দীর্ঘ কয়েক মাস পর আবারও সংকেত পাঠাতে শুরু করেছে ভয়েজার ১। গত বছরের নভেম্বরে থমকে গিয়েছিল ভয়েজার ১-এর তথ্যপ্রেরণ। ঠিক থেমে যায়নি, অর্থহীন সংকেত পাঠাচ্ছিল ভয়েজার ১। জানা গিয়েছিল, একটা কম্পিউটার গ্লিচের জন্য এমনটা হয়েছে। সেই গ্লিচটি অবশেষে ঠিক করতে পেরেছেন প্রকৌশলীরা। ফলে আবারও অর্থবোধক বেতার সিগন্যাল পাঠাতে শুরু করেছে ভয়েজার ১। নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরি এ তথ্য জানিয়েছে।
অবশ্য বর্তমানে অর্থবোধক তথ্য থেকে শুধু এর অবস্থা ও ভেতরের ইঞ্জিনিয়ারিংসিস্টেমের কথা জানা যাচ্ছে। বৈজ্ঞানিক তথ্য পাঠানোর জন্য এর যে সফটওয়্যার ঠিক করতে হবে, এখনো তা ঠিক করা সম্ভব হয়নি।
ভয়েজার ১ উৎক্ষেপণ করা হয় ১৯৭৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর। ১৯৭৭ সালের ২০ আগস্ট যাত্রা শুরু করে এর সহোদর ভয়েজার ২। নভোযান দুটি ইতিমধ্যে মহাকাশে কাটিয়েছে ৪৭ বছর, পেরিয়ে গেছে সৌরজগতের সীমা। এই দুই সহোদর মিলে ৪টি গ্রহ, ৪৮টি উপগ্রহ, তাদের চৌম্বকক্ষেত্র এবং বলয় পর্যবেক্ষণ করে সৌরজগৎ সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানের পরিধি বাড়িয়েছে বিস্ময়করভাবে।
বর্তমানে ভয়েজার ১ রয়েছে পৃথিবী থেকে ২৪ বিলিয়ন কিলোমিটার দূরে। সে জন্য মিশন কন্ট্রোল টিমকে কমান্ড দিয়ে সাড়ে ২২ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় সিগন্যালটি ভয়েজারে পৌঁছানোর জন্য। ফিরতি সাড়া পেতে অপেক্ষা করতে হয় পরবর্তী আরও সাড়ে ২২ ঘণ্টা। গত ১৪ নভেম্বর প্রকৌশলীরা প্রথম এর সমস্যা টের পান। সমস্যাটা আসলে কী, তা জানা যায় গত ১২ ডিসেম্বর। নভোযানটির ফ্লাইট ডেটা সিস্টেম বা এফডিএস এর বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। তারপর সেটা ঠিকঠাক করে পাঠায় টেলিযোগাযোগ ইউনিট বা টিএমইউতে।
টিএমইউ সেটা সম্প্রচারণ করে পৃথিবীতে। এই এফডিএস অংশেই সমস্যা হয়েছে। গত ১২ ডিসেম্বর নাসার এক ব্লগ পোস্টে এ তথ্য জানা যায়। জানা যায়, সংকেতটা আটকে গেছে এক জায়গায়। একই প্যাটার্নের শূন্য ও একে লেখা বার্তা পাঠাচ্ছে বারে বারে। কারণ, এফডিএসের মেমোরির একটি অংশের তথ্য যে চিপে জমা ছিল, তা কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এই অংশেই ছিল কম্পিউটার সফটওয়্যার কোড। চিপ নষ্ট হয়ে এই কোড হারিয়ে যাওয়ায় বৈজ্ঞানিক তথ্য বা ভয়েজারের ইঞ্জিনিয়ারিং সিস্টেমের তথ্য—কিছুই জানা যাচ্ছিল না।
প্রকৌশলীরা ওই অংশের কোডটুকু ভাগ ভাগ করে নিয়েছেন। তারপর এফডিএসের সক্রিয় অংশের মেমোরির বিভিন্ন চিপে একেকটা ভাগ ঢুকিয়ে দিয়েছেন। ফলে অবশেষে এতদিন পর এ সমস্যার খানিকটা সমাধান হলো। তাই আশার আলো দেখছেন নাসার প্রকৌশলীরা। তাঁরা বলছেন, বৈজ্ঞানিক সিগন্যালের জন্য আরও কিছুদিন সময় লাগবে, তবে হয়তো সে বিষয়টিরও সমাধান মিলবে শিগগিরই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।