জুমবাংলা ডেস্ক : নৌযান শ্রমিকদের ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন। সংগঠনের নেতারা বলছেন, ৩০ মে তারিখের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে সারা দেশে কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা এসব কথা তুলে ধরেন।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম বলেন, নদীমাতৃক বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নৌপরিবহন শিল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রায় শত ভাগ ব্যক্তিমালিকানায় পরিচালিত এই শিল্প স্বল্প ব্যয়ে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। প্রটোকল রুটসহ বহিঃবিশ্বের সঙ্গে আমদানি ও রপ্তানি পণ্য পরিবহন অনেকাংশেই নৌপরিবহনের ওপর নির্ভরশীল হওয়া সত্ত্বেও শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন ও নিরাপত্তার বিষয়টি সবসময় উপেক্ষিত।
তিনি বলেন, নৌযান শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে কন্ট্রিবিউটারি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন এবং প্রত্যেক শ্রমিককে মালিক কর্তৃক নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র-সার্ভিসবুক প্রদানের দাবি মালিক, শ্রমিক ও সরকারের মধ্যে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে ত্রিপক্ষীয় সভায় সর্বসম্মতভাবে মেনে নেওয়ার ৪ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো তা আলোর মুখ দেখেনি।
এ ছাড়া দুর্ঘটনা ও কর্মস্থলে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণে ১০ লাখ টাকার যৌক্তিক দাবির বিষয়টি অমীমাংসিত রয়েছে। মালিকদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং এক শ্রেণির অতি মুনাফা লোভী অসৎ ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যে পণ্য পরিবহনের শৃঙ্খলা ভেঙে যাওয়ায় এ শিল্প আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২২ সালের নভেম্বর মাস থেকে নতুন-মজুরি কাঠামো কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও পণ্য পরিবহনে সমতা না থাকায় বিশেষ সুবিধাভোগী মালিকরা গেজেট অনুযায়ী মজুরি প্রদান করলেও এখনো ৪০ শতাংশের বেশি শ্রমিক গেজেট মোতাবেক বেতন না পেয়ে চরম অর্থ-সংকটের মধ্যে দিনাতিপাত করছে।
শ্রমিক নেতারা জানান, পণ্যপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে ইতোপূর্বে আমরা গত ২ ও ২৫ জানুয়ারি নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বরাবর দুটি চিঠি পাঠাই। প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশনায় নৌপরিবহন অধিদপ্তর পণ্যপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকে যৌক্তিক ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে। কিন্তু স্বার্থান্বেষী মহলের চক্রান্তে সেটা থমকে গেছে। অতিদ্রুত পণ্যপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব না হলে আসন্ন ঈদুল আজহার বেতন বোনাস না পাওয়াসহ চাকরি রক্ষার বিষয়ে শঙ্কিত নৌশ্রমিকরা।
এ সব সমস্যার সমাধানে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ১১ দফা দাবি নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর নিকট উপস্থাপন করা হলেও এখন পর্যন্ত তার কোনো অগ্রগতি হয়নি। তবে আগামী ৩০ মে আমাদের দাবি নিষ্পত্তির লক্ষ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা আহ্বান করা হয়েছে। এরপরেও দাবি বাস্তবায়িত না হলে আমরা কর্মবিরতির কর্মসূচি শুরু করতে বাধ্য হবো।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোঃ শাহ আলম, কোষাধ্যক্ষ হাবিবুল্লা বাহার, নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের সভাপতি আজিজুল হক প্রমুখ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।