জুমবাংলা ডেস্ক : পাবনার ঈশ্বরদীতে ব্যবসায়ী শাকিল আহমেদ হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন ও ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার (০২ জুন) বেলা ১২টায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান জানান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. মাসুদ আলম, ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ঈশ্বরদী সার্কেল মো. ফিরোজ করিব পাবনার নেতৃত্বে অফিসার ইনচার্জ মো. আসাদুজ্জামান, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ হাদিউল ইসলামসহ পুলিশের একটি চৌকস টিম কাজ শুরু করলে বিভিন্ন তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ঘটনাটি উদঘাটনসহ দুই জন আসামিকে গ্রেফতার করে।
পরে থানায় জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন। ইতোমধ্যে নিহত শাকিলের স্ত্রী মিম ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। সাব্বিরকে চার দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান জানান, বিয়ের পর থেকেই শাকিলের স্ত্রী মিমের সঙ্গে ছোটভাই সাব্বিরের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শাকিলের সঙ্গে বাবা-মা ও একমাত্র ছোটভাইয়ের জমিজমা ও পুকুরে মাছচাষের ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ ছিল। স্ত্রী মিম ও সাব্বিরের মধ্যকার পরকীয়ার বিষয়টিও শাকিল আঁচ করতে পারেন। যে কারণে একই বাড়িতে অবস্থান করেও আলাদাভাবে সংসার শুরু করেন শাকিল। বিষয়টি বাড়াবাড়ি পর্যায়ে গেলে শাকিল গত ১৯ মে স্ত্রীকে নিয়ে ঈশ্বরদী শহরের রূপনগর কলেজপাড়া মহল্লায় জনৈক আহসান হাবিবের বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ভাড়াটিয়া হিসেবে ওঠেন। কিন্তু সাব্বির গোপনে একটি মোবাইল ফোন মীমকে দেন, যা মিম লুকিয়ে রেখে শুধু সাব্বিরের সঙ্গে গোপনে কথা বলতেন এবং বাড়ি ফাঁকা পেলে ঘনিষ্ঠভাবে মিশতেন।
এক পর্যায়ে স্ত্রী মিম ও ছোটভাই সাব্বির শাকিলের প্রতি চরম ক্ষিপ্ত হয়ে যান এবং তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৭ মে রাতে মিম পানির সঙ্গে তিনটি ঘুমের ট্যাবলেট গুঁড়া করে মিশিয়ে রাখেন। সে পানি খেয়ে পরদিন ২৮ মে শাকিল সারাদিন ঘুমিয়ে থাকেন। সন্ধ্যার পরে সাব্বির গোপনে শাকিলের বাসায় যান। শাকিল তখনো ঘুমের ওষুধের প্রভাবে ঘুমাচ্ছিলেন। পরে তারা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী শোবার ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় শাকিলের নাকে-মুখে সোফা সেটের কুশন (বালিশ) নিয়ে চাপা দেন। এতে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান শাকিল।
পুলিশ আরও জানায়, আসামি মিম ও সাব্বির ভিকটিম শাকিলকে হত্যার বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সাব্বির ওড়না দিয়ে মিমের দুই পা, শাকিলের পাঞ্জাবি দিয়ে দুই হাত এবং পরিহিত ওড়না দিয়ে মুখ বেঁধে বাইরে থেকে দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে চলে যান। এসময় সাব্বির মিমের সঙ্গে গোপনে কথা বলার জন্য তাকে দেয়া মোবাইল ফোনটি নিয়ে যান।
উল্লেখ্য, গত ২৮ মে রাতে পাবনার ঈশ্বরদী বাজারের এক কাপড় ব্যবসায়ী ও মুলাডুলি ইউনিয়নের প্রতিরাজপুরের দুবলিয়া গ্রামের ইব্রাহিম হোসেনের ছেলে শাকিলের মরদেহ ভাড়া বাসা হতে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত শাকিলের মামা কোরবান আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ঈশ্বরদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
Own the headlines. Follow now- Zoom Bangla Google News, Twitter(X), Facebook, Telegram and Subscribe to Our Youtube Channel