ধর্ম ডেস্ক : বিয়ে রাসুল (সা.)-এর সুন্নত। ইসলামে কোনো নারীকে বিয়ে করলে তাকে অবশ্যই মোহর দিতে হবে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে মানুষকে দেখানোর জন্য কোটি টাকা মোহর ধার্য করতে হবে। মোহর ধার্য করা শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, মোহর স্ত্রীর অধিকার।
স্ত্রী যেন ন্যায্য অধিকার সঠিকভাবে পায় এবং নারীর যেন অবমূল্যায়ন না হয়— তার প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। পাশাপাশি মোহর নির্ধারণের সময় স্বামীর আর্থিক অবস্থার প্রতিও লক্ষ্য রাখতে হবে। স্বামীর সামর্থ্যের বাইরে মোহর ধার্য করে— তাকে আল্লাহর কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
কেউ যদি বিয়ের সময় মোহরের টাকা নগদ পরিশোধ না করে পরে যদি স্ত্রীর কাছে মাফ চায় তাহলে কি এতে মোহর মাফ হবে?
এ বিষয়ে ইসলামী আইন ও ফিকাহ শাস্ত্র বিশেষজ্ঞরা বলেন, যদি কোনো ব্যক্তি দেনমোহর ধার্য করে বিয়ে করে তাহলে তার জন্য উত্তম হচ্ছে-বাসর রাতে (সহবাসের পূর্বে) ওই দেনমোহর পরিশোধ করে দেওয়া। কেননা এটি স্ত্রীর হক বা প্রাপ্য। একই সঙ্গে এটি স্বামীর দায়িত্বে একটা ঋণ, যা অন্যান্য ঋণের মতো পরিশোধ করা জরুরি।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমরা নারীদেরকে দাও তাদের মোহর খুশিমনে। এরপর তারা যদি স্বেচ্ছায় স্বাগ্রহে ছেড়ে দেয় কিছু অংশ তোমাদের জন্য তাহলে তা স্বচ্ছন্দে ভোগ কর। -(সূরা নিসা : ৪)
স্ত্রী স্বতঃস্ফূর্তভাবে মোহরের কিছু অংশ ছেড়ে দিলেই কিংবা গ্রহণ করার পর স্বামীকে উপহার দিলে স্বামী তা স্বচ্ছন্দে ভোগ করতে পারবে।
শুধু স্বামী নয় নারীর পিতা-মাতা, ভাইবোন বা অন্য কেউ নিজ কন্যার, বোনের বা আত্মীয়র মোহর তার স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতি ছাড়া নিতে পারে না। নিলে তা হবে কুরআনের ভাষায় অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করার মতো।
স্বামীর জন্য মোহর মাফ করাতে স্ত্রীকে চাপ প্রয়োগ করা বা দুর্ব্যবহার করা বা অন্য কোনো কৌশল অবলম্বন করা বৈধ হবে না। এভাবে স্ত্রী মাফ করলেও মাফ হবে না।
কারণ, মোহরের টাকা হাতে না দিয়ে স্ত্রীর অন্তরের সন্তুষ্টি বোঝা মুশকিল। এ জন্য হাতে দেওয়ার কথা বলেছেন হজরত থানবী (রহ.)। –
(মাআরিফুল কোরআন : ২/২১৯; হেদায়া : ২/৩২৫; ফাতাওয়ায়ে রাহমানিয়া : ২/৮৮, আহকামুল কুরআন, জাসসাস ২/৫৭-৫৮; তাফসীরে ইবনে কাছীর ১/৪৪২; বয়ানুল কুরআন ২/৯৩; তাফসীরে উছমানী, পৃ. ১০০)।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।