জুমবাংলা ডেস্ক : বিরুপ পরিবেশে পশু-পাখিরা কেমন আচরণ করে, তা নিয়ে গবেষণার অন্ত নেই। তেমনই এক গবেষণায় দেখা গেছে পিতামাতার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনে এক অভিনব ঘুমের কৌশল অবলম্বন করে অ্যান্টার্কটিকার চিনস্ট্র্যাপ পেঙ্গুইনরা।
প্রজনন ঋতুতে পেঙ্গুইন মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ঘুমায়। কিন্তু একদিনে ঘুমায় কয়েক হাজার বার। সম্প্রতি জার্নাল সায়েন্সে প্রকাশিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে এই তথ্য। মূলত শিকারী পেঙ্গুইন থেকে বাচ্চাদের রক্ষায় এই সংক্ষিপ্ত ঘুমের পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় বলে জানান বিজ্ঞানীরা।
গবেষণা নিবন্ধের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূলত নিজেদের বাসা বা আশ্রয়ের ওপর নজর রাখা, ডিম পাহারা দেওয়া ও যেকোনো ধরনের শত্রু থেকে নিজেদের রক্ষা করতেই চিনস্ট্র্যাপ পেঙ্গুইনগুলো এমন ছোট ছোট সময় ধরে ঘুমায়। গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে সায়েন্স জার্নালে।
শিকারী ও দুষ্টু পেঙ্গুইন থেকে বাচ্চাদের রক্ষায় সার্বক্ষণিক মনোযোগ প্রয়োজন। এ অবস্থায় প্রজনন ঋতুতে তারা দিনে কয়েক হাজারবার ঘুমায়। কিন্তু প্রতিবারের ঘুমের স্থানীয়ত্ব মাত্র ৪ সেকেন্ড।
এভাবে তারা বারবার ঘুমাতে ও জাগতে থাকে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, একদিনে এই সংক্ষিপ্ত ঘুমের মোট সময় ১১ ঘণ্টা হয়, যা তাদের কয়েক সপ্তাহ কাজ করার শক্তি জোগায়।
পেঙ্গুইন
পেঙ্গুইনরা অল্প সময়ের জন্য ঘুমায়। তবে বেশ কয়েকবার। হতে পারে শিকারীদের ওপর নজর রাখতে এই ঘুমের ব্যবস্থা।
কোরিয়া পোলার রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষক লি ওয়ান ইয়াং বলেন, ‘আমরা যখন পেঙ্গুইনদের পর্যবেক্ষণ করছিলাম, তখন মনে হয়নি তাদের ঘুম পাচ্ছে। মানুষ প্রতি রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমায়। কিন্তু পেঙ্গুইনরা অল্প সময়ের জন্য ঘুমায়। তবে বেশ কয়েকবার। হতে পারে শিকারীদের ওপর নজর রাখতে এই ঘুমের ব্যবস্থা। আমরা কৌতূহলী ছিলাম, এভাবে তারা পর্যাপ্ত ঘুমাতে পারে কিনা।’
প্রথমবারের মতো, মস্তিষ্কের তরঙ্গ পরিমাপ করে এমন সেন্সর সংযুক্ত করে পেঙ্গুইনের ঘুমের আচরণ পরিমাপ করেছেন বিজ্ঞানীরা। ১১ দিনে ১৪টি পেঙ্গুইনের তথ্য সংগ্রহ করেন তারা।
লি ওয়ান ইয়াং আরও বলেন, ‘অতীতে গবেষকেরা ভেবেছিলেন, সাধারণ ঘুমের তুলনায় সংক্ষিপ্ত ঘুমের কোনো কার্যকারিতা নেই। তাছাড়া, এটিকে এমন কিছু হিসেবে বিবেচনা করা হতো, যা কেউ ঘুমবঞ্চিত হলে ঘটে। কিন্তু আপনি যদি গবেষণার ফলের দিকে তাকান, চিনস্ট্র্যাপ পেঙ্গুইনরা বেশিরভাগই মাইক্রোস্লিপের উপর নির্ভর করে।’
দিনব্যাপী মাঠ পর্যবেক্ষণে, পেঙ্গুইনদের বার বার চোখ বন্ধ ও খুলতে দেখে এ-সংক্রান্ত গবেষণার ধারণা আসে বিজ্ঞানীদের।
প্রজনন ঋতুর বাইরে তথ্য সংগ্রহ করেননি গবেষকেরা। তবে তারা অনুমান করেন যে, বছরের অন্য সময়ে পেঙ্গুইন দীর্ঘ বিরতিতে ঘুমাতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।