জুমবাংলা ডেস্ক: নন্দিত কথাশিল্পী প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের প্রথম স্ত্রী কবি গুলতেকিন খান দ্বিতীয়বার বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন। বর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আফতাব আহমেদ।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গুলতেকিনের বনানীর বাসায় অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহে ঘরোয়া আয়োজনে তাদের বিয়ে হয়। বিয়েতে দুই পরিবারের ঘনিষ্ঠ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। গুলতেকিনের মতো আফতাব আহমেদেরও এটি দ্বিতীয় বিয়ে।
গত ৭/৮ বছর ধরে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিব কবি আফতাব আহমেদের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। বন্ধুত্ব ধীরে ধীরে গভীর সখ্যতা থেকে প্রেমে গড়ায়। নিয়মিত সন্তানদের নিয়েও আফতাব আহমেদের সঙ্গে তার সুন্দর সময় কাটতে থাকে। আফতাব আহমেদ তার ব্যারিস্টার স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটান ১০ বছর আগে। তার একমাত্র সন্তান লন্ডনে লেখাপড়া করছেন।
হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে গুলতেকিনের দীর্ঘ ২৭ বছরের দাম্পত্য বিচ্ছেদে গড়ায় ২০০৩ সালে। হুমায়ূন-গুলতেকিনের তিন কন্যা নোভা, শীলা, বিপাশা ও এক পুত্র নুহাশ। গুলতেকিনের চার সন্তানের সম্মতিতে এই বিয়ে হয়েছে বলেও সূত্র নিশ্চিত করেছে। বিয়ে অনুষ্ঠানে ঢাকায় বসবাসরত গুলতেকিনের ছেলে-মেয়েরা উপস্থিত ছিলেন। বিয়ের কয়েকদিন পর গুলতেকিন যুক্তরাষ্ট্রে তার মেজো মেয়ের বাসায় বেড়াতে গেছেন।
২৫ অক্টোবর গুলতেকিন তার ফেসবুক পেজে যৌথ ঘোষণা শিরোনামে ‘এবার বাতাস উঠুক তুফান ছুটুক’ স্ট্যাটাস দেন। এতে তার প্রিয়জনরা তাকে অভিনন্দিত করেন এবং তার ভালোবাসাময় জীবনের শুভ কামনা করে অসংখ্য মন্তব্য করেন।
এদিকে ৫ নভেম্বর আফতাব আহমেদ তার ফেসবুকে ইংরেজিতে যে স্ট্যাটাস দেন তার অর্থ হলো- ‘তিনি আমাকে তার সামনে বসালেন এবং আমার হাতে হাত রেখে বললেন’, ‘প্রত্যেকেরই মৃত্যুর স্বাদ পেতে হবে। কিন্তু আমি তোমাকে ছেড়ে যেতে চাই না। আমি নিঃশ্বাস নিতে চাই। তবে নিশ্চিত নই ভবিষ্যৎ কোন নিয়তিতে গাঁথা।’ আফতাব আহমেদ জবাবে বললেন, আমি চেষ্টা করব তোমাকে বাঁচাতে কিন্তু তোমাকে বিয়ে করা ছাড়া এটা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।’ এ সময় একটু বিরতি নিয়ে গুলতেকিন বললেন, তুমি কি আমাকে বিয়ে করবে?’
বিপুল জনপ্রিয় কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদ নিজের লেখালেখিতে অনেক সময়ই ব্যক্তিগত প্রসঙ্গের অবতারণা করতেন। সেই সূত্রেই বাঙালি পাঠকদের কাছে আশি ও নব্বই দশকে গুলতেকিন অতি পরিচিত এক জীবন্ত চরিত্র হয়ে ওঠেন। ১৯৭৬ সালে ১৫ বছরের কিশোরী গুলতেকিনকে ভালোবেসে বিয়ে করেন সে সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদ। তারপর দীর্ঘ প্রায় তিন দশকে গুলতেকিনের সঙ্গে তার সংসারের খুটিনাটি বহু বিবরণের সঙ্গে হুমায়ূনের পাঠকরা পরিচিত। তেমনই বিপুল আলোচনার বিষয় হয় হুমায়ূনের সংসার ভেঙে দ্বিতীয় বিয়ের সিদ্ধান্ত।
২০০৪ সালে গুলতেকিনকে ডিভোর্স দেন হুমায়ূন। পরের বছর তিনি বিয়ে করেন অভিনেত্রী ও গায়িকা মেহের আফরোজ শাওনকে। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০১২ সালের জুলাইয়ে হুমায়ূন আহমেদ ৬৪ বছর বয়সে মারা যান।
রাজধানীর একটি খ্যাতনামা ইংরেজি স্কুলের শিক্ষক গুলতেকিন খান কয়েক বছর সাহিত্যচর্চা বিশেষত কাব্যচর্চায় মনোযোগ দিয়েছেন। ইতোমধ্যে তার দুটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।