জুমবাংলা ডেস্ক : বাঁশের ঝুড়িতে সবুজ পাতার বিছানা। ঐ ঝুড়িতে থাকা লাল ও সবুজ রঙের থোকা থোকা লিচু নজর কাড়ছে সবার। দিনাজপুরের রসালো এই লিচুর খ্যাতিও রয়েছে দেশ জুড়ে। জেলায় নানা জাতের ও নামের লিচু পাওয়া যায়। সপ্তাহখানেক ধরে বাজারে উঠতে শুরু করেছে মাদ্রাজি ও বেদানা জাতের লিচু। প্রতিদিন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে যাচ্ছে লিচু।
এবার লিচুর বাজার গোর-এ শহীদ ময়দান থেকে স্থানান্তর করে নিয়ে আসা হয়েছে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানাসংলগ্ন নিউমার্কেটে। ইতিমধ্যে এই নিউমার্কেটে মাঠে লিচুর পাইকারি বাজারের জন্য শেড তৈরি করা হয়েছে। তবে পাইকারি বাজার ছাড়াও শহরের বাহাদুর বাজার, হাসপাতাল মোড়, থানার মোড়ে লিচুর খুচরা বাজারে ভিড় করছেন ক্রেতারা।
দিনাজপুর জেলা ও উপজেলা শহরের বাজারগুলোতে এখন পাওয়া যাচ্ছে মাদ্রাজি ও বেদানা জাতের লিচু। জ্যৈষ্ঠ মাসের শুরুতে দিনাজপুরের বাজারে মাদ্রাজি লিচু চলে আসে। এই লিচু আকারে অপেক্ষাকৃত ছোট। বিচি বড়, শ্বাসের পরিমাণ কম। টক-মিষ্টি স্বাদ। রবিবার শহরের পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে ভ্যানে ও ইজিবাইকে আড়তে লিচু নিয়ে আসছেন চাষিরা। চলছে দরকষাকষি। দামে মিললে আড়তে নামানো হচ্ছে লিচু। ঝুড়িতে সবুজ পাতার মুড়িয়ে চটের ঢাকনা দেওয়া হচ্ছে। ঝুড়ির গায়ে লেখা হচ্ছে ঠিকানা। লিচু উঠছে ট্রাকে। ছুটছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে।
পাইকারি বাজারে প্রতি ১ হাজার মাদ্রাজি লিচু বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকায়। আর বেদানা লিচু প্রতি হাজার বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা দরে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবে, দিনাজপুর জেলায় ৫ হাজার ৪৮১ হেক্টর জমিতে লিচুবাগান রয়েছে সাড়ে ৫ হাজার ৪১৮টি। এর মধ্যে বোম্বাই লিচু ৩ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে, মাদ্রাজি ১ হাজার ১৬৬ হেক্টর, চায়না থ্রি ৭০২ দশমিক ৫ হেক্টর, বেদানা ২৯৪ দশমিক ৫ হেক্টর, কাঁঠালি ২১ হেক্টর এবং মোজাফফরপুরী লিচু ১ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। আর বসতবাড়ির উঠানসহ বাগানগুলোতে লিচুগাছ রয়েছে সাত লক্ষাধিক।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান বলেন, সারা দেশে কমবেশি লিচু উৎপাদিত হলেও দিনাজপুরের লিচুর চাহিদা বেশি। এবারে হেক্টরপ্রতি ৫ দশমিক ৩ মেট্রিক টন লিচুর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, গত বছর দিনাজপুরে ২৮ হাজার মেট্রিক টন লিচুর ফলন হয়েছে, যার বাজার মূল্য ছিল ৫৭৫ কোটি টাকা।
বাজারে আগাম লিচু ওঠার বিষয়ে তিনি বলেন, কিছু কিছু কৃষক বেশি লাভের আশায় আগাম জাতের লিচু চাষ করছেন। অনেকে শেষ সময়ে কীটনাশক ছিটাচ্ছেন। তবে কৃষকদের কীটনাশক প্রয়োগ না করার বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।