জুমবাংলা ডেস্ক : আবরার হ’ত্যা মামলায় অভিযুক্তদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কারসহ তিন দফা দাবি পূরণ না হলে ক্লাস এবং পরীক্ষায় বসবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার বিকালে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে এই ঘোষণা দেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। বুধবার বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হ’ত্যা মামলার চার্জশিট দাখিল করে ডিবি পুলিশ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এ সংবাদ সম্মেলন দাবি মানার তাগিদ দেন শিক্ষার্থীরা।
গত ২ নভেম্বর বুয়েটের টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়ে বুয়েটের উপাচার্য, ডিএসউব্লিউ ও ডিনদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় তারা প্রশাসনের কাছে তিনটি দাবি জানিয়েছিলেন।
তিন দফা দাবিগুলো হলো, চার্জশিটের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা, আহসান উল্লাহ, তিতুমীর ও সোহরাওয়ার্দী হলের র্যাগের ঘটনায় অভিযুক্তদের অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া, সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি ও র্যাগের জন্য সুস্পষ্টভাবে বিভিন্ন ধাপে ভাগ করে শাস্তির নীতিমালা করে বুয়েটের একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট থেকে অনুমোদন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্সে অন্তর্ভুক্ত করা।
সংবাদ সম্মেলনে বুয়েটের কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী অনিরুদ্ধ গাঙ্গুলি জানান, তিন দফা দাবির প্রথম ও দ্বিতীয় দফা পূরণ হলে আমরা আসন্ন টার্ম ফাইনাল পরীক্ষার তারিখ গ্রহণ করতে সম্মত হবো। টার্ম ফাইনাল শুরু হওয়ার অন্তত সাত দিন আগে তৃতীয় দফা পূরণ করলেই আমরা টার্ম ফাইনাল পরীক্ষায় বসবো। অন্যথায় বুয়েট প্রশাসন আন্তরিক না এবং প্রশাসন প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে বলে আমরা ধরে নেবো এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবো না।
অনিরুদ্ধ জানান, গত ২ নভেম্বরের আলোচনায় বুয়েট প্রশাসন পরবর্তী এক সপ্তাহের মধ্যে দুটি দাবি বাস্তবায়ন করার আশ্বাস দেয়। কিন্তু দুই সপ্তাহের মধ্যেও দাবিগুলো বাস্তবায়নে প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ না দেখায় হতাশা ব্যক্ত করেন শিক্ষার্থীরা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের গাফিলতি রয়েছে বলেও দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।
আবরারের বাবার করা মামলায় এজাহারভুক্ত ১৯ জন আসামির বাইরে তদন্ত করে আরো ছয়জনকে চার্জশিটের অন্তর্ভুক্ত করায় পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। তারা বলেন, ২৫ আসামির মধ্যে এখনো ৪জন পলাতক। পুলিশ প্রশাসন দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই ৪জনকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবে বলে আমরা আশাবাদী।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সদিচ্ছা ও পর্যাপ্ত পদক্ষেপের অভাব রয়েছে দাবি করে লিখিত বক্তব্যে এই শিক্ষার্থী বলেন, বুয়েটের অ্যাকাডেমিক ও পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু করার ব্যাপারে আমরাও চিন্তিত এবং দ্রুত সময়ে অ্যাকাডেমিক ও পরীক্ষা কার্যক্রমে আমরা সকলে ফিরে যেতে চাই । এজন্য আমরা গত ১৫ তারিখে মাঠ পর্যায়ের আন্দোলন থেকে সরে এসেছি। প্রশাসনের সাথে বারবার আলোচনার মাধ্যমেও তাদেরকে পর্যাপ্ত সময় দিয়ে বুয়েটে একটি সুষ্ঠু এবং নিরাপদ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সদিচ্ছা ও পর্যাপ্ত পদক্ষেপের অভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
গত ০৬ অক্টোবর আবরার ফাহাদ হ’ত্যার পরদিন আবরারের বাবা ১৯ শিক্ষার্থীকে আসামি করে চকবাজার থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় বুধবার ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
তদন্তে নেমে পুলিশ এজাহারের ১৬ জনসহ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করে। এর মধ্যে আবরার হ’ত্যায় ১১ জন সরাসরি যুক্ত ছিলেন বলে জানায় ডিবি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।