স্পোর্টস ডেস্ক: দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় করল বাংলাদেশ। এর আগে দেশটির মাঠে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ২০ বছরের চেষ্টার পর প্রথম জয়ের স্বাদ পায় সফরকারীরা।
১৫৫ রানের সহজ টার্গেট তাড়া করতে নেমে মাত্র এক উইকেট হারিয়ে ১৪১ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ৮২ বলে ৮৭ রান করে অপারাজিত থাকেন তামিম ইকবাল আর ৫৭ বলে ৪৮ করে আউট হন লিটন দাস। ওয়ান ডাউনে ব্যাট করতে নেমে ২০ বলে ১৮ রান করে সাকিবও অপরাজিত থাকেন।
তিন ম্যাচ সিরিজের ‘অঘোষিত ফাইনালে’ আগে ব্যাট করতে নেমে ৩৭ ওভারে ১৫৪ রানে অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
দক্ষিণ আফ্রিকায় এবারের সফরে প্রত্যাশার চেয়েও ভালো বোলিং করেছেন তাসকিন আহমেদ। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের ‘অঘোষিত ফাইনালে’ তাসকিন একাই ধ্বসিয়ে দিয়েছেন স্বাগতিক দলকে।
তাসকিনের গতি সামাল দিতে না পেরে ৩৭ ওভারে ১৫৪ রানেই অলআউট দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দল। ৯ ওভারে মাত্র ৩৫ রান খরচ করে ৫ উইকেট শিকার করেন তাসকিন। সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়ে ৩৬ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছিলেন তিনি।
আফ্রিকার মাঠে এই সফরে ২০ বছর পর প্রথম জয়ের দেখা পাওয়া বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখছে সিরিজ জয়ের। ১৫৫ রান করলেই দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে সিরিজ জয় নিশ্চিত হবে তামিম ইকবালের নেতৃত্বাধীন দলটির।
বুধবার সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্টস পার্কে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো সূচনা করেন দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ওপেনার কাইল ভেরাইনা ও কুইন্টন ডি কক। উদ্বোধনী জুটিতে তারা ৬.৫ ওভারে ৪৬ রান স্কোর বোর্ডে জমা করেন।
ভেরাইনা এবং ডি ককের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন মেহেদি হাসান মিরাজ। তার বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন প্রোটিয়া ওপেনার কুইন্টন ডি কক। আগের ম্যাচে ৬২ রান করা সাবেক এই অধিনায়ককে এদিন ১২ রানে সাজঘরে ফেরান মিরাজ। তার বিদায়ে ৬.৫ ওভারে ৪৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় আফ্রিকা।
এরপর জোড়া আঘাত হানেন পেসার তাসকিন আহমেদ। তার শিকার হয়ে মাত্র ৩ রানের ব্যবধানে সাজঘরে ফেরেন কাইল ভেরাইনা ও ওপেনার জানেমান মালান।
তিন ম্যাচ সিরিজেরে প্রথম খেলায় ওপেনিংয়ে ব্যাট করা ভেরেইনাকে ২১ রানে এলবিডব্লিউ করেছিলেন তাসকিন। বুধবার তৃতীয় ওয়ানডেতে তিন নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৬ বলে ৯ রান করার সুযোগ পান দক্ষিণ আফ্রিকার এই টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান।
তাসকিনের পর দক্ষিণ আফ্রিকা শিবিরে আঘাত হানেন সাকিব আল হাসান। তার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টিম্বা বাভুমা। ১১ বল খেলে মাত্র ২ রানে ফেরেন প্রোটিয়া এই অধিনায়ক। তার বিদায়ে ১৫.৫ ওভারে ৭১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপের মধ্যে পড়ে যায় আফ্রিকা।
সাকিবের পর আফ্রিকা শিবিরে আঘাত হানেন তরুণ পেসার শরিফুল ইসলাম। তার বলে মেহেদি হাসান মিরাজের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন ভেন দার ডুসেন। ১৮.১ ওভারে দলীয় ৮৩ রানে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন ডুসেন।
এরপর আবার দক্ষিণ আফ্রিকা শিবিরে আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদ। তার শিকার হয়ে ফেরেন সাত নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নামা ডুয়াইন পিটোরিয়াস। তাকে মুশফিকের হাতে ক্যাচ তুলতে বাধ্য করেন তাসকিন।
এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা পেসার কাগিসো রাবাদাকে আউট করে ৫ উইকেট শিকারের সন্তুষ্টিতে মাঠেই সিজদা দেন তাসকিন।
২৮.৬ ওভারে ১২৬ রানে ৮ উইকেট পতনের পর মনে হয়েছিল দেড়শর আগেই অলআউট হয়ে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু ৮ নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নামা বাঁহাতি স্পিনার কেশভ মহারাজ স্কোর মোটাতাজা করতে ব্যাটিংয়ে বাড়তি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেন।
নবম উইকেটে লুঙ্গি এনগিডিকে সঙ্গে নিয়ে ৩৩ বলে ১৮ রানের পার্টনারশিপ গড়েন মহারাজ। সাকিব আল হাসানের বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন লুঙ্গি।
শেষ দিকে স্কোর মোটাতাজা করতে যাওয়া কেশভ মহারাজকে রান করে সাজঘরে ফেরান তামিম-মুশফিক। ৩৯ বলে চার বাউন্ডারিতে ২৮ রান করে কেশভ মহারাজের বিদায়ে ৩৭ ওভারে ১৫৪ রানে অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।