এমদাদুলের বাড়িতে এসে হাজির। উপস্থিত সবাইকে তিনি ইশারায় বোঝাতে চেষ্টা করলেন, এমদাদুল হার্ট অ্যাটাকে মারা যায়নি। তাকে খুন করা হয়েছে। এমদাদুলকে বুকে-পিঠে কিল-ঘুষি মেরেছে ঘাতকরা। শুধু তাই নই, তলপেটে লাথি মেরে তাকে মেরে ফেলা হয়েছে।
তখন দাফনের আয়োজন থেমে গেল। শুরু হলো নানা গুঞ্জন। আত্মীয়দের কেউ একজন খবর দিলেন থানা পুলিশে। ঘটনাটি ঘটে ময়মনসিংহের পাগলা থানার বারুইহাটি গ্রামে।
নিহত এমদাদুল ভালুকা উপজেলায় একটি পোশাক কারখানায় নিরাপত্তা প্রহরীর চাকরি করতেন। সেই কারণে ভালুকা শহরে ভাড়া বাসায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন।
নিহত এমদাদুলের স্ত্রী শিউলি আক্তার জানান, তার স্বামী গত ২৭ নভেম্বর জমি দেখাশুনা করতে ভালুকা থেকে বারুইহাটি গ্রামের বাড়ি যান। রাত হয়ে গেলেও বাসায় ফিরছিলেন না। পরে রাতে ফোন আসে তিনি হার্ট অ্যাটাকে শ্রীপুর হাসপাতালে মারা গেছেন। স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে কিছু বুঝে উঠতে পারছিলেন না তিনি।
‘‘আমি হতভম্ব হয়ে যায়। পরবর্তীতে গ্রামের বাড়িতে দাফনের সময় প্রতিবেশী বোবা সাহাবুদ্দিন ইশারায় জানান- আমার স্বামীকে মারধরের কথা।’’
শিউলি বলেন, ‘‘প্রতিবেশী লাকি আক্তার, আরিফ মিয়া ও রফিকুল ইসলামের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। তারাই আমার স্বামীকে হত্যা করেছেন। যখন পুলিশ আসে, তখন থেকে তারা এখনো পলাতক রয়েছেন।’’
এ ঘটনায় ২৮ নভেম্বর শিউলি আক্তার বাদী হয়ে প্রতিবেশী লাকী আক্তার, আরিফ মিয়া ও রফিকুল ইসলামকে আসামি করে পাগলা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
শিউলি আক্তার বলেন, স্বামী হারিয়ে সন্তানদের নিয়ে তিনি বিপাকে পড়েছেন। বাচ্চাদের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গেছে। খুনিরা এখনো ধরা পড়েনি। তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে ফাঁসির দাবি জানান তিনি।
পাগলা থানার ওসি শাহিনুজ্জামান খান বলেন, এই মামলায় বাকপ্রতিবন্ধী সাহাবুদ্দিনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদনে লাশের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়ার পর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আসামিরা পলাতক রয়েছে, তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।