আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দিল্লিতে নামাজরত মুসল্লিদের লাথি মেরেছেন স্থানীয় এক পুলিশ কর্মকর্তা। এ ঘটনায় ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং দিল্লির এলজিকে চিঠি দিয়েছেন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সভাপতি মাওলানা মাহমুদ মাদানি। শুক্রবার (৮ মার্চ) ভারতীয় গণমাধ্যম ইটিভি ভারতের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
মাওলানা মাদানি বলেন, এই ধরনের ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড বিশ্বব্যাপী প্রভাব ফেলবে। বৈশ্বিক পর্যায়ে দেশের পরিচয় গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
তিনি আরো বলেন, পুলিশের মনোভাব দেখে মনে হচ্ছে, তিনি ইসলামোফোবিয়ায় ভুগছেন এবং সাম্প্রদায়িক চিন্তাধারায় প্রভাবিত। তাই তাকে বুদ্ধিবৃত্তিক সংস্কারের সাথে কাজের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়ার প্রশিক্ষণ দেয়া প্রয়োজন।
জমিয়ত সভাপতি বলেন, আমরা স্বীকার করি যে আইন-শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারের জন্য পুলিশের দায়িত্ব পালন করা উচিত। তবে ধর্মীয় বিষয়ে সতর্কতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
মাওলানা মাদানি চিঠিতে লিখেছেন, ‘আমি আপনাকে অবিলম্বে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে তাদের ধর্মীয় পটভূমি নির্বিশেষে সকল নাগরিকের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য নির্দেশনা জারি করার জন্য অনুরোধ করছি।’
তিনি আরো লেখেন, ‘আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে নিজেদের জীবন ও স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে এবং সাম্প্রদায়িক ও দেশ ভাঙা শক্তির হাতিয়ার পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। আমি আশা করি এই বিষয়ে আপনার দ্রুত এবং সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনবে এবং জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে।’
উল্লেখ্য, ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ব্যস্ত সড়কের পাশে জুমার নামাজ পড়ার সময় কয়েকজন মুসল্লিকে লাথি ও ধাক্কা মেরেছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। নামাজিদের পুলিশ কর্মকর্তার হেনস্তা করার ৩৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, দিল্লির ইন্দ্রলোক এলাকায় রাস্তায় নামাজে দাঁড়ানো মুসল্লিদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন তিনি। ওই সময় হঠাৎ করে রেগে গিয়ে পেছন থেকে দুই মুসল্লিকে তিনি লাথি দেন। এরপর একসাথে কয়েকজনকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন।
বসে থাকা আরেক মুসল্লির মুখে ধাক্কা দেয়ার পর কয়েকজন মুসল্লি ক্ষিপ্ত হয়ে যান। তখন তারা ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে গণধোলাই দেন। এরপর তিনি দৌড় দিলে অন্যরাও দৌড়ে তাকে তাড়া করেন। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে ওই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়। দিল্লি উত্তর পুলিশের উপকমিশনার এমকে মিনা বার্তাসংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, ‘যা ঘটেছে তার পরিপ্রেক্ষিতে, পুলিশ পোস্ট ইনচার্জ, যাকে ভিডিওতে দেখা গেছে, তাকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।’
এ ছাড়া ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তও শুরু হয়েছে। নামাজিদের হেনস্তা করার কারণে পরবর্তীতে মুসল্লিরা সড়ক অবরোধ করেন এবং অভিযুক্ত পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। জানা গেছে, জুমার নামাজের সময় মসজিদ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর মুসল্লিরা রাস্তায় নামাজ আদায় করেন। তখনই তাদের ওপর চড়াও হন পুলিশের ওই সদস্য।
সূত্র : ইটিভি ভারত ও অন্যান্য
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।