সোহেল চৌধুরী রানা, সাপাহার (নওগাঁ): গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় দ্বিগুণ দামে আম বিক্রি হওয়ায় খুশি নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলার আম চাষীরা।
শনিবার (১১জুন) সরজমিনে আমবাজারে গিয়ে জানা যায়, জেলা প্রশাসন কর্তৃক দেওয়া তারিখ মোতাবেক বিভিন্ন প্রজাতির আম এসেছে বাজারে। আমের পসরা নিয়ে বসে আছেন আম চাষীরা।
চলতি বছরে গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ দামে আম কেনা-বেচা হচ্ছে বলে জানান আম চাষীরা। যার ফলে অনেকটা স্বস্তি প্রকাশ করছেন তারা। তবে কাঁচা বাজারের মূল্য নির্ভর করে আমদানির উপর। প্রাথমিক অবস্থায় আমদানি কম থাকায় আমের বাজার মূল্য ভালো। আমদানি বাড়লে আমের দাম কমার আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান ব্যবসায়ীরা।
সাপাহার বাজারে আম ক্রেতা রায়হান আলী বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এ বছরে আমের দাম অনেক বেশি। চলতি বছরে প্রতি মণ আমে দাম বেড়েছে ৫শ’ থেকে ৮শ’ টাকা। গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ দামে আম কিনছি।
উপজেলার বৈদ্যপুর গ্রামের আম বিক্রেতা আলতাব হোসেন জানান, বর্তমানে আমের বাজার মূল্য বেশ সুবিধাজনক। এই ধারা অব্যহত থাকলে আম চাষীসহ ব্যবসায়ীরাও লাভবান হবেন।
শরীয়তপুর থেকে আসা আম ব্যাপারী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘গত বছরও সাপাহার বাজারে আম কিনেছি। এ বছরও কিনতে এসেছি। এখানকার আম স্বাদে ও মানে-গুণে ভালো হবার ফলে বাইরে এর চাহিদা বেশি। এখান থেকে আমরা মণ দরে আম কিনে বাইরে কেজি দরে বিক্রি করি। যাতে অনেকটাই লাভবান হতে পারি। তবে এ বছরে আমের দাম বেশি।
চলতি বছরে প্রতি মণ গুটি আম বিক্রি হচ্ছে ৮০০-১২০০ টাকা যা গত বছরে ছিলো ২০০-৫০০ টাকা। ক্ষীরসাপাত আম গত বছর প্রতি মণে ছিলো ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা। কিন্তু বর্তমান বাজার মূল্য ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা।
গত বছর প্রতি মণ নাগফজলীর দাম ছিল ৮০০ থেকে থেকে ১ হাজার টাকা। বর্তমান বাজার মূল্য ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার টাকা। গত বছর প্রতি মণ ল্যাংড়ার দাম ছিল ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা । বর্তমান বাজার মূল্য ১২০০ খেকে ১৮০০ টাকা।
গত বছর গোপালভোগ জাতের আম প্রতিমণ বিক্রি হয়েছে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা। বর্তমান বাজার মূল্য ১২০০ থেকে ১৮০০ টাকা।
আম্রপালি জাতের আম ভাঙার তারিখ ২৫ জুন নির্ধারিত থাকলেও কিছু কিছু বাগানের আম পাকতে শুরু করেছে। যার ফলে কৃষি অফিস থেকে ছাড়পত্র নিয়ে আম্রপালি জাতের আম বিক্রি হচ্ছে বাজারে। যা প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা। গত বছর এই আম প্রতি মণ বিক্রি হয়েছিল ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা।
চলতি বছরের শুরুতেই আমের ভালো দাম পাচ্ছেন আম চাষিরা। এই ধারা অব্যহত থাকলে আমের নির্ধারিত গড় মূল্য ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা অভিজ্ঞ মহলের।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে পাওয়া সূত্রে জানা যায়, এ বছর সাপাহার উপজেলায় প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লক্ষ ২৯ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।