জুমবাংলা ডেস্ক : সাধন কুমার মন্ডল (২৮) একজন এমবিবিএস (মেডিসিন) সিএমইউ (আল্ট্রা) বিএমডিসি ও মেডিসিন, মা ও শিশু, চর্ম, যৌন রোগে অভিজ্ঞ ডাক্তার। বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন নম্বরও রয়েছে তাঁর। দুই মাস ধরে সাধন কুমার মন্ডল নেত্রকোনার মদন উপজেলার স্বদেশ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়মিত রোগী দেখছেন।
কাগজপত্রে সব ঠিকঠাক থাকলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন।
বিএমডিসির ওই রেজিস্ট্রেশন নম্বরের ডাক্তার সাধন কুমার বর্তমানে খুলনার একটি হাসপাতালে চাকরি করছেন। আর সাধন কুমার মন্ডলের পরিচয় ব্যবহার করে নেত্রকোনার মদনে নিয়মিত রোগী দেখছেন শংকর দাস নামের এক ভুয়া ডাক্তার।
শনিবার অভিযান চালিয়ে ভুয়া ডাক্তার শংকর দাসকে আটক করেছেন মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহ আলম মিয়া। ভুয়া ডাক্তার শংকর দাসকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।
অভিযুক্ত ভুয়া ডাক্তার শংকর দাসের বাড়ি টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায়। তার পিতার নাম সুমেশ দাস। তিনি একটি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র বলে জানা গেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুই মাস আগে স্বদেশ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে মদনে আসেন শংকর দাস।
তখন তিনি নিজেকে ডাক্তার সাধন কুমার মন্ডল বলে পরিচয় দেন এবং বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন নম্বর তাঁর বলে জানান। পরে তিনি স্বদেশ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়মিত রোগী দেখা শুরু করেন। এ পর্যন্ত তিনি ৩৩৫ জন রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছেন। তবে গত শুক্রবার রাতে বিএমডিসির ওই রেজিস্ট্রেশন নম্বরের প্রকৃত ডাক্তার সাধন কুমার মন্ডল বিষয়টি মদন উপজেলা প্রশাসনকে জানান। শনিবার অভিযান চালিয়ে ভুয়া ডাক্তার শংকর দাসকে আটক করা হয়।
ভুয়া ডাক্তার শংকর দাস বলেন, ‘আমি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র। আমার টাকার সমস্যা ছিল। তাই ভুয়া পদবি ও ঠিকানা ব্যবহার করে এমন কাজ করেছি।’
স্বদেশ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘ডাক্তার সাধন কুমার মন্ডলের পরিচয় দিয়ে আমার ওখানে তিনি রোগী দেখেছেন। আজ জানতে পারলাম তিনি একজন ভুয়া ডাক্তার এবং প্রতারক। আমরা তার প্রতারণার শিকার হয়েছি।’
মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার তায়েব হোসেন বলেন, ‘আটক হওয়া ব্যক্তি কোনো চিকিৎসক নন। তিনি মূলত একজন প্রতারক। তার কথায় বিষয়টি প্রমাণিত। মেডিসিন, মা ও শিশু, চর্ম, যৌন রোগে অভিজ্ঞ ডা. সাধন কুমার মন্ডলের নাম ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে শংকর দাস এমন কাজ করেছেন।’
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজ্জ্বল কান্তি সরকার বলেন, ‘ডাক্তার সাধন কুমার মন্ডল চট্টগ্রাম থেকে মদনের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। প্রতারক শংকর দাসকে আটক করা হয়েছে। প্রকৃত ডাক্তার সাধন কুমার মন্ডলের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহ আলম মিয়া বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শংকর দাস তার অপরাধ শিকার করেছে। তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে প্রকৃত সনদধারী মামলা দায়ের করবেন।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।