জুমবাংলা ডেস্ক : সংখ্যালঘুদের আট দফা দাবি বাস্তবায়ন ‘গদি থেকে নামানো’ কিংবা ‘গদিতে তোলার’ কোনো আন্দোলন নয় মন্তব্য করে বাংলাদেশ হিন্দু লীগের মহাসচিব শংকর সরকার দাবি আদায়ে প্রয়োজনে ঢাকা অবরোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, “আমাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে গঠন হওয়া রাষ্ট্রে বৈষম্য দেখা যাচ্ছে। আমরা দাবি নিয়ে থাকব। প্রয়োজন ৫০ লক্ষ লোক নিয়ে ঢাকা অবরোধ করব, আমাদের দাবি আদায় করে ছাড়ব।”
শনিবার ‘সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চার’ ডাকে সংখ্যালঘুদের আট দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত গণসমাবেশ তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
গণসমাবেশ শেষে বিকালে বিক্ষোভ মিছিলও করে জোটটি। মিছিলটি দোয়েল চত্বর, টিএসসি প্রদক্ষিণ করে এসে রাজু ভাস্কর্যে শেষ হয়।
বেশ কিছুদিন থেকে এসব দায়ি আদায়ে কর্মসূচি পালন করে আসছে সংখ্যালঘুদের বিভিন্ন সংগঠন।
সমাবেশে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করাসহ দাবিগুলো আবারও তুলে ধরেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নির্মল রোজারিও।
আট দাবি ছাড়াও সরকারি অনুষ্ঠান ও সংসদ অধিবেশনে ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠের ক্ষেত্রে, সংবিধানে, ধর্মীয় শিক্ষা, ধর্মীয় বাজেট ও শিক্ষায় বৈষম্য দূর করার দাবি তুলে ধরেন তিনি।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নিমচন্দ্র ভৌমিক বলেন, “দেশের সকল মুক্তির আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান সংগ্রামে আমরা সকলেই ছিলাম। মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, আদিবাসী আমরা সকলেই একসাথে অংশগ্রহণ করলেও আমরা আজ নিপীড়ন ও বৈষম্যের শিকার। সেই কারণেই আজ আট দফা দেওয়া হয়েছে।
“আট দফার মূল চেতনা হল আইনের শাসন ও সকল ক্ষেত্রে সমঅধিকার, সমমর্যাদা এবং সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা।”
বিশ্ব হিন্দু ফেডারেশনের নেতা শংকর দাস বলেন, “আমাদের দাবি উত্থাপন করা হয়েছিল। আগের সরকারকে দেওয়া হয়েছে। আপনারা (সরকার) আমাদেরকে হুমকি দিচ্ছেন। আমাদের হুমকি ধামকি দিয়ে কাজ হবে না, মামলা মোকদ্দমার ভয় দেখাবেন না। আমরা জ্বালাও পোড়াওয়ের রাজনীতি করি না।’
নারী নেত্রী সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য বলেন, “রাজপথে আনন্দ নিয়ে আসিনি। দাবি নিয়ে এসেছি। দাবি বাস্তবায়ন করুন। আমরা রাজপথ ছেড়ে দিব।’
জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক ডা. এম কে রায় বলেন, “আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি, আপনার বিবৃতি প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে হবে।”
সমাবেশ আরও বক্তব্য রাখেন মাইনরিটি রাইটস ফোরামের সংগঠক নিরোধ বর্মন, সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের সুস্মিতা কর, ভক্তসংঘের শ্যামল রঞ্জন মন্ডল, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি তন্ময় ঘোষ।
আট দফা দাবি হল
সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা; জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন করা অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের যথাযথ প্রয়োগে যাবতীয় আমলাতান্ত্রিক বাধা অপসারণ করে ট্রাইব্যুনালের রায়ের আলোকে জমির মালিকানা ও দখল ভুক্তভোগীদের বরাবরে অনতিবিলম্বে প্রত্যর্পণ করা; জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে সরকারে, সংসদে, জনপ্রতিনিধিত্বশীল সকল সংস্থায় অংশীদারিত্ব ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা; বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন করা ; দেবোত্তর সম্পত্তি সংরক্ষণে আইন প্রণয়ন করা; পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন এবং তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইনের যথাযথভাবে কার্যকর করা এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় দূর্গাপূজায় অষ্টমী থেকে দশমীতে তিন দিন, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রবারণা পূর্ণিমায় একদিন ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ইস্টার সানডেতে একদিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।