জুমবাংলা ডেস্ক : আমরা প্রতিদিনের জীবনযাপনে অনেক কিছুই ব্যবহার করি। যেমন-হাতঘড়ি বা আংটি ব্যবহার করি। এই ঘড়ি বা আংটি ব্যবহারে শরীরের সে অংশে যদি বিকৃতি দেখা দেয় বা এমন কিছু উপসর্গ দেখা দেয়, যা আপনার শরীরের ওই অংশে কখনো ছিল না, তবে সেটিই হলো Contact dermatitis বা স্পর্শজনিত চর্মরোগ। আরও একটি সহজ উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে।
মনে করুন, কোমরে ব্যথা হয়েছে। ব্যথা কমাতে একটি মালিশ বা জেল ব্যবহার করলেন। এটি ব্যবহার করার পর যদি স্থানটি লাল হয়, জ্বলে বা চুলকায় এবং ব্যথা করে কিংবা ফোস্কা ওঠে-তাহলে ধরে নিতে হবে এটি একটি সংস্পর্শজনিত চর্মরোগ অর্থাৎ ওই মলম আপনার ত্বকের সংস্পর্শে আসায় এমনটি হয়েছে।
এ ধরনের সমস্যা সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় চুলের কলপ ব্যবহারকারীর মধ্যে। চুল কালো করার জন্য কলপ ব্যবহার করা হয় এবং তা যখন চুল পেরিয়ে মাথার ত্বকে লাগে, তখন চুলকায় অথবা নাক, মুখ পর্যন্ত ফুলে গিয়ে এক বীভৎস অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে। যে কোনো উত্তেজক পদার্থের সামান্য স্পর্শেই এ রোগ দেখা দিতে পারে।
এ রোগের অন্যতম কারণ ক্ষার। ব্লিচিং পাউডার, ডিটারজেন্ট, সাবান, বাসনপত্র পরিষ্কার করার জিনিসপত্রে ক্ষার থাকে এবং এ ক্ষার ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে ত্বকের কোষ নষ্ট করে রোগের সৃষ্টি করে। এর বাইরে আগাছা, কীটনাশক, লোহা, ইস্পাত, লুব্রিকেটিং তেল থেকে এ রোগের সৃষ্টি হতে পারে। শিশুর ক্ষেত্রে কড়া সাবান, ডিটারজেন্ট, ব্লিচিং পাউডার, অ্যাসিড, ক্ষার, থুতু, প্রস্রাব, এমনকি পায়খানা লেগেও রোগ হতে পারে। অ্যালার্জির কন্ট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস সাধারণত বড়দের বেশি হয়।
কারণ এ ধরনের অ্যালার্জির জন্য শরীরে যেসব কোষ প্রয়োজন, জন্মের সঙ্গে সঙ্গে শিশুর শরীরে তা থাকে না। আসুন, জেনে নেওয়া যাক শরীরের কোন স্থানে কী দিয়ে এ চর্মরোগ হতে পারে-
মুখ : প্রসাধনী, চুলের কলপ, হেয়ার স্প্রে ইত্যাদি।
কান : কানের দুল বা গহনা, বিশেষ করে তা যদি নিকেলের হয়।
চোখের পাতা : প্রসাধনী বস্তু, যা চোখের পাতায় ব্যবহার করা হয়।
ঠোঁট : লিপস্টিক ও ধাতুর তৈরি চশমার ফ্রেম।
গলা : পশমজাতীয় জামাকাপড়, সুগন্ধি পদার্থ ও নকল গলার হার।
বগল : ঘামের গন্ধ নিবারক পদার্থ, স্প্রেযুক্ত প্রসাধনী, জামা ইত্যাদি।
স্তন : ইলাস্টিক অথবা ব্রেসিয়ার।
কোমর : ইলাস্টিক।
কব্জি : ঘড়ি ও চুড়ির নিকেল অংশ।
হাত : হাতের গ্লাবস, সাবান, ডিটারজেন্ট।
পা : জুতা, মোজা।
চিকিৎসা : যে পদার্থের সংস্পর্শে এসে ত্বকের এ প্রদাহ বিকৃতি সৃষ্টি হয়, তা থেকে ত্বকের সংস্পর্শ দূর করতে হবে। এর বাইরে প্রয়োজনমতো ঝঃবৎড়রফ ও অহঃরযরংঃধসরহ ব্যবহার করতে হবে।
লেখক : ডা. দিদারুল আহসান,চর্ম,যৌন ও অ্যালার্জি রোগ বিশেষজ্ঞ
কনসালট্যান্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আল-রাজী হাসপাতাল, ফার্মগেট
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।